Ajker Patrika

ইজিবাইকের চালক শিশু-কিশোর: বাড়ছে দুর্ঘটনা, জট

  • প্রয়োজনের তুলনায় তিন গুণ বেশি ইজিবাইক।
  • পৌরসভার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি, নতুন উদ্যোগের ঘোষণা।
  • এবার এক দিন পরপর চলবে ভিন্ন রঙের ইজিবাইক।
মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা
আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ০২: ৫৮
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গায় দিন দিন বেড়েই চলেছে ইজিবাইকের সংখ্যা। অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরদের হাতে ইজিবাইক থাকায় বাড়ছে যানজট ও দুর্ঘটনা। এসব ইজিবাইকচালকের নেই কোনো প্রশিক্ষণ। ফলে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা, দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো আর পাল্লা দিয়ে ইজিবাইক চালানোর কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার গ্রাম্য সড়ক, শহরের সড়ক ও মহাসড়কসহ সবই এখন ইজিবাইকের দখলে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে বেশ কয়েকবার জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা নানান কর্মসূচি হাতে নিলেও অজ্ঞাত কারণে তা আর বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও কমেনি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, এবার নেওয়া হয়েছে আরেকটি নতুন উদ্যোগ। এক দিন পরপর চলবে নির্ধারিত রং করা ইজিবাইক।

সাধারণ মানুষ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরে ইজিবাইকের জট লাগে সকালে অফিস শুরুর সময় এবং বিকেলের পর। শহরে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় কমপক্ষে তিন গুণ বেশি ইজিবাইক চলাচল করছে; যা সংখ্যায় প্রায় চার হাজার।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, এসব ইজিবাইকের চালকেরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি। বিশেষ করে শহরের প্রাণকেন্দ্র বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর, কোর্ট চত্বর এলাকা, একাডেমি মোড় বাসস্ট্যান্ড, ফেরিঘাট রোড, শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, শহীদ রবিউল ইসলাম সড়ক, হাসপাতাল সড়ক, পুরাতন হাসপাতাল সড়ক, রেলওয়ে স্টেশনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিনিয়ত দেখা যায় ইজিবাইকের যানজট।

পথচারী ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্র নাইমুর রহমান বলেন, ‘অনেক অটো লাইসেন্সসহ আছে এবং লাইসেন্বিহীনও আছে। অতিরিক্ত অটোর কারণে বেশি যানজট হয়। এই যানজটের কারণে দুর্ঘটনা হয়।’ অটোচালক রমজান আলী বলেন, ‘বহুত অটো চলছে অনুমোদন ছাড়া। তাতে যানজট হচ্ছে। এটার সংশোধন করা উচিত।’

সমস্যা সমাধানে পৌরসভা থেকে চার উপজেলার ইজিবাইকের রঙের ভিন্নতা আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে একাধিকবার। এতে করে অন্য উপজেলার ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে, সেই উদ্যোগ নামমাত্রই থেকে গেছে।

পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক আব্দুল মুহাইমিন বলেন, ‘ঈদের আগে অবৈধ গাড়ি আটকের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সিদ্ধান্তের পর যখন আমরা গাড়ি আটক করি, তখন ইজিবাইকের মালিকেরা রাস্তার ওপর বসে যান এবং আন্দোলন করেন। আমরা প্রায় ৪৯টি গাড়ি ধরেছিলাম। পরবর্তীকালে প্রশাসক মহোদয় অবৈধ গাড়ি আটক বন্ধ রাখতে বলেন এবং ঈদের পর চালু করবেন বলে জানান। তবে ঈদের পরও কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছেন তিনি। কারণ, চলতি অর্থবছরের মাত্র দুই মাস আছে। জুন মাসে বছর ক্লোজ। দুই মাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়াও অনৈতিক কাজ হয়ে যায়।’

যানজট নিরসনে সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত দায়িত্ব পালন করলেও ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে তারাও ক্লান্ত। জেলা ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পরিদর্শক (টিএসআই) ইউনুস আলী বলেন, শহরের বাইরে, পৌরসভার সীমানা শুরুর এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যাতে বাইরের ইজিবাইকগুলো শহরে প্রবেশ করতে না পারে।

ইউনুস আলী আরও বলেন, ‘ইজিবাইক চালকেরা বেশির ভাগ অনভিজ্ঞ। তাদের অভিজ্ঞতা নেই।’

এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রেজাউল করিম বলেন, ‘পৌরসভায় দুই থেকে আড়াই হাজার অটো চলাচল করে। এটা প্রাথমিক জরিপে পেয়েছি। পূর্বের ন্যায় পৌর এলাকার ভেতর ও বাইরের অটোগুলোকে নির্দিষ্ট রং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অটোগুলোকে একটা সিস্টেমে আনতে চাচ্ছি। সেটা হলো, দুটো কালার করতে চাচ্ছি। এক দিন পরপর এক রঙের অটো চলবে। এতে যানজট কিছুটা লাঘব হবে বলে আমরা মনে করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

শান্ত যে কারণে টি-টোয়েন্টি দলে, মিরাজ কেন নেই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত