Ajker Patrika

আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বসতভিটা দখলের চেষ্টা, আওয়ামী লীগের নেতা আটক 

আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বসতভিটা দখলের চেষ্টা, আওয়ামী লীগের নেতা আটক 

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে যশোরের মনিরামপুরে বসতভিটা দখলের চেষ্টার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার জলকর রোহিতা গ্রামে থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক বিকাশ বিশ্বাস (৫৫) ওই গ্রামের কেষ্ট পদ বিশ্বাসের ছেলে। তিনি জলকর রোহিতা ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিরোধী দুই পক্ষ পরস্পর খালাতো ভাই। উপস্থিতি নির্বৃত্ত করতে বিকাশকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাড়ির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে প্রতিবেশী বিকাশ বিশ্বাসের সঙ্গে আশুতোষ বিশ্বাসের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে গেল সপ্তাহে আদালতে অভিযোগ করেন আশুতোষ বিশ্বাস। এরপর আদালত নালিশি সম্পত্তির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। আজ (বৃহস্পতিবার) আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে বিকাশ লোকজন ভাড়া করে আশুতোষের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করে। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবার ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে বিকাশকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।

যশোরের মনিরামপুরে বাড়ির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ। ছবি: অজকের পত্রিকা আশুতোষ বিশ্বাসের স্ত্রী অনিকা বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি আমিন দিয়ে মেপে আমরা বাড়ির সীমানা নির্ধারণ করে প্রাচীর দিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ওয়ার্ডের শেখপাড়া এলাকা থেকে সাবেক যুবলীগ নেতা মোহর আলী, সাবেক মেম্বর জামাল উদ্দিন, মোশারেফ হোসেন, টেংরামারী বাজার কমিটির সভাপতি শাহা আলমসহ কিছু লোক নিয়ে বিকাশ আমাদের বাড়ির প্রাচীর ভাঙচুর শুরু করে। বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে, আমার স্বামী ও মেয়ে অর্পিতা বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করে। ঘটনার দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে গেলে জামাল মেম্বর আমার মেয়ে অর্পিতা বিশ্বাসের গায়ে হাত তোলে এবং মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ আসে।’

অনিকা বিশ্বাস বলেন, গত সোমবার ১৪৪ ধারার আদেশের কপি নিয়ে আমরা থানায় গিয়েছি। থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) উত্তম কুমার আদেশটি গ্রহণ করেছিলেন।

রোহিতা দাসপাড়া দক্ষিণ দুর্গা মন্দিরের সভাপতি গৌতম দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সামান্য কিছু ঘটলে বিকাশ ক্ষমতা দেখিয়ে শেখপাড়া থেকে মোহর বাহিনীকে ডেকে পাড়ায় বিশৃঙ্খলা ঘটায়। মোহর বাহিনীর অত্যাচারে আমরা আতঙ্কগ্রস্ত।’

যশোরের মনিরামপুরে বাড়ির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ। ছবি: অজকের পত্রিকা অভিযোগের বিষয়ে সাবেক যুবলীগ নেতা মোহর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো পক্ষ আমাকে ডাকেননি। লোকজন সীমানা প্রাচীর ঘেরার কাজ করছে শুনে আমি ওখানে গিয়েছি। ওরা সব মিথ্যা বলছে।
সাবেক মেম্বর জামাল হোসেনকে মোবাইল কল করা হলে তিনি ধরেননি।’ আটক বিকাশ বিশ্বাসের ছেলে সৌরভ বিশ্বাস বলেন, ‘সকালে শ্রমিকদের দিয়ে আমরা সীমানা ঘিরছিলাম। তখন আশুতোষ পুলিশ ডেকে এনেছে। পুলিশ আসার পর গৌতম দাস ও আশুতোষ বাবাকে মারপিট করেছে।’

রোহিতা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘থানার ওসির ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। গিয়ে দেখি লোকজন নিয়ে মোহর আলী উত্তেজিত। পরে পুলিশ দেখে সবাই সটকে পড়েছে।’ 

মনিরামপুর থানার এএসআই উত্তম ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৪৪ আদেশ জারি করতে হলে কিছু প্রক্রিয়া আছে। সেগুলো মেনে আজ আদেশ জারি করার জন্য খেদাপাড়া পুলিশ ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে মারামারির ঘটনা শুনেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত