Ajker Patrika

অনুমোদনহীন আবাসন গড়ার ধুম লেগেছে খুলনায়

শামিমুজ্জামান, খুলনা
অনুমোদনহীন আবাসন গড়ার ধুম লেগেছে খুলনায়

খুলনা নগরীর যেখানে-সেখানে গড়ে উঠছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। অপরিকল্পিত এসব বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকায় নেই পর্যাপ্ত রাস্তা, পার্ক, পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা কিংবা আধুনিক কোনো সুযোগ-সুবিধা। এ কারণে ভবিষ্যতে এসব এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

খুলনা মহানগরীর বটিয়াঘাটা বিস্তৃত হচ্ছে জলমা ইউনিয়নের দিকে। শহর থেকে নিকটবর্তী এবং দাম কম হওয়ায় মানুষ এদিকে জমি কিনছেন। এই সুযোগ নিচ্ছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। অনুমোদন ছাড়াই গড়ে তুলছেন শতাধিক আবাসন প্রকল্প। যদিও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) অনুমোদন রয়েছে মাত্র পাঁচটি আবাসিক প্রকল্পে। কেডিএর অনুমোদন ছাড়া গড়ে ওঠা এসব আবাসিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আবার রয়েছে সরকারি খাল দখলের অভিযোগ।

এ ব্যাপারে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘নগরীর পাশের বটিয়াঘাটা কৈয়ার দিকে জমির দাম কম। আর এই সুযোগে অসাধু জমি বিক্রেতারা সেখানে আবাসিক এলাকার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ব্যবসা করছেন। অথচ আধুনিক কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই সেসব আবাসিক এলাকায়। এসব অসাধু জমি ব্যবসায়ী সরকারি খাল ও খাসজমি দখল করে অপরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে তুলছেন। অথচ প্রশাসনের কোনো তদারকি নেই।’ তিনি দ্রুতই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

যেভাবে অপরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে, তাতে ভবিষ্যতে ওই এলাকাগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে বলে মনে করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান স্টাডিজের প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম।

একে তো অপরিকল্পিত স্থাপনা, তার ওপর এসব গড়ে তোলা হচ্ছে খাসজমি দখল করে। ফলে প্রতিবছর কমছে কৃষিজমির পরিমাণ। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, এভাবে খুলনায় প্রতিবছর ২ হাজার ৮৩১ হেক্টর কৃষিজমি কমছে। কৃষিজমি এভাবে কমতে থাকলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদেরা। বিপর্যয় ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা ।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শচীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে প্রতিদিনই কমছে কৃষিজমি। শুধু খুলনা জেলায় প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে ২ হাজার ৮৩১ হেক্টর। শুধু কৃষিজমি নয়, এর পাশাপাশি কমছে জলাশয়সহ অন্যান্য জমি। এভাবে প্রতিবছর জমি কমলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
কৃষিজমি রক্ষায় কৃষি নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কৃষি নীতিমালা করা না হলে অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করা সম্ভব নয়।’

অপর দিকে অপরিকল্পিতভাবে এবং অনুমোদনবিহীন আবাসিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে কেডিএ। এ ব্যাপারে কেডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. সাবিরুল আলম বলেন, ‘ইতিমধ্যে অনুমোদনবিহীন আবাসিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে অভিযান।’ এরই মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত