Ajker Patrika

বাবার জন্য ছোট্ট নূহার অপেক্ষা আর ফুরাবে না

আশিকুর রিমেল
আপডেট : ২৮ জুন ২০২১, ২০: ০০
বাবার জন্য ছোট্ট নূহার অপেক্ষা আর ফুরাবে না

ঢাকা: বাবার আদরটাই শুধু বোঝে দুই বছরের নূহা। প্রতিদিন সেই আদরের অপেক্ষায় থাকে। রোববারও দিনের শুরুতে বাবার কোলে কোলেই ছিল নূহা। দিন শেষে বাবা ফিরবেন, সেই অপেক্ষায় ছিল সে। কিন্তু বাবা আর ফেরেননি। নূহা দিনের শেষভাগেই চিরতরে হারিয়ে ফেলেছে বাবার কোল। মৃত্যু বোঝার বয়স হয়নি তার। কিছুই বুঝতে পারছে না। বাবার জন্য শেষ হচ্ছে না তার অপেক্ষা।

রোববার রাতে মগবাজারের ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত সাত জনের মধ্যে একজন নূহার বাবা রুহুল আমিন নোমান। রাজধানীর শাহজাহানপুরে পরিবার নিয়ে থাকতেন নোমান। চাকরি করতেন মগবাজারের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে। দুর্ঘটনার দিন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অফিসের কাজে। বাইরের কাজ শেষ করে রাতে আবার একটা জরুরি কাজে বাসে করে অফিসে ফিরছিলেন। নোমান যখন কাকরাইলে, তখন সবশেষ কথা হয় তাঁর সহকর্মী খাদিমের সঙ্গে। এর আধা ঘণ্টা পরই ঘটে বিস্ফোরণ। এরপর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। রাতভর পরিবারের পাশাপাশি বন্ধু-স্বজনেরা এখানে–ওখানে তাঁর সন্ধান পেতে চেষ্টা চালান। অবশেষে সোমবার সকালে পাওয়া যায় নোমানকে।

নোমানের ভগ্নিপতি মাহফুজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, রোববার রাতে বাসায় ফিরে না আসায় নোমানের সন্ধান করা হয়। রাতভর হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে খোঁজা হয় তাঁকে। পরিবারের পাশাপাশি তাঁর বন্ধু ও সহকর্মীরাও খুঁজতে থাকেন। আজ সোমবার সকালে টিভিতে খবর দেখে রমনা থানায় গিয়ে খোঁজ পাওয়া যায় তাঁর। সেখানে কিছু কাগজপত্রের পাশাপাশি নোমানের ব্যবহৃত সেলফোনটিও পাওয়া যায়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন স্বজনেরা।

বিস্ফোরণের আগে নোমানের সঙ্গে সবশেষ কথা হয় তাঁর সহকর্মী খাদিমের। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, নোমানের সঙ্গে কথা বলার আধা ঘণ্টা পরেই দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যায় তাঁর। তখন থেকেই তাঁকে নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে, হয়তো দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে। অবশেষে সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো।

মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত রুহুল আমিন নোমানের (৩২) বাড়ি জয়পুরহাটে। বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। চাকরির কাজে প্রায়ই তাঁকে অফিসের বাইরে যেতে হতো। দুর্ঘটনার দিনও অফিসের কাজে বাইরে ছিলেন। সেখান থেকেই অফিসে ফিরছিলেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন, নোমানের লাশ নিয়ে যাওয়া হবে জয়পুরহাটে। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত