রাশেদ কামাল, কালিয়া (নড়াইল)
বাড়িটি কি কিছু বলতে চাইছে?
কালু খাঁ, মোল্যা তমিজদ্দিন কিংবা রাঙ্গা মিয়াদের কথা কি জানাতে চাইছে আপনাকে? ওই যে, যাঁরা নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছিলেন? প্রতিবাদ করায় যাঁরা জীবন দিয়েছিলেন? ২০০ বছর আগের সেই গল্প কি বলতে চাইছে বাড়িটা?
কালু খাঁর বাড়ি ছিল কালিয়ার গাজীরহাট গ্রামে, তমিজদ্দিনের বাড়ি বাঐসোনা গ্রামে আর রাঙ্গা মিয়া থাকতেন মধুপুর গ্রামে। এ রকম আরও কত মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে রানি আর নীলকরেরা!
এই বাড়ির প্রতিটি ইটের সঙ্গেই লেপ্টে আছে সেই অত্যাচারের গল্প।
তৎকালীন যশোর জেলার মকিমপুর পরগনাটি শাসন করতেন রানি রাসমনি। আর নড়াইলের নড়াগাতিসহ কালিয়া উপজেলার জমিদার ছিলেন শিশির কুমার রায়। এই নড়াগাতিতেই ১৮১২ সালে রানি রাসমনি নির্মাণ করিয়েছিলেন কাছারিবাড়ি আর মন্দির। কাছারি বাড়িটি ছিল ৪ একর ৪৯ শতক জমির ওপর, ৮০ ফুট লম্বা ও ৫৫ ফুট চওড়া। বাড়িটির পাশেই ছিল আঠারবাকি নদী। কাছারিবাড়িটি ছিল কারুকার্যমণ্ডিত।
নির্মাণের সালটি দেখলেই বুঝতে পারবেন, সেটা ব্রিটিশদের উপনিবেশকাল। প্রজা নির্যাতনের নৃশংসতা তখন ডাল-ভাতের মতো ব্যাপার। আরও কর, আরও খাজনা আদায়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে ইংরেজ বেনিয়ারা। নীল চাষের ভয়াবহতায় তখন রচিত হচ্ছে কালো ইতিহাস।
সাধারণ মানুষ কষ্ট সহ্য করে যায়, কখনো ফুঁসে ওঠে। আর মানুষ ফুঁসে উঠলেই অত্যাচারীরা কঠোর হয়। ১৯১৫ সালে কাছারির অদূরে কালিয়া উপজেলার গ্রামগুলো নিয়ে গড়ে ওঠে নড়াগাতি থানা। এই থানা কাছারির নায়েব, পাইক-পেয়াদা আর নীলকরদের নিরাপত্তা দেবে।
রানির কাছারির নায়েবের নাম শশীভূষণ। কর আর খাজনা আদায়ের জন্য শশীভূষণ ঝাঁপিয়ে পড়তেন প্রজাদের ওপর। এই বাড়িটি থেকে ভেসে আসত অত্যাচারিত কৃষক-প্রজাদের চিৎকার। ইংরেজরাও পিছিয়ে ছিল না, তারা কাছারিবাড়ির আশপাশেই স্থাপন করেছিল ১২টি নীলকুঠি। প্রজা নির্যাতন বাড়তে থাকল।
শুরুতে যে তিনজনের নাম বলা হলো, তাঁদের মরদেহ কি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল? কিংবা তাঁরা ছাড়াও আরও যাঁদের হত্যা করা হয়েছিল, তাঁদের লাশ কি পেয়েছিল পরিবারের মানুষেরা? যতদূর জানা গেছে, তাঁদের নির্যাতনে হত্যার পর মরদেহ গায়েব করে দিতেন শশীভূষণ ও তাঁর পাইক-পেয়াদারা।
এখন কাছারিবাড়িটির মলিন দশা। বাড়িটির দরজা-জানালাসহ বহু মূল্যবান জিনিসপত্রই চুরি হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার জন্য প্রহর গুনছে বাড়িটি। মলিন দশা পাশের মন্দিরটিরও। রোদ-বৃষ্টিতে গরু-ছাগলের আশ্রয়স্থল হয়ে পড়েছে কাছারিবাড়ি। বাড়িটিকে টিকিয়ে রাখা দরকার ইতিহাসের স্বার্থেই। মানুষ জানবে, কোনো একদিন কী ভীষণ ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল এই এলাকায়!
ইতিহাস রক্ষার জন্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হস্তান্তরের জন্য স্থানীয় জনগণ আবেদন করেছে। উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস মিয়া জানিয়েছেন, সরকারের অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত কাছারিবাড়িটি ও জমির বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কালিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাড়িটি সংরক্ষণসহ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বাড়িটি রক্ষা করা হলে ইতিহাসটাও উঠে আসবে আবার।
মানুষ জানতে পারবে, কোনো একদিন এই কাছারিবাড়িটি ছিল অত্যাচারের সাক্ষী। ইতিহাসই ওর হয়ে কথা বলবে।
বাড়িটি কি কিছু বলতে চাইছে?
কালু খাঁ, মোল্যা তমিজদ্দিন কিংবা রাঙ্গা মিয়াদের কথা কি জানাতে চাইছে আপনাকে? ওই যে, যাঁরা নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছিলেন? প্রতিবাদ করায় যাঁরা জীবন দিয়েছিলেন? ২০০ বছর আগের সেই গল্প কি বলতে চাইছে বাড়িটা?
কালু খাঁর বাড়ি ছিল কালিয়ার গাজীরহাট গ্রামে, তমিজদ্দিনের বাড়ি বাঐসোনা গ্রামে আর রাঙ্গা মিয়া থাকতেন মধুপুর গ্রামে। এ রকম আরও কত মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে রানি আর নীলকরেরা!
এই বাড়ির প্রতিটি ইটের সঙ্গেই লেপ্টে আছে সেই অত্যাচারের গল্প।
তৎকালীন যশোর জেলার মকিমপুর পরগনাটি শাসন করতেন রানি রাসমনি। আর নড়াইলের নড়াগাতিসহ কালিয়া উপজেলার জমিদার ছিলেন শিশির কুমার রায়। এই নড়াগাতিতেই ১৮১২ সালে রানি রাসমনি নির্মাণ করিয়েছিলেন কাছারিবাড়ি আর মন্দির। কাছারি বাড়িটি ছিল ৪ একর ৪৯ শতক জমির ওপর, ৮০ ফুট লম্বা ও ৫৫ ফুট চওড়া। বাড়িটির পাশেই ছিল আঠারবাকি নদী। কাছারিবাড়িটি ছিল কারুকার্যমণ্ডিত।
নির্মাণের সালটি দেখলেই বুঝতে পারবেন, সেটা ব্রিটিশদের উপনিবেশকাল। প্রজা নির্যাতনের নৃশংসতা তখন ডাল-ভাতের মতো ব্যাপার। আরও কর, আরও খাজনা আদায়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে ইংরেজ বেনিয়ারা। নীল চাষের ভয়াবহতায় তখন রচিত হচ্ছে কালো ইতিহাস।
সাধারণ মানুষ কষ্ট সহ্য করে যায়, কখনো ফুঁসে ওঠে। আর মানুষ ফুঁসে উঠলেই অত্যাচারীরা কঠোর হয়। ১৯১৫ সালে কাছারির অদূরে কালিয়া উপজেলার গ্রামগুলো নিয়ে গড়ে ওঠে নড়াগাতি থানা। এই থানা কাছারির নায়েব, পাইক-পেয়াদা আর নীলকরদের নিরাপত্তা দেবে।
রানির কাছারির নায়েবের নাম শশীভূষণ। কর আর খাজনা আদায়ের জন্য শশীভূষণ ঝাঁপিয়ে পড়তেন প্রজাদের ওপর। এই বাড়িটি থেকে ভেসে আসত অত্যাচারিত কৃষক-প্রজাদের চিৎকার। ইংরেজরাও পিছিয়ে ছিল না, তারা কাছারিবাড়ির আশপাশেই স্থাপন করেছিল ১২টি নীলকুঠি। প্রজা নির্যাতন বাড়তে থাকল।
শুরুতে যে তিনজনের নাম বলা হলো, তাঁদের মরদেহ কি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল? কিংবা তাঁরা ছাড়াও আরও যাঁদের হত্যা করা হয়েছিল, তাঁদের লাশ কি পেয়েছিল পরিবারের মানুষেরা? যতদূর জানা গেছে, তাঁদের নির্যাতনে হত্যার পর মরদেহ গায়েব করে দিতেন শশীভূষণ ও তাঁর পাইক-পেয়াদারা।
এখন কাছারিবাড়িটির মলিন দশা। বাড়িটির দরজা-জানালাসহ বহু মূল্যবান জিনিসপত্রই চুরি হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার জন্য প্রহর গুনছে বাড়িটি। মলিন দশা পাশের মন্দিরটিরও। রোদ-বৃষ্টিতে গরু-ছাগলের আশ্রয়স্থল হয়ে পড়েছে কাছারিবাড়ি। বাড়িটিকে টিকিয়ে রাখা দরকার ইতিহাসের স্বার্থেই। মানুষ জানবে, কোনো একদিন কী ভীষণ ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল এই এলাকায়!
ইতিহাস রক্ষার জন্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হস্তান্তরের জন্য স্থানীয় জনগণ আবেদন করেছে। উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস মিয়া জানিয়েছেন, সরকারের অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত কাছারিবাড়িটি ও জমির বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কালিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাড়িটি সংরক্ষণসহ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বাড়িটি রক্ষা করা হলে ইতিহাসটাও উঠে আসবে আবার।
মানুষ জানতে পারবে, কোনো একদিন এই কাছারিবাড়িটি ছিল অত্যাচারের সাক্ষী। ইতিহাসই ওর হয়ে কথা বলবে।
রনির বাড়ি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নে। তিনি ওই ইউনিয়নের বৃহত্তর রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৃত মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিমের ছোট ছেলে।
৪ মিনিট আগেগাইবান্ধা আদালতে দুই সন্তানের জনককে শিশু পরিচয়ে ভুয়া জন্মসনদ দেখিয়ে জামিনে মুক্ত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আদালতের নথি জালিয়াতি, আসামির পরিচয় পরিবর্তন এবং শিশু আদালতকে ভুল পথে পরিচালিত করার অভিযোগ উঠেছে। মামলার নথি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৫ জুলাই সেনাবাহিনীর অভিযানে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক কান
৪ মিনিট আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) ক্লাস আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক
১৭ মিনিট আগেপুলিশ সুপার বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারের আরও একটি বিভাগ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কাজ করছে। তবে মাদক নির্মূলের জন্য সবার সহযোগিতা জরুরি। তিনি তথ্য দিয়ে কিংবা সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে মাদক নির্মূলের আহ্বান জানান। প্রয়োজনে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সামাজিকভাবে বয়কট করার পরামর্শও দে
২১ মিনিট আগে