সেলিম সুলতান সাগর, চিতলমারী (বাগেরহাট)
রোববার ভোর ৬টা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বটগাছের নিচে বসে আছেন সারি সারি মানুষ। সবাই দিনমজুর। বৃষ্টিতে বেরিয়েছেন রুজির ধান্দায়। মহাজনের পথ চেয়ে আছেন। দরদামে মিললে যোগ দেবেন কাজে। কাজ শেষে পাওনা টাকা পেলে পরিবারের সদস্যদের আহার জুটবে। তাই সবাই কাকডাকা ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার দুর্গাপুর মোড়ের ‘কামলার হাটে’।
প্রতিদিনের এই হাটে কোনো পণ্য বিক্রি হয় না। তাই বলে ক্রেতা-বিক্রেতার অভাব নেই। কেনাবেচা চলে খুব ভোরে। হাটে শ্রম বিক্রির জন্য আসেন মানুষ। আর সেই সব মানুষের শ্রম কিনে নিয়ে যান অন্য মানুষ। স্থানীয়দের ভাষায় দিনমজুর-শ্রমবিক্রেতাদের বলা হয় ‘কামলা’। তাই এই হাটের নাম হয়েছে ‘কামলার হাট’।
হাটে খুব ভোরে ২৫০ থেকে ৩০০ জন আসেন। বটগাছটির নিচে পৃথক পৃথক জটলা পাকিয়ে গল্পগুজব করেন। সবার কাছে কাস্তে, হাতে ছোট ব্যাগে লুঙ্গি-গামছা। এঁরা সবাই কামলা। কাজের সন্ধানে এখানে আসা। অবস্থাসম্পন্ন কৃষক কিংবা যাঁদের কাজের লোকের প্রয়োজন, তাঁরা এসে দরদাম ঠিক করে তাঁদের নিয়ে যাচ্ছেন।
এ হাটে শ্রম বিক্রি করতে আসা উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামের সানাউল্লাহ বিশ্বাস (৫৫) বলেন, আগে ভ্যান চালাতেন। করোনার কারণে ভ্যানের আয়ে এখন আর সংসার চলে না। তাই নিয়মিত এই হাটে শ্রম বেচতে আসেন। শ্রম বেঁচে যে টাকা পান, তা দিয়েই বর্তমানে সংসার চালাচ্ছেন।
শ্রম বিক্রি করতে আসা সাবোখালী গ্রামের মনোরঞ্জন মণ্ডল (৫০) ও রবীন মণ্ডল (৫২) বলেন, একসময় তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। বর্তমানে খুব খারাপ। তাই রোজই এই হাটে শ্রম বিক্রি করতে আসেন। এখন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩৫০ টাকা এবং সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শ্রম বিক্রি করে ৫০০ টাকা পান। মহাজনের ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁদের কাজ করতে হয়।
আলীপুর গ্রামের জাকির শেখ (৪৮) বলেন, ১০ থেকে ১২ বছর ধরে এ হাটে শ্রম বিক্রি করতে আসেন। কোনো দিন আসামাত্রই কাজ পান। কোনো দিন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। যেদিন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, সেদিন খুব কষ্ট হয়। কারণ এখানে একটি ছোট্ট কালভার্টের ওপর কিছু মানুষ বসা যায়। বাকিদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তা ছাড়া এখানে কোনো ছাউনির ব্যবস্থাও নেই।
জাকির শেখ আরও বলেন, ‘করোনার কারণে কাজ কমে যাওয়ায় এখন অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় কারও ভাগ্যে কাজ জোটে, আবার কেউ শূন্য হাতে শুকনা মুখে বাড়ি ফিরে যায়।’
কাজের জন্য লোক নিতে আসা আশ্বাব আলী ফরাজী ও শংকর মণ্ডল বলেন, তাঁরা চিংড়ির চাষ করেন। প্রায়ই তাঁদের কামলার প্রয়োজন হয়। তাই যখনই কামলার দরকার হয়, খুব ভোরে চলে আসেন এই হাটে। দামদরে মিললে কাজে নিয়ে যান।
কামলার হাটের ব্যবসায়ী মৃত্যুঞ্জয় হালদার ও স্থানীয় বাসিন্দা সুরেশ বোস জানান, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে প্রতিদিন এই কামলার হাট বসে। হাটে খুব ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ জন কামলা আসেন। এঁদের বেশির ভাগ আলীপুর, আতাইকাঠি, পারনওয়াপাড়া, শিয়ালকাঠি, বয়ারসিং, গোপালকাঠি, লড়ারকুল, মাধবকাঠি, মান্দ্রা, বাদোখালী, চৌদ্দহাজারী, সাবোখালী, দানোখালী, পাঁচপাড়া, আড়য়াবর্নী ও পাটরপাড়া গ্রামের মানুষ। এই হাটে বসার ব্যবস্থা বা কোনো ছাউনি না থাকায় তাঁদের (কামলাদের) খুব কষ্ট হয়।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিটন আলী বলেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খোঁজ নিয়ে দেখবেন। ওই জায়গার আশপাশে খাসজমি থাকলে দিনমজুরদের জন্য বসার জায়গা ও ছাউনির ব্যবস্থা করবেন।
রোববার ভোর ৬টা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বটগাছের নিচে বসে আছেন সারি সারি মানুষ। সবাই দিনমজুর। বৃষ্টিতে বেরিয়েছেন রুজির ধান্দায়। মহাজনের পথ চেয়ে আছেন। দরদামে মিললে যোগ দেবেন কাজে। কাজ শেষে পাওনা টাকা পেলে পরিবারের সদস্যদের আহার জুটবে। তাই সবাই কাকডাকা ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার দুর্গাপুর মোড়ের ‘কামলার হাটে’।
প্রতিদিনের এই হাটে কোনো পণ্য বিক্রি হয় না। তাই বলে ক্রেতা-বিক্রেতার অভাব নেই। কেনাবেচা চলে খুব ভোরে। হাটে শ্রম বিক্রির জন্য আসেন মানুষ। আর সেই সব মানুষের শ্রম কিনে নিয়ে যান অন্য মানুষ। স্থানীয়দের ভাষায় দিনমজুর-শ্রমবিক্রেতাদের বলা হয় ‘কামলা’। তাই এই হাটের নাম হয়েছে ‘কামলার হাট’।
হাটে খুব ভোরে ২৫০ থেকে ৩০০ জন আসেন। বটগাছটির নিচে পৃথক পৃথক জটলা পাকিয়ে গল্পগুজব করেন। সবার কাছে কাস্তে, হাতে ছোট ব্যাগে লুঙ্গি-গামছা। এঁরা সবাই কামলা। কাজের সন্ধানে এখানে আসা। অবস্থাসম্পন্ন কৃষক কিংবা যাঁদের কাজের লোকের প্রয়োজন, তাঁরা এসে দরদাম ঠিক করে তাঁদের নিয়ে যাচ্ছেন।
এ হাটে শ্রম বিক্রি করতে আসা উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামের সানাউল্লাহ বিশ্বাস (৫৫) বলেন, আগে ভ্যান চালাতেন। করোনার কারণে ভ্যানের আয়ে এখন আর সংসার চলে না। তাই নিয়মিত এই হাটে শ্রম বেচতে আসেন। শ্রম বেঁচে যে টাকা পান, তা দিয়েই বর্তমানে সংসার চালাচ্ছেন।
শ্রম বিক্রি করতে আসা সাবোখালী গ্রামের মনোরঞ্জন মণ্ডল (৫০) ও রবীন মণ্ডল (৫২) বলেন, একসময় তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। বর্তমানে খুব খারাপ। তাই রোজই এই হাটে শ্রম বিক্রি করতে আসেন। এখন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩৫০ টাকা এবং সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শ্রম বিক্রি করে ৫০০ টাকা পান। মহাজনের ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁদের কাজ করতে হয়।
আলীপুর গ্রামের জাকির শেখ (৪৮) বলেন, ১০ থেকে ১২ বছর ধরে এ হাটে শ্রম বিক্রি করতে আসেন। কোনো দিন আসামাত্রই কাজ পান। কোনো দিন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। যেদিন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, সেদিন খুব কষ্ট হয়। কারণ এখানে একটি ছোট্ট কালভার্টের ওপর কিছু মানুষ বসা যায়। বাকিদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তা ছাড়া এখানে কোনো ছাউনির ব্যবস্থাও নেই।
জাকির শেখ আরও বলেন, ‘করোনার কারণে কাজ কমে যাওয়ায় এখন অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় কারও ভাগ্যে কাজ জোটে, আবার কেউ শূন্য হাতে শুকনা মুখে বাড়ি ফিরে যায়।’
কাজের জন্য লোক নিতে আসা আশ্বাব আলী ফরাজী ও শংকর মণ্ডল বলেন, তাঁরা চিংড়ির চাষ করেন। প্রায়ই তাঁদের কামলার প্রয়োজন হয়। তাই যখনই কামলার দরকার হয়, খুব ভোরে চলে আসেন এই হাটে। দামদরে মিললে কাজে নিয়ে যান।
কামলার হাটের ব্যবসায়ী মৃত্যুঞ্জয় হালদার ও স্থানীয় বাসিন্দা সুরেশ বোস জানান, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে প্রতিদিন এই কামলার হাট বসে। হাটে খুব ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ জন কামলা আসেন। এঁদের বেশির ভাগ আলীপুর, আতাইকাঠি, পারনওয়াপাড়া, শিয়ালকাঠি, বয়ারসিং, গোপালকাঠি, লড়ারকুল, মাধবকাঠি, মান্দ্রা, বাদোখালী, চৌদ্দহাজারী, সাবোখালী, দানোখালী, পাঁচপাড়া, আড়য়াবর্নী ও পাটরপাড়া গ্রামের মানুষ। এই হাটে বসার ব্যবস্থা বা কোনো ছাউনি না থাকায় তাঁদের (কামলাদের) খুব কষ্ট হয়।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিটন আলী বলেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খোঁজ নিয়ে দেখবেন। ওই জায়গার আশপাশে খাসজমি থাকলে দিনমজুরদের জন্য বসার জায়গা ও ছাউনির ব্যবস্থা করবেন।
চট্টগ্রাম নগরে পরীর পাহাড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে বছরখানেক আগে সড়কের পাশের ২৩ শতক জায়গার ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। উচ্ছেদের পর সেখানে জনস্বার্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর ডিসি রদবদল হলে সেই উদ্ধার করা জায়গা আরেক দখলদারের
৪ ঘণ্টা আগেসিলেটের ১৩৩ বছরের পুরোনো এমসি কলেজ। এর ছাত্রাবাসের সপ্তম ব্লকে ১২৮ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি কলেজের কয়েকজন কর্মচারীও থাকেন। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে পানির তীব্র সংকট থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। গোসল করা দূরে থাক, প্রয়োজনীয় খাওয়ার পানিও পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে
৪ ঘণ্টা আগেটানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পদ্মা নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ডুবে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের সাড়ে ৬ হাজার পরিবার। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরের নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণপুর
৪ ঘণ্টা আগেরংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে শ্বশুর রূপলাল দাস (৪৫) ও জামাই প্রদীপ লালের (৩৫) প্রাণহানির পেছনে আইনশৃঙ্খলাহীনতাকে দুষছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনের চুরি, ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট অপরাধের কারণে স্থানীয় জনতার ভেতর মবের মনোভাব তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশও সেভাবে তৎপর নয়। এসব কারণেই শ্
৪ ঘণ্টা আগে