Ajker Patrika

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ

ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেড কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কারণে জন্মের সময় মা হারানো ৮ দিন বয়সী শিশু আয়েশা মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শিশুটির বাবা। গতকাল মঙ্গলবার সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে লিখিত এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। 

অভিযোগকারী কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের সরসকাটি গ্রামের ক্ষেত্রপাড়ার বাসিন্দা আনারুল গাজী। তিনি লিখিত অভিযোগে তাঁর ৮ দিন বয়সী শিশু মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা এবং অবহেলাকে দায়ী করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। 

এদিকে শিশু আয়েশা মৃত্যুর ঘটনায় ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেড কর্তৃপক্ষের অবহেলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাতে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের পাশাপাশি আয়েশা মৃত্যুর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নানাবিধ মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরার বেশির ভাগ সামাজিক-স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠনগুলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা এবং আয়েশা হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেডকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে এ ঘটনায় এখনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করেনি। অফিশিয়ালি তারা এ নিয়ে কিছু না জানালেও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে, ‘দায়িত্বে অবহেলার কারণে আয়েশার মৃত্যু হয়নি’ বলে দাবি করেছেন হাসপাতালটির অ্যাডমিন আনোয়ার হোসেন। 

শিশু আয়েশার বাবার লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

প্রসঙ্গত, গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিশু আয়েশাকে রক্তশূন্যতাজনিত অসুস্থতার কারণে ‘শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল’ কলারোয়ার চিকিৎসক ডা. ঈসমাইলের পরামর্শে ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেডে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতালে তিন দিন ভর্তি রেখে রক্ত দিলেই শিশুটি আবারও সুস্থ হয়ে উঠবে বলে জানানো হয়। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথামতো রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ইসলামী হাসপাতালের কেউ ওই শিশুকে ক্যানোলা পরাতে পারবেন না বলে জানায়। ফলে বাধ্য হয়ে শিশুটিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ক্যানোলা পরিয়ে আনা হয়। রক্ত ও ক্যানোলা রেডি করার পর কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ইসলামী হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক বা নার্স আয়েশার পাশে আসেনি। আয়েশার বাবা বারবার নিচতলা থেকে ওপরতলা পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটে গিয়ে তার বাচ্চাকে দেখার অনুরোধ জানালেও তারা আসেনি বলে অভিযোগ করেন শিশু আয়েশার বাবা। একপর্যায়ে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে শিশু আয়েশার মৃত্যু হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত