সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আনন্দে ভাসছে সাবিনা-মাসুরার জেলা সাতক্ষীরা। অন্য সময়ে ফুটবল খেলা তেমন না দেখলেও গতকাল সোমবার বিকেল থেকে টিভিতে খেলা দেখা মিস করেননি শহরের সবুজবাগ, বিনেরপোতাসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটবল অনুরাগীরা।
এদিকে ফাইনালে গোল না পেলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন এলাকার মেয়ে সাবিনা খাতুন। জিতেছেন গোল্ডেন বুট। অধিনায়ক সাবিনা ও জাতীয় দলের অন্যতম খেলোয়াড় মাসুরা পারভিনকে স্বাগত জানাতে জমকালো সংবর্ধনার আয়োজন করতে যাচ্ছে সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
আজ মঙ্গলবার সাবিনা-মাসুরার এলাকায় গিয়ে কথা হয় তাঁদের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে। সাবিনার মা মমতাজ বেগম জানান, বাংলাদেশের সাফল্যে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিত। মেয়েটার ধ্যান-জ্ঞান ফুটবলকে নিয়ে। আট গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না। জাতীয় দলের সব মেয়ের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন মমতাজ বেগম।
সাবিনার বাবা সৈয়দ আলী গাজী মারা গেছেন ২০২০ সালে। অভিভাবকহীন পরিবারে সাবিনার বড় বোন সালমা খাতুনই এখন কর্ত্রী। খেলার বিষয়ে সালমা খাতুন বলেন, ‘সারা দিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছি— জয়ের খবরটা কখন আসবে। অবশেষে সন্ধ্যার পরপরই টিভির পর্দায় যখন ভেসে উঠল বাংলাদেশ ৩-১ গোলে জয়ী। তখন মনে হয়েছিল আমার বোনটার স্বপ্ন সার্থক হয়েছে। আর রাতে যখন শুনলাম, সাবিনা সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট পেয়েছে, তখন চোখ দিয়ে অনবরত আনন্দাশ্রু ঝরছিল। বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল। কারণ বাংলাদেশের মধ্যে যেখানেই সাবিনা খেলা করতে যেত, বাবা ছুটে যেত।’
সালমা খাতুন ছোটবোন সাবিনার আজকের এই অবস্থানের পেছনে কোচ আকবরসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছোটবেলাটা কেটেছে অভাব আর দারিদ্র্যের মধ্যে। সেই সময়টা ছিল খুবই সংগ্রামের। সাবিনা এখন বড় তারকা। অন্য বোনেরাও স্বাবলম্বী। সব মিলিয়ে মাকে নিয়ে ভালোই আছি।’
অপরদিকে সাতক্ষীরা সদরের বিনেরপোতায় নারী ফুটবল দলের অপর খেলোয়াড় মাসুরাদের বাড়িতেও চলছে জয়ের উৎসব। বাংলাদেশ দলের জয়ে বাবা রজব আলী শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও স্থানীয় মেলায় রাতভর দাপিয়ে বেড়িয়েছেন।
মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রজব আলী বলেন, ‘আমি কলারোয়া থেকে সাতক্ষীরায় এসেছি ছোটবেলায়। সংসার চালাতে কখনো চা বেচতাম, কখনো সবজি বিক্রি করতাম। শহরের পিটিআই মাঠে স্থানীয় কোচ আকবর ভাই মেয়েদের ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণ দিতেন। আমার বড় মেয়ে মাসুরা ওরফে মুক্তা পিটিআই এলাকার একটি স্কুলে ক্লাস থ্রিতে পড়ত। স্কুল শেষে সে বাসায় না ফিরে মাঠে থাকত। সে সময় সাবিনারা পিটিআই মাঠে খেলত। প্রথম প্রথম সাবিনাদের বল সীমানার বাইরে গেলে সে কুড়িয়ে আনত। এভাবে তার মধ্যে ফুটবলপ্রীতি তৈরি হয়। আমি এসবের কিছুই জানতাম না। যখন জানলাম, তখন বাধা দিয়েছিলাম। তবে আকবর ভাইয়ের অনুরোধে আমি আর না করতে পারিনি। শেষমেশ ফুটবলেই মেয়েটা সুনাম কুড়াল।’
মাসুরার মা ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘আমরা খুবই গরিব মানুষ। এমনও দিন গেছে, অনাহারে থাকতে হয়েছে। ছোটবেলা থেকে মাসুরার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি তাকে খেলা চালিয়ে যেতে বলেছিলাম। কোচ আকবর আলীই আমার মেয়েকে এ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। দুর্ভাগ্য হলো, এত বড় জয় আকবর আলী দেখে যেতে পারলেন না।’
ফাতেমা খাতুন জানান, মেজো মেয়ে সুরাইয়াকে বিয়ে দিয়েছেন। বড় মেয়ে মাসুরাকে বিয়ের কথা বললেই সে বকাঝকা করে। ফুটবলই ওর ধ্যান-জ্ঞান। ফুটবলের প্রতি ওর আগ্রহ দেখে বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেলতে উৎসাহিত করেন তিনি।
সাতক্ষীরা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘নারী ফুটবল দল সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় গর্ব অনুভব করছি। বিশেষ করে সাবিনা ও মাসুরার জন্য সাতক্ষীরাবাসী গর্বিত। তাঁরা দুজন সাতক্ষীরায় ফিরলে স্টেডিয়ামে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জমকালো সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, স্থানীয় কিছু রক্ষণশীলের হুমকি উপেক্ষা করে সাতক্ষীরার স্থানীয় কোচ আকবর আলী মেয়েদের বিভিন্ন ইভেন্টে কোচিং করাতেন। বছরখানেক আগে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আনন্দে ভাসছে সাবিনা-মাসুরার জেলা সাতক্ষীরা। অন্য সময়ে ফুটবল খেলা তেমন না দেখলেও গতকাল সোমবার বিকেল থেকে টিভিতে খেলা দেখা মিস করেননি শহরের সবুজবাগ, বিনেরপোতাসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটবল অনুরাগীরা।
এদিকে ফাইনালে গোল না পেলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন এলাকার মেয়ে সাবিনা খাতুন। জিতেছেন গোল্ডেন বুট। অধিনায়ক সাবিনা ও জাতীয় দলের অন্যতম খেলোয়াড় মাসুরা পারভিনকে স্বাগত জানাতে জমকালো সংবর্ধনার আয়োজন করতে যাচ্ছে সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
আজ মঙ্গলবার সাবিনা-মাসুরার এলাকায় গিয়ে কথা হয় তাঁদের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে। সাবিনার মা মমতাজ বেগম জানান, বাংলাদেশের সাফল্যে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিত। মেয়েটার ধ্যান-জ্ঞান ফুটবলকে নিয়ে। আট গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না। জাতীয় দলের সব মেয়ের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন মমতাজ বেগম।
সাবিনার বাবা সৈয়দ আলী গাজী মারা গেছেন ২০২০ সালে। অভিভাবকহীন পরিবারে সাবিনার বড় বোন সালমা খাতুনই এখন কর্ত্রী। খেলার বিষয়ে সালমা খাতুন বলেন, ‘সারা দিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছি— জয়ের খবরটা কখন আসবে। অবশেষে সন্ধ্যার পরপরই টিভির পর্দায় যখন ভেসে উঠল বাংলাদেশ ৩-১ গোলে জয়ী। তখন মনে হয়েছিল আমার বোনটার স্বপ্ন সার্থক হয়েছে। আর রাতে যখন শুনলাম, সাবিনা সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট পেয়েছে, তখন চোখ দিয়ে অনবরত আনন্দাশ্রু ঝরছিল। বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল। কারণ বাংলাদেশের মধ্যে যেখানেই সাবিনা খেলা করতে যেত, বাবা ছুটে যেত।’
সালমা খাতুন ছোটবোন সাবিনার আজকের এই অবস্থানের পেছনে কোচ আকবরসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছোটবেলাটা কেটেছে অভাব আর দারিদ্র্যের মধ্যে। সেই সময়টা ছিল খুবই সংগ্রামের। সাবিনা এখন বড় তারকা। অন্য বোনেরাও স্বাবলম্বী। সব মিলিয়ে মাকে নিয়ে ভালোই আছি।’
অপরদিকে সাতক্ষীরা সদরের বিনেরপোতায় নারী ফুটবল দলের অপর খেলোয়াড় মাসুরাদের বাড়িতেও চলছে জয়ের উৎসব। বাংলাদেশ দলের জয়ে বাবা রজব আলী শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও স্থানীয় মেলায় রাতভর দাপিয়ে বেড়িয়েছেন।
মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রজব আলী বলেন, ‘আমি কলারোয়া থেকে সাতক্ষীরায় এসেছি ছোটবেলায়। সংসার চালাতে কখনো চা বেচতাম, কখনো সবজি বিক্রি করতাম। শহরের পিটিআই মাঠে স্থানীয় কোচ আকবর ভাই মেয়েদের ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণ দিতেন। আমার বড় মেয়ে মাসুরা ওরফে মুক্তা পিটিআই এলাকার একটি স্কুলে ক্লাস থ্রিতে পড়ত। স্কুল শেষে সে বাসায় না ফিরে মাঠে থাকত। সে সময় সাবিনারা পিটিআই মাঠে খেলত। প্রথম প্রথম সাবিনাদের বল সীমানার বাইরে গেলে সে কুড়িয়ে আনত। এভাবে তার মধ্যে ফুটবলপ্রীতি তৈরি হয়। আমি এসবের কিছুই জানতাম না। যখন জানলাম, তখন বাধা দিয়েছিলাম। তবে আকবর ভাইয়ের অনুরোধে আমি আর না করতে পারিনি। শেষমেশ ফুটবলেই মেয়েটা সুনাম কুড়াল।’
মাসুরার মা ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘আমরা খুবই গরিব মানুষ। এমনও দিন গেছে, অনাহারে থাকতে হয়েছে। ছোটবেলা থেকে মাসুরার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি তাকে খেলা চালিয়ে যেতে বলেছিলাম। কোচ আকবর আলীই আমার মেয়েকে এ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। দুর্ভাগ্য হলো, এত বড় জয় আকবর আলী দেখে যেতে পারলেন না।’
ফাতেমা খাতুন জানান, মেজো মেয়ে সুরাইয়াকে বিয়ে দিয়েছেন। বড় মেয়ে মাসুরাকে বিয়ের কথা বললেই সে বকাঝকা করে। ফুটবলই ওর ধ্যান-জ্ঞান। ফুটবলের প্রতি ওর আগ্রহ দেখে বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেলতে উৎসাহিত করেন তিনি।
সাতক্ষীরা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘নারী ফুটবল দল সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় গর্ব অনুভব করছি। বিশেষ করে সাবিনা ও মাসুরার জন্য সাতক্ষীরাবাসী গর্বিত। তাঁরা দুজন সাতক্ষীরায় ফিরলে স্টেডিয়ামে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জমকালো সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, স্থানীয় কিছু রক্ষণশীলের হুমকি উপেক্ষা করে সাতক্ষীরার স্থানীয় কোচ আকবর আলী মেয়েদের বিভিন্ন ইভেন্টে কোচিং করাতেন। বছরখানেক আগে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে নোয়াখালীর আটটি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। অব্যাহত বৃষ্টি ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ডুবে যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক, মহল্লা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলার ১৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই জলাবদ্ধতা এখনো রয়ে গেছে। এক মাসের বেশি এই জলাবদ্ধতায়
২৬ মিনিট আগেসরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে যে ঠিকাদার সর্বনিম্ন দরে মালপত্র সরবরাহ করবেন, তাকেই কাজ দেওয়ার কথা। তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজশাহী আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে। এখানে সর্বনিম্ন নয়, যাঁরা সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন—তাঁদেরই কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ৯২ লাখ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে।
৩১ মিনিট আগেবিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সম্প্রতি কারাগারে যেতে হয়েছে সাবেক উপাচার্য আব্দুস সাত্তারকে। তবে এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি গত পাঁচ মাসেও কাজ
৩৬ মিনিট আগেউড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে দেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ শাহ সাইমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ার মুরাদপুর গ্রামে। এই গ্রাম, উপজেলা, এমনকি পাশের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের কাছ থেকেও তাঁরা টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন ব্যবসার নামে।
১ ঘণ্টা আগে