Ajker Patrika

আমার স্বামী হার্টের রোগী, সন্তানেরা কাঁদছে: হাসপাতালে ডান্ডাবেড়ি পরা যুবদল নেতার স্ত্রী 

জাহিদ হাসান, যশোর
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০: ৩৬
আমার স্বামী হার্টের রোগী, সন্তানেরা কাঁদছে: হাসপাতালে ডান্ডাবেড়ি পরা যুবদল নেতার স্ত্রী 

‘আমার স্বামী শিক্ষক। মানুষ গড়ার কারিগর। আমার স্বামী হার্টের রোগী। বিনা অপরাধে আমার স্বামীকে জেলে রাখা হয়েছে।’ আজ সোমবার কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন যশোরে গ্রেপ্তার হওয়া যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধুর স্ত্রী নাহিদা আক্তার লাবণী। 

লাবণী বলেন, ‘পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি জেলে থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা খুবই অসহায় অবস্থায় রয়েছি। হার্টের রোগের কারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে ধীরে ধীরে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন মধু। তাঁর সন্তানেরা কাদছে এবং বাবার বাড়ি আসার অপেক্ষায় আছে। 
সন্তানেরা কাদছে আর বলছে, মা, আমাদের বাবা কবে আসবে? বাবার জন্য সন্তানেরা কান্নাকাটি করছে। সন্তানের কান্না কি দেখার কেউ নেই? ’ 

পেশায় গৃহিণী লাবণী বলেন, তাঁর স্বামী আমিনুর রহমান যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি ও সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের আমদাবাদ কলেজের প্রভাষক। একটি নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আমিনুর বর্তমান যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার অভ্যন্তরীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

গত ২৮ নভেম্বর ডান্ডাবেড়ি পরা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়ে, যা রীতিমতো ভাইরাল হয়। যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক আজকের পত্রিকাসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম। এরপর গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন  হাইকোর্টে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চের নজরে আনেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। 

এর পর অমিনুরের স্ত্রীর করা রিটের শুনানি শেষে আজ সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ আমিনুরকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার ঘটনায় রুল জারি করেছেন। অসুস্থ আমিনুরকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। 

সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে ১০ দিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

স্ত্রী, মা ও দুই সন্তান নিয়ে আমিনুরের সংসার। আমিনুরের মা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। ১৬ বছর বয়সী কিশোর ছেলে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মেয়েটি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। নাহিদা আক্তার লাবণী বলেন, ‌‘আমার স্বামী শিক্ষক। পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ যেদিন আমিনুররে ধরে নিয়ে যায়; সেই দিনও তিনি কলেজে উপস্থিত ছিলেন। সে কোনো নাশকতা করেনি। উনি যদি নাশকতা করত, তাহলে ভয়ে পালিয়ে বেড়াত গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে। বিনা দোষে আমার স্বামী আজ কারাগারে রয়েছে।’

তিনি বলেন,‌‌ ‘‌শিক্ষকতা পেশা ছাড়া আমার স্বামীর অন্য কোনো আয় উপার্জনের মাধ্যম নেই। সেই একমাত্র উপার্জনের ব্যক্তিটাই আজ কারাগারে। ফলে অসুস্থ শাশুড়ি আর দুই সন্তান নিয়ে অসহায় অবস্থায় আছি। মাঝেমধ্যে তার সহকর্মী ও বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছে। মাঝেমধ্যে তারা বাজারও করে দিয়েছে। কোনোমতে চালিয়ে যাচ্ছি। ‌

আজ সোমবার যশোর আদালতে তাঁর হাজিরা ছিল। কিন্তু তাঁকে আজ আদালতে আনা হয়নি। 

ভুক্তভোগীর পরিবার ও কারা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের পর আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৪টি মামলা করে পুলিশ। ২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমদাবাদ কলেজ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর কারাগারে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। 

এ সময়ও তাঁর পায়ের ডান্ডাবেড়ি খোলা হয়নি। এমনকি খাওয়ার সময়ও হাতকড়া খুলে দেয়নি পুলিশ। রোগীর সঙ্গে স্বজনদের ঠিকমতো দেখা করতেও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন স্বজনেরা। বর্তমানে তিনি এখন যশোর কারাগারে। 

সর্বশেষ পহেলা ডিসেম্বর কারাগারে আমিনুরের সঙ্গে কথা হয় স্ত্রী নাহিদা আক্তার লাবণীর সঙ্গে। সেই দিন আমিনুর তার স্ত্রীকে জানায়, ‘কারাগারে সে দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।’

কান্না জড়িত কন্ঠে আমিনুরের স্ত্রী নাহিদা আক্তার বলেন, ‌‘আমার স্বামী আগে থেকেই হার্টের রোগী। যশোর কারাগার থেকে হাসপাতালের শয্যায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খাওয়ার সময়ও তাঁর হাতকড়া খোলা হয়নি। এমনকি স্বজনদের সঙ্গে তাঁকে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি। আমি হাসপাতালেই ছিলাম। কিন্তু পুলিশ দেখা করতে দেয়নি। খাবার, ওষুধও ঠিকমতো দিতে দেয়নি। মাঝেমধ্যে পুলিশকে ঘুষ দিয়ে খাবার দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘‌আমার সন্তানেরা এখন ছোট। বাবার জন্য কান্নাকাটি করছে। বাবাকে দেখতে যাবে। দেখতেও পারছে না। শিক্ষক হয়ে বিনাদোষে কারাগারে। পারিবারিকভাবেও আমরা নানা টেনশনে। এদিকে ছেলেটার সামনে পরীক্ষা। বাবার টেনশনে সে পড়ায় মন বসাতে পারছে না। এখন কী করব, বুঝতে পারছি না। তাই আমরা আমি আশা করব, আদালত তাঁকে জামিন দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ করে দেবেন।’ 

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. শরিফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘‌আমিনুর কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আগের চেয়ে ভালো আছে।’  তিনি আরও বলেন, ‘‌আমিনুরকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসার ঘটনায় হাইকোর্টের রুলের বিষয়ে গণমাধ্যমে শুনেছি। এখনো কোনো চিঠি পাইনি। চিঠি বা নির্দেশ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আমিনুরের সহকর্মী যশোর কলেজশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইবাদত খান বলেন, ‘বাংলাদেশে আইন কাগজ–কলমে আছে, বাস্তবে নেই। আমিনুর যে রোগে অসুস্থ তাতে যেকোনো সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এর আগেও তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার ওপর একজন শিক্ষককে এমন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে রাখা দেশ ও জাতির জন্য খুবই লজ্জাজনক। তাঁর স্ত্রী-সন্তান অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামিনে মুক্তি পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা অপরাধে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জামিনে মুক্তি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যদি কোনো অপরাধে জড়ান, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রটানো গুজব প্রতিহত করতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর যদি তারা কোনো অপকর্ম করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু জামিন দেওয়া তো আমাদের হাতে নেই। আদালত হলো স্বাধীন, তাঁরা তাদের জামিন দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু জামিন দেওয়ার পরে সে যদি কোনো অপরাধ করে, তাহলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আপনাদের লেখালেখির কারণে গুজব অনেক কমেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যে মিথ্যা রটনা রটায়, এসব প্রতিরোধের মেইন মাধ্যম হচ্ছেন আপনারা। আপনারা যদি সত্যি কথা পত্রিকায় লেখেন; যদি আপনারা বলেন যে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যেটা রটনা করা হয়েছে, সেটি মিথ্যা; তাহলে বেশি কার্যকর হয়।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা এটি করে যাচ্ছেন। আমি আশা করব ভবিষ্যতেও করবেন। আপনারা যাঁরা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় আছেন, আপনারা যদি সত্যি ঘটনাটা প্রচার করেন, তবে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

উপদেষ্টা বলেন, গাজীপুর একটি শিল্পনগরী। এখানে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা ঘটে, মাদকেরও ব্যাপকতা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে আলোচনা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে বলা হয়েছে নির্বাচন যেন ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ও উৎসবমুখর হয়। নির্বাচনে কোনো ধরনের হুমকি নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের ঢাকা কর্মসূচি প্রতিহত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের ক্ষেত্রে কতগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে জনগণ। জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে, সেই সময় অনেকে অনেক কিছু চিন্তা করলেও কিছু করতে পারবে না। তারপর আছে যাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তাঁরা; তাঁদেরও অনেক কাজ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য। তারপর রয়েছে নির্বাচন কমিশন; তাদের একটা বড় ধরনের কাজ রয়ে গেছে। তারপর আছে আমাদের প্রশাসন; তাদেরও বড় ধরনের একটি কাজ রয়েছে। তারপর আরেকটা আছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী; তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতে জনগণ, প্রার্থী, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী—সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে কোনো বাধা থাকবে না।’

গাজীপুরে পুলিশের ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সত্য, এখানে পুলিশের সংখ্যা কম। ইতিমধ্যে কিছু অতিরিক্ত পুলিশ দেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও সদস্য যোগ করা হবে।

পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা অনেক কিছু বলবে। দুষ্কৃতকারীরা যাতে কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে না পারে, সে জন্য আমরা যত ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন নেব। এ জন্য আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. নাফিসা আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। এ ছাড়াও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. জাহিদুল হাসান, গাজীপুর সেনাক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক এবং জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যমুনা ও সচিবালয় এলাকায় সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫১
যমুনা ও সচিবালয় এলাকায় সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তি

প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও সচিবালয় এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত, মানববন্ধন, ধর্মঘটসহ শোভাযাত্রা আবারও নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।

‎বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ, ১৯৭৬-এর ২৯ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

‎ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও এর সংলগ্ন এলাকা, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকা, কারওয়ান বাজার, মৎস্য ভবন, অফিসার্স ক্লাব ও মিন্টো রোড-সংলগ্ন এলাকায় কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট বা শোভাযাত্রা করা যাবে না।

‎নিরাপত্তাজনিত কারণে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে আদালতে হাজির স্বামী

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করা রাজন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করা রাজন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জের মাধবপুরে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে আদালতে গিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন স্বামী। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে একই দিন সকালে অভিযুক্ত স্বামী রাজন আদালতে গিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। নিহত নারী শাপলা আক্তার (২৫)। নবীগঞ্জ উপজেলার সাতাহাইল এলাকার রাজন মিয়ার স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসার কাজে মাধবপুর থানার করড়া গ্রামে বসবাস করছিলেন ওই দম্পতি।

পুলিশ জানায়, মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের করড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন রাজন মিয়া ও শাপলা আক্তার দম্পতি। দাম্পত্য জীবনে পরকীয়া সন্দেহ ও পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এর জেরে গত সোমবার রাতে রাজন মিয়া তাঁর স্ত্রী শাপলা আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ পাশের একটি বালুর স্তূপে লুকিয়ে রাখেন।

পরদিন সকালে মঙ্গলবার রাজন নিজেই আদালতে উপস্থিত হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। আদালত তাৎক্ষণিকভাবে রাজনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মাধবপুর থানা-পুলিশকে ঘটনাস্থলে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে সন্ধ্যায় মাধবপুর থানা-পুলিশ করড়া গ্রামের ওই বালুর স্তূপ থেকে শাপলা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর রাজন মিয়াকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে মাধবপুর থানার ওসি শহিদ উল্ল্যা বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নাহিদ ইসলামের

প্রতিনিধি, (সিদ্ধিরগঞ্জ) নারায়ণগঞ্জ
আজ সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিন ভাই মৃত্যুর কয়েক দিন আগে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। এতেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা “জুলাই যোদ্ধাদের” সবারই নিরাপত্তা সংকট রয়েছে।’

বুধবার (৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় জুলাই যোদ্ধা সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি ওই সব মানুষের (জুলাই যোদ্ধা) পাশে আছে। তবে শুধু আমরাই নই, সরকার এবং সকল রাজনৈতিক দলের এই দায়িত্ব কাঁধে নিতে হবে। কারণ, এই মানুষগুলোর লড়াইয়ের ফলেই আমরা সফল হয়েছি এবং ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করেছি।’

নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী আহত জুলাই যোদ্ধাদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব এই অন্তর্বর্তী সরকারের থাকা সত্ত্বেও তারা সঠিকভাবে তা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্যই এখনো লাশের সারি বাড়ছে, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এবং শহীদের সংখ্যাও। গাজী সালাউদ্দিন ভাইও তাঁদের একজন। আমরা তাঁকে হারিয়েছি।’

নাহিদ ইসলাম সরকারের প্রতি দৃঢ় আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের যেসব আহত যোদ্ধা রয়েছেন, যাঁরা এখনো কাতরাচ্ছেন, তাঁদের সর্বাত্মক দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা যেন নিশ্চিত করা হয়, শুধু সাময়িক চিকিৎসা নয়।’

নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে আহত ও শহীদদের ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির প্রধান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের (আহত যোদ্ধা) যে স্বাস্থ্য সুবিধার কথা বলা হয়েছে, সেটা নিয়েও অনেক অভিযোগ আছে।’

নির্বাচন সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং আমাদের লক্ষ্য ৩০০ আসন। তবে গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় খালেদা জিয়ার সম্মানে আমরা তাঁর কোনো আসনে প্রার্থী দেব না। এ ছাড়া আমরা সকল আসনেই শাপলা কলি মার্কার প্রার্থী দেব। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান করেছি যে যারা গডফাদারগিরি করে, তারাই নির্বাচনে দাঁড়ায়—এই সংস্কৃতিকে আমরা চ্যালেঞ্জ করতে চাই। একজন এলাকার সাধারণ মানুষ, গ্রহণযোগ্য মানুষ, যাকে মানুষ কাছে পাবে এবং শিক্ষকদের আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই।’

বক্তব্য শেষে নাহিদ ইসলাম গাজী সালাউদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল-আমীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি তুহিন খান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত