Ajker Patrika

জাবিতে সাবেকদের অনুষ্ঠানে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪ জনকে ছাত্রলীগের মারধর

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, ১০: ৪২
জাবিতে সাবেকদের অনুষ্ঠানে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪ জনকে ছাত্রলীগের মারধর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সাবেক শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ চারজন আহত হয়েছেন। 

গতকাল শুক্রবার রাত ১১টায় মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে উঠতে না দেওয়া নিয়ে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩২ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মুক্তমঞ্চে পারফর্ম করছিলেন সোলস ব্যান্ডের পার্থ বড়ুয়া। এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা মঞ্চে ওঠার চেষ্টা করেন। এতে আয়োজকেরা অনুষ্ঠানের স্বার্থে মঞ্চে ঢুকতে বাধা দেন। এ সময় পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে আসা লিটন নামের একজনকে মারধর করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন পরিস্থিতি থামাতে গেলে তাঁকেও মারধর করেন তাঁরা। থামাতে গিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বিশ্বিবদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজ এবং সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিনকেও মারধর করা হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন রনি, উপবিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক উৎস দত্ত, উপছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক অরবিন্দ ভৌমিক, সহসভাপতি কে এম রহমান জাকারিয়া, উপ-আন্তার্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সবুজ রায়ের নেতৃত্বে এই মারধর করা হয়। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছাত্রলীগের আরও ২০-২৫ জন কর্মী ছিলেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের কর্মী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩২ ব্যাচের এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অতিথিকে মারধরের সময় সোহেল পারভেজ ও শাফিন ছেলেদের আটকানোর চেষ্টা করলে তাঁদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এ সময় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিনকে বেধড়ক মারধর করেন।’ 

এ ব্যাপারে সুদীপ্ত শাহিন বলেন, ‘আমি দেখতে পেলাম অনেকগুলো ছেলে মিলে লিটনকে মাটিতে ফেলে মারধর করছে। এ সময় আমি পরিচয় দিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করি। আমার ওপর চড়াও হয়ে আমাকে মারধর শুরু করে।’ 

এ বিষয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজ বলেন, ‘মারধরের সময় ছেলেদের থামাতে গেলে আমার গায়ে ধাক্কা লাগে। পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও তাদের থামান যাচ্ছিল না। পরে আমরা নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিয়েছি।’ 

মারামারির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত উৎস দত্ত বলেন, ‘আমি তখন মুক্তমঞ্চের পাশে ছিলাম। এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে শোনার পর মুক্তমঞ্চে গিয়ে দেখি আমার হলের জুনিয়ররা সেখানে ঝামেলা করতেছে। তাই আমি আমার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে হলের সিনিয়র হিসেবে সেখান থেকে জুনিয়রদের পাঠিয়ে দেই। আমি এই মারামারিতে সম্পৃক্ত নই। কেউ যদি বলে থাকে আমি সম্পৃক্ত, তবে সেটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বলেছে তারা।’ 

আরেক অভিযুক্ত আকাশ তুহিন বলেন, ‘আমি তো উপস্থিত ছিলাম মুক্তমঞ্চে। কী ঘটেছে ভেতরের কাহিনি বিস্তারিত জানি না। দেখলাম ঝামেলা হচ্ছে। এটা একটা রং ইনফরমেশন, আমি এমন কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমি দর্শকদের সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম।’ 

এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘এ ঘটনা অগ্রহণযোগ্য। আমরা এরই মধ্যে অভিযুক্তদের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত