Ajker Patrika

১০ মামলায় জামিন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় লাপাত্তা আইনজীবী নেতা

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০০: ১৪
এম এম মুজিবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
এম এম মুজিবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

নাশকতা, মারামারিসহ ১০ মামলায় খুলনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট এম এম মুজিবুর রহমান জামিনে বের হয়ে আত্মগোপন করেছেন। জামিনে মুক্তির পর তিনি বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।

গত ১১ আগস্ট নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় শেখ হাসিনাসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা দায়ের করেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বিধান চন্দ্র রায়। মামলায় এম এম মুজিবুর রহমান ১ নম্বর এবং শেখ হাসিনা ২ নম্বর আসামি। এর পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হন্যে হয়ে তাঁকে খুঁজছেন।

পুলিশ ও একাধিক সূত্র জানায়, গত ২২ এপ্রিল নগরীর ময়লাপোতা মোড়সংলগ্ন খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে এম এম মুজিবুর রহমানকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। এ সময়ে তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

মোবাইলের তথ্য বিশ্লেষণ করে গোয়েন্দা পুলিশ হতবাক হয়ে যায়। তিনি মোবাইলের মাধ্যমে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।

সূত্র আরও জানায়, খুলনায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমকে সুসংগঠিত করার জন্য তাঁর ওপর ঊর্ধ্বতন নেতারা দায়িত্ব দেন। ঝটিকা মিছিল বের করার জন্য তাঁর কাছে বিপুল পরিমাণ টাকাও পাঠানো হয়।

গোয়েন্দা সংস্থা এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে আটক করে। গোয়েন্দা কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তিনি দিয়েছেন। পরে তাঁকে জিডিমূলে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।

পরবর্তী সময়ে গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তারের জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। ওই আবেদন ৪ আগস্ট মঞ্জুর হয়। কিন্তু এর আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হন এম এম মুজিবুর রহমান। জামিন পাওয়ার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, এম এম মুজিবুরের বিরুদ্ধে খুলনার বিভিন্ন থানায় ১০ মামলা রয়েছে। তার মধ্যে খালিশপুর, আড়ংঘাটা এবং হরিণটানা থানায় বিস্ফোরক আইনে তিনটি, খুলনা সদর এবং খালিশপুর থানায় বাকি মামলা রয়েছে। সর্বশেষ সোনাডাঙ্গা থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনাসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। সেই মামলায় এম এম মুজিবুর রহমান ১ নম্বর আসামি।

জানতে চাইলে খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, ২২ এপ্রিল একটি জিডিমূলে এম এম মুজিবুর রহমানকে কারাগারে পাঠান আদালত। ১৭ জুলাই হাইকোর্টের এক আদেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে খুলনার বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তিনি জামিনে থাকায় তাঁকে ওই দিন সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক নুরুল হাসান রুবা বলেন, ‘জামিন দেওয়ার অধিকার রাখেন আদালত। আদালতের ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আমরা জামিনে বাধা দিতে পারি সরকারি পক্ষ থেকে। আসামির জামিনের জন্য যেকোনো আইনজীবীরা দাঁড়াতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আমরা কোনো বাধা দিতে পারি না। আইনের শাসন কার্যকর হোক, এটা আমরা চাই। এজাহারে অনেক সময় বিভিন্ন ফাঁকফোকর থাকে। সেই ফাঁকফোকরের কারণে অনেক সময়ে আসামিরা সহজে জামিন পেয়ে যায়।’

নুরুল হাসান রুবা বলেন, এম এম মুজিবুর রহমান জামিন পেয়েছেন। কিন্তু জামিনের পর থেকে তিনি আদালত চত্বর বা আইনজীবী সমিতিতে আসেননি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার প্রধান আসামি এম এম মুজিবুর রহমান জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিসিএসে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে প্রশ্ন, নেই মুক্তিযুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ও নিখোঁজ বহু

স্বামীকে হত্যার পর ইয়াবা সেবন করে লাশ টুকরো করেন স্ত্রী ও প্রেমিক

ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে বাংলাদেশমুখী এলপিজির জাহাজ

সমুদ্রের নিচে উদ্বেগজনক কিছু নজরে এল বিজ্ঞানীদের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত