Ajker Patrika

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ১৩ দফা দাবি পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরামের

খুলনা প্রতিনিধি
আজ খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করে পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করে পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের জ্বালানি খাতে কাঠামোগত সংস্কার ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে খুলনার নাগরিক সমাজ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরাম, খুলনা’ জ্বালানি খাতে ন্যায্য রূপান্তরের লক্ষ্যে ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের সদস্য ও সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দী। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার (প্যারিস চুক্তি) বাস্তবায়নে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হওয়া এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।

লিখিত বক্তব্যে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে আরও উল্লেখ করা হয়, গত দেড় দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়লেও এই খাত বর্তমানে এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে এবং খাতটির ওপর মোট ঋণের বোঝা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ বাড়ছে এবং দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি ও অনিয়ম জেঁকে বসেছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ-সংযোগসহ এই খাতের বিভিন্ন কার্যক্রম সাধারণ মানুষের কাছে অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক শাসন ও সুশাসনের পরিপন্থী।

সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পেশ করা ১৩ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় দ্রুত জাতীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি প্রণয়ন। কুইক রেন্টালসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইন বাতিল করে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি চালু। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা। কয়লা, গ্যাস ও তেলভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র ও এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ বন্ধ। ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা গ্রহণ। পরিবহন খাতে দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক যানবাহনে শুল্ক হ্রাস। জাতীয় গ্রিডকে স্মার্ট গ্রিডে রূপান্তরকরণ। কৃষি ও ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে ২৫ শতাংশ ভর্তুকি ও ৭০ শতাংশ সহজ ঋণের ব্যবস্থা করা। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে তরুণদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি। কার্বন ক্যাপচার, গ্রিন হাইড্রোজেন ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ। সৌর প্যানেল ও ব্যাটারির রিসাইক্লিং শিল্প গড়ে তোলা। জ্বালানি নীতি প্রণয়নে নারী, ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। কৃষকের জমি অধিগ্রহণের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি ইজারা পদ্ধতি চালু।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সদস্য সৈয়দা রেহেনা ঈসা, এনামুল হক, মোস্তফা জামাল পপলু, হাসান হিমালয়, রকিবুল ইসলাম মতি, মাহবুব আলম প্রিন্স, সাদিয়া রওশন অধরা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ