Ajker Patrika

৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলেও ছাড়া পাননি কাদের

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলেও ছাড়া পাননি কাদের

খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে গত বছরের ৫ এপ্রিল রাতে অপহরণের শিকার হন চা শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদার মো. আবদুল কাদের। অপহরণের পর আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ পরিচয়ে প্রথমে ৫০ লাখ, পরে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অপহরণকারীরা শেষে ৭ লাখ টাকায় রাজি হলে টাকা দিলেও ছাড়া পাননি কাদের। 

এদিকে বাবা আসবে বলে এখনো পথ চেয়ে আছে কাদেরের তিন সন্তান মো. শাহাদাৎ হোসেন (১৩), (যমজ) রবিউল হোসেন (১৩) ও মাহফুজা আক্তার (৭)। স্বামীর অপেক্ষায় স্ত্রী, ভাইয়ের অপেক্ষায় ভাই। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও তাঁকে ফিরে না পেয়েও পরিবারের শোক কাটছে না।

পুলিশ ও অপহৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার যোগ্যাছোলার খাড়িছড়া এলাকার মো. তোফায়েল আহমেদের ছেলে মো. আবদুল কাদের। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। নেপচুন চা বাগানে শ্রমিক সরবরাহ করতেন কাদের। তাঁর একাধিক জিপ গাড়ি শ্রমিক আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হতো।

গত বছরের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় খাড়িছড়া বাজার থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণের শিকার হন আবদুল কাদের। পরদিন সকালে খাড়িছড়া ক্যায়াং ঘরসংলগ্ন জঙ্গল থেকে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মুখ বেঁধে অপহরণের উপকরণ জব্দ করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এরপর তাঁকে অক্ষত ফিরে পেতে মামলায় না গিয়ে নানা কৌশলে অপহৃতের পরিবার দেন-দরবার চালায়।

একপর্যায়ে ইউপিডিএফ পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। দর-কষাকষি করে তা ৭ লাখ টাকায় রফা হয়। প্রথমে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা ও পরে এক জনপ্রতিনিধির (কাদেরের পরিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) অপহৃতের ছোট ভাই গুইমারা উপজেলার গহিন বনে নিয়ে মুক্তিপণের বাকি সাড়ে ৬ লাখ টাকা দিয়ে আসেন। কিন্তু তাতেও কাদেরের মুক্তি মেলেনি।

এক মাস ছয় দিন পর গত বছরের ১১ মে স্থানীয় এক যুবকের তথ্যমতে কাদের অপহরণের সূত্র উদ্ঘাটন করে স্থানীয়রা। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে ওই যুবকের সহযোগিতায় পুলিশ থোয়াইংপ্রু মারমা নামক এক ইউপিডিএফ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। পরে অপহৃতের মামা মো. কবির হোসেন বাদী হয়ে মূল পরিকল্পনা ও অপহরণকারী ইউপিডিএফ সদস্য অলুয়ে মারমাকে প্রধানকে করে থোয়াইংপ্রু মারমাসহ অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশিকুল ইসলাম বলেন, মামলার ২ নম্বর আসামি থোয়াইংপ্রু মারমা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও কাদের কোথায় আছে এ বিষয়ে কিছুই বলেনি। প্রধান আসামি অলুয়ে মারমাকে গ্রেপ্তার করা গেলে কাদের অপহরণের জট খুলতে পারে। যদিও গত অক্টোবর মাসে মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনসারুল করিম বলেন, মো. আবদুল কাদের অপহরণ মামলাটি এখন পিবিআই তদন্ত করছে।

মামলার বাদী মো. কবির হোসেন বলেন, ‘পিবিআই থেকে একবার ফোন করে কিছু তথ্য নিয়েছিল। এরপর এ বিষয়ে আর কিছু জানি না।’

এ বিষয়ে পিবিআইয়ের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে অপহৃত কাদেরের ছোট ভাই মো. ইউসুফ বলেন, ‘আমার ভাইকে অপহরণের পর জিপ গাড়ি, জমি বিক্রি করে অপহরণকারী চক্রের দাবি করা ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও তাকে ফেরত পাইনি। এখন তার স্ত্রী, তিন শিশু সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। স্কুল পড়ুয়া শিশু সন্তানেরা তাদের বাবার আসার অপেক্ষায়। প্রতিনিয়ত তারা জানতে চায় তাদের বাবা কখন আসবে?’

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপহৃতের এক নিকটাত্মীয় বলেন, কাদের দীর্ঘ দিন চা বাগানে শ্রমিক সরবরাহের কাজটি আয়ত্তে রাখায় স্থানীয় একটি পক্ষের সঙ্গে কিছুটা মতবিরোধ ছিল। অন্যদিকে পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন প্রসিত খীসার ইউপিডিএফের সঙ্গে এক দশকের সম্পর্কে হঠাৎ চিড় ধরে। মূল দলের সঙ্গ ছেড়ে ইউপিডিএফ সংস্কারের দাবি তোলেন তিনি। এ নিয়ে ইউপিডিএফ কাদেরের প্রতি কিছুটা অসন্তুষ্ট ছিল। যদিও এ বিষয়ে পরিবারের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে ইউপিডিএফের স্থানীয় সংগঠক কেওলা মারমা বলেন, এ ঘটনায় ইউপিডিএফ জড়িত নয়। অহেতুক অপহরণ বা যেকোনো ঘটনায় একটি গোষ্ঠী সব সময় ইউপিডিএফের প্রতি অপবাদ ছড়ায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেরপুরে চালকলের গুদামে মিলল ৪ টন সরকারি চাল, গ্রেপ্তার ১

শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুর জেলা শহরের নবীনগর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি চালকলের গুদামে অভিযান চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেরপুর জেলা শহরের নবীনগর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি চালকলের গুদামে অভিযান চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরে চালকলের গুদাম থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩ হাজার ৮৪০ কেজি চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ ও খাদ্য অধিদপ্তরের যৌথ দল। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পৌর শহরের নবীনগর এলাকার মেসার্স ওয়াজকুরুনী রাইস মিলের গুদামে এই অভিযান চালানো হয়। আটক ব্যক্তির নাম এনামুল হক। তিনি গুদামের পরিচালক বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, চালকলের ভেতর দুটি অটোরিকশায় রাখা খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত পাটের ১২ বস্তা ও প্লাস্টিকের আটটি বস্তাভর্তি চাল জব্দ করা হয়। এ ছাড়া গুদামের ভেতরে রাখা খোলা চাল নতুন মোড়কে ভর্তি করা হচ্ছিল। সেখান থেকে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪০ কেজি চাল জব্দ করা হয়। তবে অভিযানের আগেই অটোরিকশা দুটির চালকেরা পালিয়ে যান।

শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম চাল বলেন, চালকলের গুদাম থেকে সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কীভাবে, কারা এই সরকারি চাল গুদামে নিয়েছেন, তা নিশ্চিত জানতে তদন্ত চলছে।

শেরপুর খাদ্য বিভাগের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক পরীক্ষা করে প্রমাণ পেয়েছি, গুদামের চালগুলো দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল।’

শেরপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরেজমিনে চালগুলো আমরা দেখেছি। এগুলো খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল। এসব চাল বাইরে ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চালবোঝাই ট্রলিচাপায় স্বামী-স্ত্রী নিহত

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুরে চালবোঝাই ট্রলির নিচে চাপা পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে মনিরামপুর-ঝিকরগাছা সড়কের বাকোশপোল মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দম্পতি হলেন উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত অনন্ত দাসের ছেলে রণজিৎ দাস (৫০) ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস (৪০)। রণজিতের স্থানীয় চাঁদপুর নতুন বাজারে ধান-পাটের আড়ত রয়েছে। পাপিয়া মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের মেকানিক ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্বামী-স্ত্রী রাস্তায় পড়ে যান। এ সময় চালবোঝাই ট্রলি তাঁদের চাপা দেয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে বেলা ২টার দিকে চিকিৎসক ওই দম্পতিকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বাকোশপোল মোড়ের চা-দোকানি ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনার সময় চালবোঝাই একটি ট্রলি ঝিকরগাছার দিক থেকে মনিরামপুরের দিকে আসছিল। আর স্ত্রীকে পেছনে বসিয়ে মোটরসাইকেলটি স্বামী চালাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে সামনে আচমকা ট্রলি দেখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। এতে স্বামী-স্ত্রী দুজন পাকা রাস্তার ওপর পড়ে যান। এ সময় চালক ট্রলি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে চাপা দেন।

ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি দ্রুত পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করেছি। অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আহত স্বামী-স্ত্রীকে ইঞ্জিন ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে পুলিশ এসে ট্রলিসহ চালককে ধরে থানায় নিয়ে গেছে।’

মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত বলেন, ‘পাপিয়া আমার দপ্তরে মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ তিনি তদারকি করতেন। আজ স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে তিনি কাশিমনগর ইউনিয়নে নলকূপ স্থাপনের কাজ তদারকি করতে যাচ্ছিলেন। বাকোশপোল মোড় পার হওয়ার সময় ট্রলির নিচে চাপা পড়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনে নিহত হয়েছেন। পাপিয়ার মৃত্যুতে আমাদের দপ্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, ‘ট্রলির নিচে চাপা পড়ে আহত মোটরসাইকেল আরোহী দম্পতিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আমরা চালকসহ ট্রলি আটক করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থীদের ধাওয়ার মুখে স্কুলে ঢুকতে পারলেন না সাবেক প্রধান শিক্ষক

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁর বদলগাছীতে এক সাবেক প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ জুলাই ওই বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক শাদাত হোসেন শামীম ও সহকারী শিক্ষক রিফাত আরার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড শিক্ষক শামীমকে বরখাস্ত করে। পরবর্তী সময়ে রেজাউল করিম নামের এক শিক্ষককে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজ হঠাৎ করে শাদাত হোসেন শামীম তাঁর গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্লোগান দেয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শামীম দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাদাত হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অন্যায়ভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আমি হাইকোর্টে মামলা করলে আদালত আমার পক্ষে রায় দেন এবং বকেয়া বেতনসহ পদে যোগদানের নির্দেশ দেন। সেই রায়ের কাগজ উপজেলা নির্বাহী অফিস ও থানায় জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ে গেলে কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা আমার ওপর হামলা চালায়। আমি আত্মরক্ষার জন্য স্থান ত্যাগ করি।’

অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘হাইকোর্টের যে রায় দেখানো হয়েছে, সেটি ভুয়া বলে আমরা সন্দেহ করছি। আজ সে গ্রামের কিছু লোক নিয়ে জোর করে প্রতিষ্ঠানে ঢোকার চেষ্টা করে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে বিদ্যালয়ে ফিরতে দেব না।’

একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষক সমাজের আদর্শ মানুষ। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ মানা যায় না। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এত বড় ঘটনার পর সে কীভাবে আবার বিদ্যালয়ে আসতে পারে?’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, ‘আমি বর্তমানে ছুটিতে ঢাকায় আছি। কোনো চিঠি এসেছে কি না, সে বিষয়ে অবগত নই।’

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাইকোর্টের রায়সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক আমাকে দেখিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘ঘটনার বিস্তারিত এখনো পাইনি। তবে হাইকোর্টের রায়ের কথা শুনেছি। ট্রেনিং শেষে এসে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিকটকে প্রেম, তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা থেকে জিল্লুর রহমান (৩৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমানের বাড়ি বগুড়ার কাহালু উপজেলার বামুজা গ্রামে। র‍্যাব-৫-এর একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব জানায়, প্রায় তিন মাস আগে টিকটকের মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে জিল্লুরের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। মোবাইল ফোনে কথা হয়। পরে জিল্লুর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে পাবনার ঈশ্বরদীতে ডাকেন। গত ৯ অক্টোবর রাতে ওই তরুণী ট্রেনে ঈশ্বরদী পৌঁছালে জিল্লুর তাঁকে মোটরসাইকেলে চাপিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরান। পরদিন (১০ অক্টোবর) দুপুরে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া বাজার এলাকায় একটি কক্ষ ভাড়া নেন এবং ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

র‍্যাব জানায়, পরে বিয়ের কথা বললে জিল্লুর কালক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে কাজি অফিসে নেওয়ার কথা বলে ওই তরুণীর মোবাইল ফোন ও ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার পর ভুক্তভোগী নিজেই ঈশ্বরদী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পর র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরপর মঙ্গলবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-৫-এর রাজশাহী সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত