Ajker Patrika

ইতিহাস নির্মাতারা রাজনীতির ঊর্ধ্বে: ঢাবি উপাচার্য

ঢাবি সংবাদদাতা
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ১৩: ৫১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।

১৯৭১ সালের ২ মার্চে আ স ম আব্দুর রবের জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অবদান উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ইতিহাস নির্মাতারা রাজনীতির ঊর্ধ্বে।’ আজ রোববার সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী ডাকসুর তৎকালীন ভিপি আ স ম আব্দুর রব। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, যাঁরা ইতিহাস নির্মাণ করেন, তাঁরা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন আ স ম আব্দুর রব। আমরা তাঁকে ঐতিহাসিক এই দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ঐতিহাসিক এই দিবস উদ্‌যাপনে আমন্ত্রণ পেয়ে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তবে শারীরিক দুর্বলতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।

উপাচার্য আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করব দেশের অভ্যুদয়ের স্মৃতিবিজড়িত এ আয়োজনগুলো নিয়মিত করে যেতে। এসব উদ্‌যাপন দেশে বিদ্যমান নানামুখী ষড়যন্ত্র এবং প্রতিকূলতার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করে। দেশের ঐক্য ধরে রাখতে এসব আয়োজন অত্যন্ত জরুরি।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গর্বিত উত্তরাধিকার বহন করছে। এই গর্ব এখনো আমাদের সাহস জোগায়। ফলে আমরা পুরো জাতিকে ঐক্য ধরে রাখার সাহস দেওয়ার চেষ্টা করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) সায়মা হক বিদিশা বলেন, ২ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনা হয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। পরে ৯ মাসের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়।

তিনি বলেন, জাতীয় পতাকা আমাদের ঐক্যের জায়গা। এটা আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে সাহায্য করে। সব ধরনের আন্দোলনে বাংলাদেশের মানুষ জাতীয় পতাকা সামনে নিয়ে একতাবদ্ধ হয়। আমরা নতুন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে একতাবদ্ধ হব।

অনুষ্ঠানে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, একটি দেশের স্বাধীন-সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, তাদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ প্রমুখ ব্যক্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হেমায়েতপুর-রোহিতপুর: পণ্যবাহী যানের সড়কে দুর্ভোগ নিত্যদিনের

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
খানাখন্দে ভরা হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর আঞ্চলিক সড়ক। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জের হজরতপুর এলাকায়।  আজকের পত্রিকা
খানাখন্দে ভরা হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর আঞ্চলিক সড়ক। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জের হজরতপুর এলাকায়। আজকের পত্রিকা

রাজধানী ঢাকাকে পাশ কাটিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর আঞ্চলিক সড়ক। বিশেষ করে মালবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরিগুলো ঢাকায় প্রবেশে বাধ্যবাধকতা থাকায় এই সড়ক দিয়ে ২৪ ঘণ্টা যান চলাচল করে। দীর্ঘ যানজট, পথে পথে বাধা আর সংক্ষিপ্ত দূরত্ব হওয়ায় লাখো মানুষের ভরসা এই সড়কটি।

তবে দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত, ভাঙন ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যান চলাচল ধীরগতির পাশাপাশি দুর্ঘটনার শঙ্কাও বেড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছেন। এতে সময় এবং অতিরিক্ত অর্থের অপচয় হচ্ছে চালক, যাত্রী ও পথচারীদের।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের কানারচর থেকে ঝাউচর পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এক কিলোমিটার রাস্তায় তিন-চার জায়গায় এমন বিপজ্জনক গর্ত রয়েছে, যেখানে প্রায়ই যানবাহন উল্টে যায়। বড় যানবাহনগুলো যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হয়ে মাঝেমধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ফলে সৃষ্ট হয় দীর্ঘ যানজট।

এ ছাড়া আলিপুর ব্রিজ থেকে জালাল মেম্বারের বাড়ি হয়ে জগন্নাথপুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাতেও ছড়িয়ে আছে ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙন। বিশেষ করে অসুস্থ, গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করেন।

একই চিত্র রোহিতপুর ইউনিয়নের রোহিতপুর বাজার, ধর্মশুর ও বালুয়াটেক এলাকায়। রোহিতপুর বাজারের তিন রাস্তা মোড়, সান প্লাজার সামনে সামান্য জায়গায় চার-পাঁচটি বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। বালুয়াটেক গ্রামে প্রায় ২০ গজ জায়গাজুড়ে নিচু ও ভাঙা রাস্তা সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুসমান পানিতে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি হলে এই সড়কে সৃষ্টি হয় চরম দুর্ভোগ, ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

জানতে চাইলে রোহিতপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ভূঁইয়া ও শাহজালাল জানান, স্থানীয়ভাবে নিজেরা অর্থ ব্যয়ে কয়েকবার সংস্কার করলেও বৃষ্টিতে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে রাস্তা। চোখের সামনেই প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। বড় ট্রাক বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে।

রিকশাচালক মতিন মিয়া বলেন, ‘ভাঙা রাস্তায় রিকশার চাকা ভেঙে যায়, যাত্রী পড়ে যায়। তাই এখন আর এই পথে যেতে চাই না।’

এ বিষয়ে কথা হয়, কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর সড়কের চার লেন করার কাজ খুব শিগগির শুরু হবে। জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে। কানারচর, আলিপুর-জালাল মেম্বার-জগন্নাথপুর এবং রোহিতপুর-ধর্মশুর-বালুয়াটেক অংশগুলো সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুন্দরবন ভ্রমণ: ত্রুটিপূর্ণ নৌযানে সুরক্ষার ঘাটতি, ঝুঁকিতে পর্যটক

  • ট্যুরিস্ট বোটের অধিকাংশের ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না।
  • এসব নৌযানে কোনো লাইফ জ্যাকেট ও বয়া নেই। অধিক যাত্রী বহন করে।
  • সব ট্যুরিস্ট বোটে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার কথা স্বীকার বোটমালিকের।
সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট) 
অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রে যাত্রা। সম্প্রতি মোংলার পশুর নদে। ছবি: আজকের পত্রিকা
অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রে যাত্রা। সম্প্রতি মোংলার পশুর নদে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুন্দরবনে শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা ভিড় জমাচ্ছে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে। কিন্তু সম্প্রতি বাগেরহাটের মোংলায় ট্যুরিস্ট বোট উল্টে পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় নৌযানগুলোর ফিটনেস ও সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বন বিভাগ এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার অভিযোগ সুন্দরবনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিদের।

বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য সুন্দরবনের চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম বলেন, মোংলা থেকে যেসব ট্যুরিস্ট বোট সুন্দরবনে আসা-যাওয়া করে, এগুলোর নৌপথে চলাচলের কোনো লাইসেন্স নেই, কোনো ফিটনেস ছাড়পত্র নেই। চালকদেরও নেই কোনো লাইসেন্স। আবার অধিকাংশ বোটে কোনো লাইফ জ্যাকেট থাকে না, লাইফ বয়াও থাকে না। কোনো বোটে ২০ জনের বেশি যাত্রী না ওঠানোর নিয়ম থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া পাওয়ার আশায় তারা দ্বিগুণ যাত্রী বহন করে। আবার অনেক সময় পর্যটকেরা ব্যয় কমানোর জন্য অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে একটি বোটে উঠে পড়ে।

ফরিদুল ইসলামের অভিযোগ, ওই রকম নানা অনিয়ম নিয়ে বছরের পর বছর ধরে এসব ট্যুরিস্ট বোট চলাচল করলেও সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ অথবা প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয় না।একটি দুর্ঘটনা ঘটলে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়। তারপর আবার যা তা-ই।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস সুন্দরবন ঘুরে দেখার জন্য উপযুক্ত সময়। এই সময় নদী ও সমুদ্র শান্ত থাকে। তাই সুন্দরবনের সব দর্শনীয় স্থান সহজে ঘুরে দেখা যায়। সুন্দরবনে ঘোরা যায় খুলনা, বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলা এবং সাতক্ষীরা দিয়ে। তবে সবচেয়ে বেশি মানুষ ভ্রমণ করে খুলনা ও বাগেরহাটের মোংলা দিয়ে। এই দুই জায়গা থেকে ভ্রমণের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে করমজল, হারবাড়িয়া, কচিখালি, কটকা, হিরণ পয়েন্ট ও দুবলার চর।

কম খরচে এক দিনে সুন্দরবন ঘুরে দেখতে পর্যটকেরা মোংলা থেকে করমজল অথবা হারবাড়িয়া পর্যটনকেন্দ্রে যায়। মোংলা থেকে সকালে রওনা দিলে দুটি জায়গা এক দিনে ঘুরে দেখা সম্ভব। মোংলা ফেরিঘাট থেকে করমজল ভ্রমণের জন্য ট্যুরিস্ট বোট ভাড়া পাওয়া যায়। এ বোটে ২০ জনের বেশি চড়ার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা ও মোংলা থেকে সুন্দরবনে দু-তিন দিনের ভ্রমণের জন্য ট্যুর অপারেটরের শতাধিক লঞ্চ রয়েছে। এসব লঞ্চ নৌপথের নির্দেশনা মেনে লাইফ জ্যাকেট, বয়াসহ পর্যাপ্ত সুরক্ষাব্যবস্থা মেনে চলে। মূল সমস্যা হলো মোংলা ফেরিঘাট থেকে যেসব ট্যুরিস্ট বোট সুন্দরবনের স্বল্প দূরত্বে যায়, তাদের নিয়ে। মোংলায় জালি বোট, ডেনিস বডি বোট নামে পরিচিত এসব ট্যুরিস্ট বোটের সংখ্যা প্রায় ৩০০। অভিযোগ রয়েছে, এসব বোটের অধিকাংশই নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। এগুলোতে কোনো লাইফ জ্যাকেট ও বয়া নেই। এরা অধিক যাত্রী বহন করে। এসব বোটের কোনো ফিটনেস সার্টিফিকেটও নেই।

১০ নভেম্বর সকালে ১৩ জন পর্যটক নিয়ে সুন্দরবনের ঢাইনমারী থেকে করমজল পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার সময় একটি ছোট ট্যুরিস্ট বোট ঢেউয়ের ধাক্কায় উল্টে যায়। এতে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাবেক এক নারী পাইলট ডুবে মারা গেছেন।

মোংলা জালি বোট মালিক সমিতির সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ দুলাল বলেন, ‘আমাদের সমিতির সুন্দরবনে চলাচলের জন্য অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে। তবে সব বিধিনিষেধ সবাই মানে না। সমিতির পক্ষ থেকে আমরা তার সদস্যপদ স্থগিত করতে পারি। কিন্তু আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব তো প্রশাসনের।’ সব ট্যুরিস্ট বোটে পর্যাপ্ত সুরক্ষাব্যবস্থা নেই বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ এই বোটগুলো চলাচলের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করলে সবাই একটা নিয়মের মধ্যে থাকত।

জানতে চাইলে সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন ও পর্যটনকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, মোংলা থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী ট্যুরিস্ট বোটগুলোর গঠন ত্রুটিযুক্ত। ছাদে যাত্রী বসানো ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও তারা ছাদেই যাত্রীদের বসার জন্য আলাদা চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করে। আর অধিকাংশ পর্যটক নৌপথে সুন্দরবনের দৃশ্য দেখার জন্য ছাদেই বসে থাকেন। ফলে তীব্র ঢেউ মুখে পড়লে এবং কুমির বা বাঘ দেখলে যাত্রীরা বোটের যেকোনো এক পাশে ভিড় করলেই বোট উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে। এ জন্য প্রতিটি ট্যুরিস্ট বোটে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক করা উচিত। এ ছাড়া মোংলা ও পশুর নদে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর খুব দ্রুতগতির কিছু স্পিডবোট চলাচল করে। সেগুলো চলাচলের সময় প্রবল ঢেউ সৃষ্টি করে। ছোট ছোট নৌযান তখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন আক্তার সুমি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দু-এক দিনের মধ্যেই ট্যুরিস্ট বোট মালিকদের নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বসব। আশা করছি, তাদের একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসতে পারব।’

ট্যুরিস্ট বোট দেখভালের দায়িত্ব বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)। জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর খুলনা বিভাগের পরিবহন পরিদর্শক মো. আখতার হোসেন খান বলেন, ‘নৌযানের নকশা, লাইসেন্স ও সার্ভে সনদ দেওয়া সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের কাজ। তারপরও আমরা বিভিন্ন সময়ে এই নৌযানগুলো সঠিক নিয়মে চলাচল করছে কি না, তা তদারক করি এবং অনিয়মের অভিযোগ পেলে মামলাসহ জরিমানা করি। কিন্তু আমাদের জনবলসংকট রয়েছে। এই বোটগুলো বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ফলে সব সময় আমরা সীমিত জনবল দিয়ে তাদের তদারক করতে পারি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে নতুন বাস টার্মিনালে ককটেল বিস্ফোরণ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৪
ককটেল বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত
ককটেল বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের পৌর বাস টার্মিনালে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাদারীপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার পৌর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে বাস টার্মিনালে দুর্বৃত্তরা পর পর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। তবে এই ঘটনায় কোনো হতাহত বা ক্ষতি হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তা ছাড়া, এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসে আগুন

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৮
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ফেনীর মহিপালে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ভেতরের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল পল্লী বিদ্যুৎসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে পল্লী বিদ্যুৎসংলগ্ন এলাকায় মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে দাঁড়িয়ে থাকা ফেনী-চট্টগ্রাম সড়কে চলাচলরত রনি-রানা পরিবহনের একটি বাসে হঠাৎ কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মোজাম্মেল হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সড়কের পাশে গাড়িগুলো পার্ক করে চালকেরা বাড়িতে চলে যান। রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে আকস্মিক আশপাশের মানুষের চিৎকারে বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখি। পরে সবার চেষ্টায় পানি এনে আগুন নেভানো হয়। গাড়ির চালকের বসার স্থানসহ সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ 

ফেনী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল মজিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়েছে। আগুনে বাসের ভেতরে সামনের অংশ পুড়ে গেছে। এটি নাশকতা হতে পারে।’

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। এটি নাশকতার অংশ কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত