Ajker Patrika

বাগেরহাটে বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে ৪ হাজারের বেশি ঘের

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ২২: ২৮
বাগেরহাটে বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে ৪ হাজারের বেশি ঘের

টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের চিংড়িচাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিতে জেলার চার হাজারের বেশি চিংড়িঘেরসহ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এবারের বৃষ্টিতে কৃষিতে তেমন ক্ষতি হয়নি। এদিকে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় অনেক এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। জলাবদ্ধতার শিকার পরিবারের সংখ্যাও কমে গেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলায় ৪ হাজার ২৩০টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ৩৭৫টি, কচুয়ায় ৬৪০টি, শরণখোলায় ১০০টি, রামপালে ১ হাজার ৫৪০টি, মোরেলগঞ্জে ৮৫৫টি এবং মোংলায় ৭২০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮২৫ একর জমিতে থাকা ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যের বাইরেও বেশ কিছু ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে দাবি মাছচাষিদের।

রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের তালপুকুর এলাকার ঘেরচাষি রমজান আলী বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে তেমন প্রভাব ফেলতে না পারলেও, বৃষ্টির পানিতে আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে। ঘের তলিয়ে গিয়ে সব মাছ বের হয়ে গেছে।’

বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহ বলেন, ‘পানিতে অনেকেরই ঘের তলিয়ে গেছে। কারও কারও ঘেরের পাড় ভেঙে গেছে। আমার নিজের ঘেরও তলিয়েছে। ইউনিয়নের মাছচাষিরা বেশ বিপদে পড়েছেন।’

বাসতলী এলাকার ঘেরচাষি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবু সাইদ বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে সব একাকার হয়ে গেছে। পানি মাঠ থেকে নামতে পারেনি, কারণ নদী-খালে পানিতে পরিপূর্ণ, যার ফলে ঘেরগুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমার সবগুলো ঘের ডুবে গেছে।’

এদিকে আজ সকাল থেকে বৃষ্টি না পড়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন সড়কের ওপর থাকা পানি নেমে গেছে। জলাবদ্ধতার শিকার পরিবারের সংখ্যাও কমেছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গতকাল রোববার পর্যন্ত ৭ হাজার ৫১০টি পরিবার পানিবন্দী ছিল। সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক এলাকায় পানি নেমে গেছে। বিকেল পর্যন্ত ৫ হাজার ৩৬৩টি পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। রাতে যদি বৃষ্টি না হয় আশা করি, তাঁরাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে।’

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী বৃষ্টির পানিতে জেলার ৪ হাজার ২৩০টি ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। চাষিরা যাতে পুনরায় মাছ চাষ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন সে জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত