Ajker Patrika

শিক্ষার্থীর সংকট সরকারি স্কুলে

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ০০
একই কক্ষে পাশাপাশি দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস। সম্প্রতি গাইবান্ধা শহরের কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একই কক্ষে পাশাপাশি দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস। সম্প্রতি গাইবান্ধা শহরের কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধা শহরের ভিএইড সড়কে অবস্থিত কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৬৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির আশপাশে ঘনবসতি। সে হিসেবে শ্রেণিকক্ষগুলো শিক্ষার্থীতে ঠাসা থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে এই বিদ্যালয়ে।

শ্রেণি অনুযায়ী শিক্ষার্থীর সংখ্যা হলো শিশু শ্রেণিতে ১১, প্রথম শ্রেণিতে ৭, দ্বিতীয়তে ৪, তৃতীয়তে ৫, চতুর্থে ৪ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৫ জন। অথচ স্কুলটিতে ৬ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারী আছেন। শিক্ষার্থী প্রায় শূন্য হয়ে গেলেও শিক্ষকের সংকট নেই। তবে শিক্ষকেরা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি নন। তাঁদের ভাষ্য, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস অবগত আছে, এ বিষয়ে শিক্ষকদের কিছু করার নেই।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের ১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি আছে ৩ হাজার ৭০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী ২ হাজার ৫০০। তার মধ্যে গোটা ছয়েক স্কুল ছাড়া বাকিগুলোতে শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। তবে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছেন।

অন্যদিকে শহরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিপরীত চিত্র। ১২টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। উপস্থিতির হার ৯৮ শতাংশ। তার মধ্যে শাহ আহম্মেদ উদ্দিন শিশুনিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় ২ হাজার ১০০। জিইউকে রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০০ শিক্ষার্থী। আর এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজে একই পর্যায়ে শিক্ষার্থী ৫২৬ জন।

সম্প্রতি কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির পর্যাপ্ত অবকাঠামো আছে। অফিসরুমসহ মোট সাতটি কক্ষ। এর মধ্যে ছয়টি শ্রেণিকক্ষ। তার পরও দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একই কক্ষে পাশাপাশি বসিয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন দুই শিক্ষক। অনিমা বেগম পড়াচ্ছেন দ্বিতীয় শ্রেণির গণিত আর রাজিয়া সুলতানা পড়াচ্ছেন তৃতীয় শ্রেণির ইংরেজি। জানতে চাইলে শিক্ষকেরা বলেন, ‘ক্লাসে শিক্ষার্থী একেবারে কম, তাই দুজন মিলে পাশাপাশি ক্লাস নিচ্ছি।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, ৬৩ বছর ধরে বিদ্যালয়টি কখনো ভালো ফলাফল করতে পারেনি। অথচ শিক্ষকেরা কর্তাব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করে ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে চাকরি করছেন। স্থানীয় হুমায়ুন সরকার বলেন, ‘অনিয়মের পাশাপাশি পড়াশোনার পরিবেশও নেই। তাই কেউ ভর্তি করে না। শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা সব জেনেও চুপ।’ স্থানীয়রা বলছেন, তাঁরা পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন; কিন্তু ফল মেলেনি। শিক্ষার্থী না পাওয়ায় তাঁরাও হতাশ।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. ওয়াহিদা শিরিন বলেন, ‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন। শিক্ষার্থী বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’ একই কক্ষে দুই বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার প্রশ্নে অসুস্থতার কথা বলে তিনি এড়িয়ে যান।

একইভাবে পিটিআই-সংলগ্ন পরীক্ষণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ২০৩ শিক্ষার্থী। তার মধ্যে নিয়মিত ক্লাস করে ১৬০ জন। উত্তরপাড়া ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ১৬০, নিয়মিত ১২০ জন। এভাবে শহরের বেশির ভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একই অবস্থা। পর্যাপ্ত শিক্ষক আছেন; কিন্তু শিক্ষার্থী নেই।

অভিভাবকেরা বলছেন, তাঁরা সরকারি বিদ্যালয়ের চেয়ে সন্তানের ভর্তিতে বেশি ঝুঁকছেন কিন্ডারগার্টেন ও এনজিও পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, প্রচার-প্রচারণা ও নামের কারণে অভিভাবকেরা সেখানে সন্তান ভর্তি করছেন।

আসাদুজ্জামান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরে এল নাজমা শাকিল বলেন, ‘শিক্ষার্থী না পাওয়া আমাদের ব্যর্থতা। অভিভাবকদের বোঝাতে পারিনি যে, সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেও ভালো ফল করা যায়। অভিভাবকদের অনীহার কারণে সরকারি বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীর সংকটে ভুগছে।’

অভিভাবক ঈসমাইল হোসেন বলেন, ‘সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান খারাপ। শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস নেন না। তাই আমার মতো অনেক অভিভাবক সন্তানকে সরকারি স্কুলে পড়াতে চান না।’

জানতে চাইলে পলাশবাড়ী আদর্শ কলেজের অধ্যাপক ফেরদৌস আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থী ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারি বিদ্যালয়গুলোকে প্রমাণ করতে হবে, তারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভালো ফল করতে পারে। অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে অযথা সময় কাটান, এসব বন্ধ করতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লক্ষ্মণ কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে শিক্ষার্থীর সংকট রয়েছে। জেলাসহ উপজেলা পর্যায়ে যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কম, সেখানে ভর্তির সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুমিল্লা থেকে বগুড়ায় গিয়ে ককটেল বানানোর সময় বিস্ফোরণ, আহত অবস্থায় আটক ১

বগুড়া প্রতিনিধি
আহত অবস্থায় আটক আতাউর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত অবস্থায় আটক আতাউর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার গাবতলীতে ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে আহত এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে পুলিশ হেফাজতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইটালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ককটেল বিস্ফোরণে আহত ব্যক্তি আতাউর রহমান (৩৫) কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদেরচর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, ছোট ইটালী গ্রামের মুক্তার হোসেনের স্ত্রী নাসিমা মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন। ওই বাড়িতে মুক্তার হোসেন ও তাঁর প্রতিবন্ধী মা বসবাস করেন। মুক্তার হোসেনের বোনের স্বামী পার্শ্ববর্তী মাঝবাড়ি গ্রামের বাদশা মিয়া আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তাঁরা কুমিল্লা থেকে আতাউর রহমানকে ডেকে এনে বাড়ির একটি ঘরে ককটেল বানাচ্ছিলেন। তিনটি ককটেল বানানোর পর আরেকটি বানানোর সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় লোকজন বিস্ফোরণের শব্দ শুনে ওই বাড়িতে গেলে বাদশা মিয়া ও মুক্তার হোসেন পালিয়ে যান। তাঁরা আতাউর রহমানকে ডান হাত জখম অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাঁকে হাসপাতালে নেয়।

ওসি বলেন, আহত অবস্থায় আটক আতাউর রহমান জানিয়েছেন, বাদশা মিয়া তাঁকে ককটেল বানানোর জন্য কুমিল্লা থেকে ডেকে আনেন। ডাকাতির সময় তাঁরা সঙ্গে ককটেল রাখেন। ডাকাতিকালে জনগণের ধাওয়ার মুখে পড়লে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালাতে সহজ হয়। বাদশা মিয়ার নামে গাবতলী থানায় একটি ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। আতাউর রহমানের নামে কুমিল্লাতে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নামে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার

চরফ্যাশন সংবাদদাতাভোলা প্রতিনিধি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোলার চরফ্যাশনে মো. তামিম (১৫) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ডোবা থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার দুলারহাট থানার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। পরিবারের অভিযোগ, কিশোরের দুই সৎচাচা এই হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটিয়েছে।

ভুক্তভোগী কিশোর ওই ওয়ার্ডের মো. মোস্তফার ছেলে। সে আবুবকরপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। ডোবা থেকে উদ্ধারের পর রাতেই তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তামিমের মা আরজু বেগম জানান, তাঁর ছেলের দুই চাচা শেখ ফরিদ ও খোকন তাঁর স্বামীর সৎভাই। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে সৎভাইদের বিরোধ রয়েছে। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে ঢাকায় থাকেন। মা ও ছেলে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। গত ২৭ অক্টোবর ছেলেকে রেখে তিনি তাঁর বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। গত বৃহস্পতিবার সুপারি চুরির অপবাদ দিয়ে শেখ ফরিদ ও খোকন তাঁর ছেলেকে মারধর করেন। এ খবর শুনে আরজু তাঁর বাবার বাড়ি থেকে ফিরে আসেন। ছেলের বরাত দিয়ে আরজু বেগম আরও জানান, গতকাল মাগরিবের নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে শেখ ফরিদসহ আরও চারজন লোক তাঁর ছেলের পথ আটকায়। এ সময় শেখ ফরিদ তাঁর ছেলের মাথায় আঘাতসহ মারধর করেন। তাঁদের মারধরে তামিম অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর তার হাত পা-বেঁধে পাশের একটি ডোবায় ফেলে দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর তামিমের জ্ঞান ফিরে এলে তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শেখ ফরিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর ভাই খোকন বলেন, ‘তামিম আমার ভাতিজা। তাদের সঙ্গে পারিবারিক ঝামেলা রয়েছে। তবে তামিমকে ডোবায় ফেলার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’

দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ ইফতেখার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তামিম নামের এক মাদ্রাসাছাত্রকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ডোবা থেকে উদ্ধার করার খবর শুনেছি। ছেলেটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ডেন্টাল ইউনিটের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে শহরের হেতেম খাঁ এলাকায় রামেকের ডেন্টাল ইউনিটের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহী জেনারেল হাসপাতালে ডেন্টাল ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এখানে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, সরঞ্জাম, জনবলসহ সব সুবিধা বিদ্যমান। তাই এই বিদ্যমান অবকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে রাজশাহীতে পৃথক একটি ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত উদ্যোগ হবে।

রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত ডেন্টাল শিক্ষা ও স্থানীয় জনগণের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত রাজশাহী ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা প্রয়োজন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ডেন্টাল ইউনিটের লেকচারার ডা. মো. মাহফুজুর রহমান রাজ, ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. নাসরুল্লাহ শেখ, শিক্ষার্থী গোলাম মর্তুজা বাঁধন, পরিতোষ রায় প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গণপিটুনিতে নিহত সেই রূপলালের মেয়ের বিয়ে আজ

রংপুর প্রতিনিধি
রূপলালের বাড়ির সামনে বিয়ের গেট সাজানো হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রূপলালের বাড়ির সামনে বিয়ের গেট সাজানো হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন মাস আগে মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক করার জন্য পথ ভুলে যাওয়া ভাগনি জামাইকে এগিয়ে আনতে গিয়ে মবের শিকার হয়ে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান রূপলাল রবিদাস। সেই শোক মনে নিয়েই আজ রোববার তাঁর বড় মেয়ের বিয়ে হচ্ছে।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামে রূপলালের বাড়িতে আজ সকাল থেকে চলছে ব্যস্ততা। সড়কে রঙিন গেট, উঠানে বাঁশের মাচা, মণ্ডপ, রঙিন কাপড়ের প্যান্ডেল, ধোঁয়া উঠছে রান্নার হাঁড়ি থেকে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়, আনন্দঘন উৎসব, কিন্তু একটু কাছে গেলে বোঝা যায়—এই উৎসবের ভেতর পরিবারের সদস্যদের মনে লুকিয়ে রয়েছে রূপলালকে হারানোর গভীর ব্যথা।

রূপলালের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত ১০ আগস্ট রূপলালের বড় মেয়ে নুপুর রানীর বিয়ের দিন ঠিক করার কথা ছিল মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে। এ জন্য ৯ আগস্ট মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে আত্মীয় রূপলাল দাসের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন ভাগনি জামাই প্রদীপ দাস। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় এসে রূপলালকে ফোন করেন। রূপলাল সেখানে যান। তাঁরা দুজনে ভ্যানে চড়ে রূপলালের বাড়ি ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যান চোর সন্দেহে তাঁদের দুজনকে থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে মব তৈরি করে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রূপলালের স্ত্রী হত্যা মামলা করলে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

বাবার মৃত্যুর পর নুপুর রানীর বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। রূপলালকে হারিয়ে পুরো পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। তবে রূপলালের পরিবার জানিয়েছে, মেয়ের বিয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ, তারাগঞ্জ হাটের ব্যবসায়ীরা ৭১ হাজার, উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ৭৫ হাজার, একটি সংগঠন থেকে এক লাখ টাকা টাকা পেয়েছে তারা। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন ব্যক্তি রূপলালের ছেলে জয় রবিদাস ও ছোট মেয়ে রুপার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমেও শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ওই টাকায় তারা পড়াশোনা করছে।

রূপলালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের ভেতরে কনে নুপুর রবিদাস বসে আছেন বিয়ের শাড়িতে। মুখে বিয়ের সাজ, কিন্তু চোখ দুটো লাল। পাশে মা ভারতী রানী নীরবে অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতি সামলাচ্ছেন।

রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বলেন, ‘বেটির বিয়া ঠিক করার জন্য জামাইকে আনতে যাওয়া আমার নির্দোষ স্বামীক মিথ্যা অপবাদ দিয়া মারি ফেলছে। আজ বেটির বিয়া, ওর বাপ নাই চিন্তা করতেই বুকটা ফাটি যাওছে (যাচ্ছে)। ওমাক (রূপলাল) ছাড়া পুরা বাড়ি ফাঁকা ফাঁকা লাগেছে। কষ্টে ভেতরটা ভাঙি যাওছে।’

নুপুর বলেন, ‘বাবার খুব ইচ্ছে ছিল ধুমধাম আয়োজন করে আমার বিয়ে দেবে। এখন সব আয়োজন হচ্ছে, কিন্তু আমার মনে কেবল বাবার মুখটা ভাসে। বাবা নেই, কে আমাকে আশীর্বাদ দিবে। হত্যাকারীরা এখনো ধরা পড়েনি, হাটবাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার বাবাকে যারা মেরেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, ‘রূপলালের মেয়ের বিয়ের জন্য এক লাখ টাকা দেওয়া হযেছে। ছেলে ও ছোট মেয়ের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তারাগঞ্জ বাজারে রূপলালের ছেলের জন্য একটি দোকান দেওয়া হবে। আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত