Ajker Patrika

প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য রিকশাচালক বাবার হুইলচেয়ারের আকুতি, সাড়া মেলেনি কারও

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
প্রতিবন্ধী শিশু মো. মনিরুজ্জামান মনির। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবন্ধী শিশু মো. মনিরুজ্জামান মনির। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনিরাম কাজী গ্রামে ১৪ বছর বয়সী শিশু মো. মনিরুজ্জামান মনির। জন্মের পর থেকে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না সে। শুয়ে থাকাই তার নিয়তি। বসতে বা দাঁড়াতে পারে না, বলতে পারে না কথা। এমনকি প্রস্রাব-পায়খানা হলেও তা বুঝতে পারে না। খাওয়াতেও হয় তুলে। ছেলের জন্য একটি হুইলচেয়ারের আকুতি জানিয়েছেন তার বাবা রিকশাচালক মো. আলতাব হোসেন। কিন্তু এখনো কেউ সাড়া দেননি।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, শিশুটি শোয়ারঘরের মাটিতে বস্তা দিয়ে বানানো বিছানায় শুয়ে আছে। টিনের চাল-বেড়ার ছোট ঘরে প্রচণ্ড গরম। অসুস্থ মা মল্লিকা বেগম একা ছেলেকে ঘরের বাইরে নিতে পারেন না। কারও সাহায্যের অপেক্ষায় থাকেন। শিশুটি নড়াচড়াও করতে পারে না।

বাবা আলতাব হোসেন বলেন, ‘জন্মের পর অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কেউ ছেলেকে ভালো করতে পারেনি। ডাক্তাররা বলেছেন, জন্মের সময় পুষ্টির অভাব ছিল। গরিব মানুষ আমি, রিকশা টেনে সংসার চালাই। পুষ্টির কথা কী করে বুঝব?’

আলতাব আরও বলেন, ‘মনিরকে এখনো প্রতিদিন ওষুধ খাওয়াতে হয়। দুধ আর ওষুধ মিলে মাসে প্রায় তিন হাজার টাকা লাগে। ওষুধ বন্ধ করলে খিঁচুনি হয়, কান্না শুরু হয়, হাত-পা শক্ত হয়ে যায়। তাঁর ২ বছরের আরেকটি ছেলে আছে। সাত শতক জমি ছাড়া আর কিছু নেই। ঢাকায় প্রায় ৩০ বছর ধরে ভাড়ায় রিকশা চালাই। ছেলে ও সংসারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। আগের মতো শরীরও আর সায় দেয় না।’

হুইলচেয়ারের আকুতি জানিয়ে আলতাব হোসেন বলেন, ‘মেম্বার-চেয়ারম্যানসহ সমাজের অনেকের কাছে বলেছি। সবাই জানেন, আমার ছেলে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি।’ যত দিন যাচ্ছে, ওর ওজন বাড়ছে। মা-বাবার পক্ষে ওকে বহন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহাবুবুর রহমান ইজারাদার বলেন, ‘এ ধরনের সহায়তার সুযোগ আমাদের নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি, কোনোভাবে ব্যবস্থা করা যায় কি না।’ বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার বলেন, ‘পরিষদ থেকে হুইলচেয়ার দেওয়ার সুযোগ নেই। সমাজসেবা অফিসে আবেদন দিয়ে আমাকে একটি কপি দিলে আমি সহযোগিতা করব।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান খানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘একটা আবেদন দিলে হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুর্গাপূজায় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে বিএনপি নেতার বিতর্কিত মন্তব্য

গ্যালারিতে বসে দেখার দিন শেষ, আমরা এখন নিজে খেলব: প্রধান উপদেষ্টা

হাজি সেলিমের আজিমপুরের বাড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান, ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার

ভারত-পাকিস্তান ‘হাইভোল্টেজ’ ফাইনাল নিয়ে সুপার কম্পিউটার কী বলে

ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই কিস্তিতে মোবাইল ফোন কেনার সুযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত