Ajker Patrika

বিএনপিকে যারা অত্যাচার করেছে, তারাই শেষ হয়ে গেছে: মির্জা ফখরুল

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে সম্মেলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
কিশোরগঞ্জে সম্মেলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা সেই দল, যারা উড়ে এসে জুড়ে বসিনি। আমরা লড়াই করে, সংগ্রাম করে এই বাংলাদেশে এসেছি।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যেই দল ফিনিক্স পাখির মতো। অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে, বিএনপিকে ধ্বংস করে দেওয়ার, বিএনপিকে ভেঙে দেওয়ার, কিন্তু বিএনপিকে কেউ ভাঙতে পারেনি। যারা অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে, গুম করেছে, হত্যা করেছে—তারাই শেষ হয়ে গেছে। তারাই পালিয়ে গেছে।’

আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে একটা নতুন অস্তিত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেছেন। যিনি বাংলাদেশকে আধুনিক বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। আজকের সম্মেলন কোনো সাধারণ সম্মেলন নয়। ১৫ বছর পরে, ফ্যাসিস্টের হাতে নির্যাতনের পরে, গণতন্ত্রের ধ্বংসের পরে, আমরা যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, বিএনপির অজস্র ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা যখন নতুন একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পেরেছি, সেই সুযোগকে কাজে লাগানোর সম্মেলন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, অনেক রক্তের বিনিময়ে, অনেক প্রাণের বিনিময়ে, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজকে এই সুযোগ পেয়েছি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। অপপ্রচার করা হচ্ছে বিএনপির বিরুদ্ধে। গত ৪৭ বছর যা কিছু ভালো তার সবকিছু দিয়েছে এই বিএনপি। যখন শাহাদাত বরণ করলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এই বাংলাদেশের শত্রুরা হত্যা করল, তখন সবাই ভেবেছিল বাংলাদেশ গেল, বিএনপি গেল। চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে শহীদ জিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই পতাকা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পতাকা, গণতন্ত্রের পতাকা হাতে তুলে নিলেন তাঁরই সহধর্মিণী। যিনি কোনো দিন রাজনীতি করেনি। তিনি পতাকা তুলে নিয়েই সারা বাংলাদেশে চারণ কবির মতো গণতন্ত্রের গান গাইতে শুরু করলেন। আর সেই গণতন্ত্রের গানেই ৯ বছর স্বৈরাচার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাথে লড়াই করেছেন, রাজপথে সংগ্রাম করেছেন। সেই মহীয়সী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তিনি বাংলাদেশকে বদলে দিতে শুরু করলেন। উনি যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসলেন উৎপাদন, উন্নয়নের হার এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, তখন বাংলাদেশকে বলা হতো ইমার্জিং টাইগার। তখন বাংলাদেশে নতুন নতুন বিনিয়োগ হচ্ছিল। মানুষ শান্তিতে বসবাস করছিল। ক্লাস ১২ পর্যন্ত মেয়েদের জন্য বিনা বেতনে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছিলেন। বিভিন্ন চাকরিতে পুলিশে, আনসারে, সব জায়গায় মেয়েদের চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সেই দল, যার উড়ে এসে জুড়ে বসিনি। লড়াই করে, সংগ্রাম করে এই বাংলাদেশে এসেছি। আমাদের নেতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। ওইটা আমাদের গর্ব ১৯৭১ সাল। আমাদের নেতা গণতন্ত্র দিয়েছেন আমাদের। আমাদের নেত্রী আমাদের সামনের দিকে থেকে পার্লামেন্টে নিয়ে গেছেন। আর আমাদের নেতাকে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে, শারীরিক-মানসিকভাবে নির্যাতন করে ওয়ান-ইলেভেনে নিয়ে এসে তাঁকে নির্বাসিত করেছিল। সেই নেতা আবার গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখিয়ে লড়াই করেছেন। আজকে যে সুযোগ এসেছে, একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের নেতা তারেক রহমানকে ফিরিয়ে এনে বুঝিয়ে দেওয়ার।’

জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রায় ৯ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলা বিএনপির সম্মেলন। পরিচালনা করেছেন সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ, সদস্য লায়লা বেগম, শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত