*এনসিপির সমাবেশে হামলা *সংঘর্ষ *গুলি *আহত শতাধিক *দেশজুড়ে বিক্ষোভ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
*এনসিপির সমাবেশে হামলা *সংঘর্ষ *গুলি *আহত শতাধিক *দেশজুড়ে বিক্ষোভ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
২২ মিনিট আগে
ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২ ঘণ্টা আগে
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান।
২ ঘণ্টা আগেনীলফামারী প্রতিনিধি

অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নোটিশের সূত্রমতে, নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী টেক্সটাইল মাঠে সাড়ে ২৫ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে চীনা হাসপাতাল। হাসপাতাল স্থাপনে ইতিমধ্যে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও বিভিন্ন স্থাপনার ব্যয় প্রাক্কলন তৈরি করতে বলা হয়েছে।
চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপনে নীলফামারী জেলাকে নির্বাচিত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। তাঁদের মতে, হাসপাতালটির ফলে এলাকার স্বাস্থ্যসেবার মান যেমন বাড়বে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াবে এই জেলা। উন্নত চিকিৎসা নিতে এখন আর দেশের বাইরে যেতে হবে না।
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ বলেন, ‘চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপন নিয়ে সরকারের সিলেকশন যথাযথ। দারোয়ানী মাঠ সব দিক থেকে এগিয়ে অন্যান্য জায়গাগুলোর চেয়ে। সব সুযোগ-সুবিধা পাবে হাসপাতালটি স্থাপনের ক্ষেত্রে। ব্যবসায়িকভাবে আরও সমৃদ্ধ হলো আমাদের জেলা।’
এ ব্যাপারে নীলফামারীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউজ্জামান বলেন, ‘চিঠিটি আমরা পেয়েছি। ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন বিষয়ে আমরা ডিজিটাল সার্ভে শুরু করেছি। গণপূর্ত বিভাগ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।’
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান জানান, দারোয়ানী টেক্সটাইল এলাকায় ৬০ একরের বেশি সরকারি জায়গা রয়েছে। চীন সরকারের এক হাজার শয্যার হাসপাতাল স্থাপনে ২৫ একর জায়গা প্রয়োজন। ২৫ একর জায়গা হাসপাতালের জন্য দিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতাল স্থাপনে ব্যয় এবং ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, নীলফামারীতে হচ্ছে হাসপাতালটি।
প্রসঙ্গত, নিজ এলাকায় এই হাসপাতাল চেয়ে আন্দোলন হয়েছে রংপুরসহ কয়েকটি জেলায়।

অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নোটিশের সূত্রমতে, নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী টেক্সটাইল মাঠে সাড়ে ২৫ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে চীনা হাসপাতাল। হাসপাতাল স্থাপনে ইতিমধ্যে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও বিভিন্ন স্থাপনার ব্যয় প্রাক্কলন তৈরি করতে বলা হয়েছে।
চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপনে নীলফামারী জেলাকে নির্বাচিত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। তাঁদের মতে, হাসপাতালটির ফলে এলাকার স্বাস্থ্যসেবার মান যেমন বাড়বে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াবে এই জেলা। উন্নত চিকিৎসা নিতে এখন আর দেশের বাইরে যেতে হবে না।
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ বলেন, ‘চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপন নিয়ে সরকারের সিলেকশন যথাযথ। দারোয়ানী মাঠ সব দিক থেকে এগিয়ে অন্যান্য জায়গাগুলোর চেয়ে। সব সুযোগ-সুবিধা পাবে হাসপাতালটি স্থাপনের ক্ষেত্রে। ব্যবসায়িকভাবে আরও সমৃদ্ধ হলো আমাদের জেলা।’
এ ব্যাপারে নীলফামারীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউজ্জামান বলেন, ‘চিঠিটি আমরা পেয়েছি। ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন বিষয়ে আমরা ডিজিটাল সার্ভে শুরু করেছি। গণপূর্ত বিভাগ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।’
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান জানান, দারোয়ানী টেক্সটাইল এলাকায় ৬০ একরের বেশি সরকারি জায়গা রয়েছে। চীন সরকারের এক হাজার শয্যার হাসপাতাল স্থাপনে ২৫ একর জায়গা প্রয়োজন। ২৫ একর জায়গা হাসপাতালের জন্য দিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতাল স্থাপনে ব্যয় এবং ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, নীলফামারীতে হচ্ছে হাসপাতালটি।
প্রসঙ্গত, নিজ এলাকায় এই হাসপাতাল চেয়ে আন্দোলন হয়েছে রংপুরসহ কয়েকটি জেলায়।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২ ঘণ্টা আগে
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান।
২ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার রুমা নগরীর মালগুদাম এলাকার অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী আবু তাহেলের মেয়ে। তাঁর স্বামী সুলতান মাহমুদ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেসমিন আরা রুমা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে গত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার রুমা নগরীর মালগুদাম এলাকার অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী আবু তাহেলের মেয়ে। তাঁর স্বামী সুলতান মাহমুদ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেসমিন আরা রুমা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে গত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
২২ মিনিট আগে
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান।
২ ঘণ্টা আগেনালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের জহিরুল ইসলামের দুই ছেলে উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা (৩৫) ও ফরহাদ হোসেন (২৭)।
পুলিশ জানায়, ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বারোমারী বাজার এলাকার চেল্লাখালী নদীর পশ্চিমপাড়ে উত্তর বাতকুচি ফরেস্ট অফিসসংলগ্ন বাইতুল নূর জামে মসজিদে ওই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
সেদিন ফরহাদ, উমর ফারুক ও রুবেল নামে তিনজন মদ্যপ অবস্থায় মসজিদে ঢুকে ইমাম শফিকুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ থেকে এই মসজিদে আজান দেওয়া যাবে না, আমাদের অনুমতি ছাড়া আর আজান হবে না।’
ইমাম প্রতিবাদ করলে তাঁরা তাঁকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে ইমাম পালিয়ে গেলে হামলাকারীরা মসজিদে ঢুকে মাইক সেট, বৈদ্যুতিক বোর্ড, টিনের বেড়া ও অন্য সামগ্রী ভাঙচুর করেন।
এ সময় মুসল্লি হাবিবুর রহমান ও কাজল মিয়া বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। পরে গ্রামবাসী আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
ঘটনার পর মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের জহিরুল ইসলামের দুই ছেলে উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা (৩৫) ও ফরহাদ হোসেন (২৭)।
পুলিশ জানায়, ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বারোমারী বাজার এলাকার চেল্লাখালী নদীর পশ্চিমপাড়ে উত্তর বাতকুচি ফরেস্ট অফিসসংলগ্ন বাইতুল নূর জামে মসজিদে ওই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
সেদিন ফরহাদ, উমর ফারুক ও রুবেল নামে তিনজন মদ্যপ অবস্থায় মসজিদে ঢুকে ইমাম শফিকুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ থেকে এই মসজিদে আজান দেওয়া যাবে না, আমাদের অনুমতি ছাড়া আর আজান হবে না।’
ইমাম প্রতিবাদ করলে তাঁরা তাঁকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে ইমাম পালিয়ে গেলে হামলাকারীরা মসজিদে ঢুকে মাইক সেট, বৈদ্যুতিক বোর্ড, টিনের বেড়া ও অন্য সামগ্রী ভাঙচুর করেন।
এ সময় মুসল্লি হাবিবুর রহমান ও কাজল মিয়া বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। পরে গ্রামবাসী আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
ঘটনার পর মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
২২ মিনিট আগে
ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২ ঘণ্টা আগে
এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান।
২ ঘণ্টা আগেগাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুর মহানগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত যুবকের নাম মারুফ (২২)। তিনি মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। আহত যুবকের নাম জামিল (২৪)। তাঁরা পরস্পর বন্ধু।
পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবি (২৪) ও ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেন (১৮)। তাঁরা এলাকায় কিশোর গ্যাং হিসেবে পরিচিত হলেও সবাই তরুণ বয়সী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকার আক্তারের বাড়ির সামনে এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় এক দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই বন্ধুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে তারুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মারুফ মারা গেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে জামিলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত জামিলের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ ৮-১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, আহত জামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।
জিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে জানান, মারুফ হত্যাকাণ্ডে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। এজাহারে মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে প্রধান আসামি করা হয়।
জাহিদুল হাসান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে জিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে আজ সকালে রবিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর একটি টিম ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেনকে গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গাজীপুর মহানগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত যুবকের নাম মারুফ (২২)। তিনি মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। আহত যুবকের নাম জামিল (২৪)। তাঁরা পরস্পর বন্ধু।
পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবি (২৪) ও ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেন (১৮)। তাঁরা এলাকায় কিশোর গ্যাং হিসেবে পরিচিত হলেও সবাই তরুণ বয়সী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকার আক্তারের বাড়ির সামনে এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় এক দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই বন্ধুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে তারুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মারুফ মারা গেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে জামিলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত জামিলের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ ৮-১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, আহত জামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।
জিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে জানান, মারুফ হত্যাকাণ্ডে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। এজাহারে মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে প্রধান আসামি করা হয়।
জাহিদুল হাসান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে জিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে আজ সকালে রবিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর একটি টিম ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেনকে গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
২২ মিনিট আগে
ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২ ঘণ্টা আগে
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে