Ajker Patrika

রাজধানীতে তালা ভেঙে দম্পতির মরদেহ উদ্ধার, পাশে চিরকুট

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ০১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর ওয়ারীতে একটি বাসা থেকে মোহাম্মদ মুঈদ (৩২) ও আইরিন আক্তার রত্না (৩৫) নামে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে ওয়ারী থানার ওয়ার স্ট্রিটের জমজম টাওয়ারের পাঁচতলার একটি বাসা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ

ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাউছার আহম্মদ বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে ওই বাসা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। স্বামী মুঈদের মরদেহ পচনশীল ছিল। একই বিছানায় তাঁর স্ত্রী রত্নাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সিআইডি আলামত সংগ্রহের পর মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

এসআই আরও বলেন, ওই বাসায় স্বামী স্ত্রী দুজনই থাকত। কারও সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না। ছুটা গৃহকর্মী কাজ করে যেত। দুই মাস ধরে বেতন দিতে পারেননি। রোজার ঈদের পরে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বেতন নিতে এসে অনেকক্ষণ কলিং বেল টিপেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চলে যায় গৃহকর্মী। এরপর শনিবার বিকেলে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে ওই বাসায় আবার যায় গৃহকর্মী। অনেক চেষ্টার পর সাড়া-শব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে পুলিশ। ভেতরের দরজাগুলো খোলা অবস্থায় ছিল।

এসআই কাউছার বলেন, মরদেহ দুটির পাশে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা, ‘বিয়ের পর আমার বাবা-মা, স্বামীর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নাই। আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকায় কোনো সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন। আমার এবং আমার স্বামীর বাড়িতে নেওয়ার দরকার নাই।’

এসআই জানান, স্বামী মুঈদ দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। স্ত্রী রত্না বাইরে কোথাও বের হতেন না। ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী চার-পাঁচদিন আগে মারা গেছেন। এই শোকে স্ত্রী কোনো কিছু সেবন করে আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

মৃত মুঈদের বড় ভাই ডা. মুগলী সানি বলেন, ‘২০০৯ সালে বিয়ে হয় তাঁদের। তাঁদের কোনো সন্তান ছিল না। তবে গত ২০২১ সালের পর তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ নাই। ঢাকার কোথায় থাকত আমাদের জানা ছিল না। তার ভাইয়ের আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশের মাধ্যমে তাদের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারি। তবে কীভাবে মারা গেছে তা আমাদের জানা নেই।’

সানি আরও জানান, তাঁদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার আড়াইকান্দি গ্রামে। বাবার নাম মো. মুসা। মৃত রত্নার বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। বাবার নাম জয়নাল আবেদিন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৮) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।

আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ করেছে। অভিযুক্ত বাবু মিয়া (২৪) ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার শুনই ইউনিয়নের ইছাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত বাবু মিয়া উপজেলার শুনই ইউনিয়নের ইছাইল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নান্দু মিয়ার ছেলে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কিশোরীর বাবা মসজিদে ছিলেন আর মা গিয়েছিলেন গোসল করতে। এই সুযোগে বাবু মিয়া প্রলোভন দেখিয়ে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী মেয়েটিকে একটি নির্জন ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলমাঠের পানি সেচে মাছ ধরলেন স্থানীয়রা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৫০
মাছ ধরছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ ধরছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দূর থেকে দেখে মনে হবে, এটা একটা জলাশয় বা পুকুর আর সেখানে মাছ ধরছে স্থানীয় লোকজন ও কিছু শিক্ষার্থী। তবে নিকটে গেলে দেখা যাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। এটা পুকুর বা জলাশয় নয়, জলাবদ্ধ মাঠটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের। আজ রোববার মেশিন দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে মাছ ধরে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কারণে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় এখানে স্থানীয় কয়েকজন মাছ ছেড়েছিলেন।

এর আগে গত ১৯ অক্টোবর আজকের পত্রিকায় এ মাঠের জলাবদ্ধতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাজিম হোসেন বলে, ‘আমার বন্ধুরাসহ অনেকে এখানে মাছ দিয়েছিল। আজ সবাই মাছ ধরতে এসেছে। অনেক লোকজন মাছ ধরছে।’

নিশান আহমেদ নামের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ‘দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা থাকার কারণে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে এখানে মাছ দিয়েছিল। আজ পানি নিষ্কাশন করে সবাই মিলে মাছ ধরছে। অনেক মজা হচ্ছে। অনেকেই মাছ ধরতে আসছে। সবাই আনন্দের সঙ্গে মাছ ধরছে। আমি দেখতে এসেছি।’

স্থানীয় মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরাও মাছ ধরছি। এখানে অনেক মাছ দেওয়া আছে। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা ছিল, তাই এখানে মাছ দেওয়া হয়েছিল। আজ সেই মাছ ধরা হচ্ছে।’

মাছ ধরতে আসা মো. রতন আলী বলেন, বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজমাঠে জলাবদ্ধতার কারণে টাকি মাছসহ কয়েক প্রকার দেশীয় মাছ দেওয়া হয়। আজ পানি সেচে সেই মাছ ধরা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও পানিতে নেমে মাছ ধরছে।

বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাজ্জাদুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কারণে সম্ভবত স্থানীয় কয়েকজন বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে মাছ দিয়েছিলেন। সেই মাছ আজ তাঁরা ধরে নিয়ে যাচ্ছেন।

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, সে বিষয়ে কিছুই জানি না। জেলা পরিষদ থেকে যে দুই লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা, সেটা এখনো পাইনি। তবে কয়েক দিন আগে জেলা পরিষদ থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসেছিলেন। তিনি বলেছেন পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ পদ্ধতি করতে গেলে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের অনুমোদন লাগবে।’

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাংনী উপজেলার বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে দীর্ঘদিন যে জলাবদ্ধতা রয়েছে, সে বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা রয়েছে। আমরা বিষয়টি অতি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এ ছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষের যে নিজস্ব আয় রয়েছে, সেখান থেকেও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। তা ছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদ্মফুল তুলতে গিয়ে চার বোনের মৃত্যু

মেহেরপুর প্রতিনিধি
একই পরিবারের চার বোনের মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
একই পরিবারের চার বোনের মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুর সদর উপজেলায় বিলে পদ্মফুল তুলতে গিয়ে একই পরিবারের চার শিশু-কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার রাজনগর গ্রামে মসুরিভাজা বিল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত চার বোন হলো ফাতেমা (১৪), মিম (১৪), রাফিয়া (১০) ও আলসিয়া (১০)। তারা রাজনগর গ্রামের দুই ভাই আব্দুস সামাদ ও শাহারুল ইসলামের চার সন্তান। এর মধ্যে ফাতেমা ও রাফিয়া আব্দুস সামাদের মেয়ে এবং মিম ও আলসিয়া শাহারুল ইসলামের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে চার বোন একসঙ্গে মসুরিভাজা বিলে শাপলা তুলতে যায়। দীর্ঘ সময়েও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজ শুরু করেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে চার বোনের লাশ ভেসে উঠতে দেখেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনার পর গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাউদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে ৩ প্রতিষ্ঠানমালিককে জরিমানা

চাঁদপুর প্রতিনিধি
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুর শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র পুরান বাজারে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় মূল্যতালিকা না থাকা ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ছাড়া শিশুখাদ্য বিক্রি করায় তিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিককে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আজ রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে আনসার বাহিনীর সহযোগিতায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান অভিযান পরিচালনা করেন।

আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, অভিযান পরিচালনাকালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে মূল্যতালিকা না থাকায় লোকনাথ স্টোরের মালিককে ২ হাজার টাকা, একই অপরাধে মেসার্স শুকতারা ট্রেডার্সের মালিককে ৫ হাজার টাকা এবং উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ছাড়া শিশুখাদ্য বিক্রয়ের অপরাধে নাহিদ স্টোরের মালিককে ৫ হাজার টাকাসহ মোট ১২ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা, জেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি দল সার্বিক সহায়তা দেয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত