Ajker Patrika

হত্যার পর বস্তায় ভরে পুঁতে রাখা হয় কলেজছাত্রকে

হত্যার পর বস্তায় ভরে পুঁতে রাখা হয় কলেজছাত্রকে

যশোরের মনিরামপুরে বস্তাবন্দী অবস্থায় পুঁতে রাখা এক কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মদনপুর মাঠের নিমতলা নামক স্থানের একটি ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

ওই ছাত্রের নাম ইকরামুল হোসেন (১৮)। সে একই উপজেলার মশ্মিমনগরের ভরতপুর গ্রামের প্রবাসী মফিজুর রহমানের ছেলে। ইকরামুল রাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। 

এ ঘটনায় গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে পুলিশ ভরতপুর গ্রাম থেকে তিনজনকে আটক করে। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্য মতে ইকরামুলের মরদেহ উদ্ধার হয়। আটক তিনজন ইকরামুলের প্রতিবেশী। 

আটক তিনজন হলেন, ভরতপুর গ্রামের হোসেন আলী মোড়লের দুই ছেলে আমিনুর রহমান ও কামরুল হাসান এবং আব্দুল কাদেরের ছেলে মেহেদি হাসান। ইকরামুলের স্বজনরা এ তিনজনকে আটকের কথা জানালেও পুলিশ আমিনুরকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় ওয়াজ মাহফিল শোনার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন ইকরামুল। 

নিহতের স্বজনদের দাবি, ক্যারাম খেলা নিয়ে প্রতিবেশী আমিনুরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে আটক তিনজন মিলে ইকরামুলকে খুন করেছে। তবে, পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে উপস্থিত কিছু জানা যায়নি। 

ইকরামুলের চাচা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, মশ্মিমনগর এলাকায় ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার উদ্দেশে গত সোমবার সন্ধ্যার আগে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন ইকরামুল। এরপর রাত নয়টা থেকে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে আমরা থানায় আসি। পুলিশের পরামর্শে বুধবার সকালে যশোরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে যাই। তাঁরা মনিরামপুর থানায় জিডি করতে বলেন। থানায় জিডি করার পর দুপুরে আবার যশোরে যাই। এরপর রাত একটার দিকে পুলিশ বাড়ি থেকে প্রথমে আমিনুরকে আটক করে। পরে কামরুল ও মেহেদিকে আটক করে তিনজনকে নিয়ে যায়। 

তিনি বলেন, ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার আগে এলাকার একটি সাঁকোর ওপরে আমার সঙ্গে ইকরামুলের দেখা হয়। সেখানে থেকে মেহেদির মোটরসাইকেলে করে মাহফিলে যাওয়ার কথা ছিল ইকরামুলের। 

ইকরামুলের চাচা বলেন, এক বছর আগে ক্যারাম খেলা নিয়ে আমিনুরের সঙ্গে গন্ডগোল হয় ইকরামুলের। সে সূত্র ধরে আমিনুর, কামরুল ও মেহেদি সোমবার রাতে তুলে নিয়ে ৯টার দিকে বাড়ি থেকে ৮-১০ কিলোমিটার দূরে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে পুঁতে রাখে। 

আসাদুজ্জামানের দাবি, ইকরামুলকে পিটিয়ে ও গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে তাঁরা খুন করেছে। তাঁর (ইকরামুলের) মোবাইলের সিমকার্ড খুলে তাতে নিজের সিমকার্ড ঢোকান আমিনুর। সে সূত্র ধরে আমিনুরকে আটক করে পিবিআই। 

ইকরামুলের মা রেশমা খাতুন বলেন, পুলিশ আমিনুর, কামরুল আর মেহেদিরে ধরেছে। ওরা আমার ছেলের খুন করেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই। 

যশোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক হিরন্ময় সরকার ঘটনাস্থল থেকে বলেন, নিখোঁজ কলেজছাত্র ইকরামুলের মা জিডি করার পর আমরা ছায়া তদন্ত শুরু করি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমিনুরকে আটক করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইকরামুলের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। 
হিরন্ময় সরকার বলেন, কি কারণে হত্যাকাণ্ড তা পরে জানাতে পারব। 

মনিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী মাহবুবুর রহমান লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার থানায় জিডি হয়েছে। আটকের বিষয়টি পিবিআই বলতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত