Ajker Patrika

অর্থ আত্মসাৎ মামলায় নর্দান ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অর্থ আত্মসাৎ মামলায় নর্দান ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের জামিন

নর্দান ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ আবদুল্লাহকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম তরিকুল ইসলাম এই জামিন দেন। তবে মামলার অন্য আসামি মিয়াজুল ইসলামকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। 

মঙ্গলবার বিকেলে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার ইউসুফ আবদুল্লাহ ও মিয়াজুল ইসলামকে আদালতে হাজির করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এর আগে গত সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির বনানী কার্যালয় থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। 

আসামিদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবীরা। বাদী পক্ষ থেকে এতে আপত্তি জানানো হয়। বাদীর আইনজীবী কাজী নজরুল ইসলাম রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালত ইউসুফ আবদুল্লাহকে জামিন দিয়ে অপর আসামি মিয়াজুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

মামলায় নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরির জন্য আশিয়ান গ্রুপের কাছ থেকে পাঁচ বিঘা জমি কিনে চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দেওয়া এবং জালিয়াতি করে জমি নিবন্ধনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অধ্যাপক আবু ইউসুফসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫ / ৬ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্টসের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া। মামলার অপর দুই আসামি হলেন—রিয়াজুল আলম ও সেলিম মুন্সী। 

আশিয়ান গ্রুপ ও নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির মধ্যে পাঁচ বিঘার একটি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। আশিয়ান গ্রুপ জমি বিক্রি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়টির কাছে আরও ২০ কোটি টাকা চায়। আর নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি চুক্তি জাল করে অতিরিক্ত টাকা দাবির অভিযোগ আনে। 

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৩ আগস্ট আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মালিকানাধীন দক্ষিণখান থানার বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অধীনস্থ ঢাকা কালেক্টরির তৌজিভুক্ত দক্ষিণখান মৌজার ১৬৫ শতক বা ৫ বিঘা জমি কেনার জন্য চুক্তি করে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি। এতে সই করেন নর্দান ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ। উভয় পক্ষের আলোচনায় জমির মূল্য ৫০ কোটি টাকা সাব্যস্ত হয়। 

অভিযোগে বলা হয়, ওই দিনই আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ ১২ কোটি টাকা নগদ-চেকে আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে প্রদান করে চুক্তিবদ্ধ হন। পরে ইউসুফ আবদুল্লাহ চুক্তিপত্রে উল্লেখিত ৫০ কোটি টাকার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৩০ কোটি টাকা চেক ও নগদ অর্থ প্রদান করলেও ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেননি বলে অভিযোগ করে আশিয়ান গ্রুপ। চুক্তিপত্র মোতাবেক ২০১৩ সালে ৩০ আগস্টের মধ্যে বাকি ২০ কোটি টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার ছিল। কিন্তু নগদ ও চেকের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি। বাকি টাকা ওই বছর পরিশোধের কথা থাকলেও তা তারা পরিশোধ করেনি। 

যদিও নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির দাবি, তারা এই জমির মূল্য পরিশোধ করেছে। কিন্তু আশিয়ান গ্রুপ জমির দাম ২০ কোটি বাড়িয়ে দেখাচ্ছে। এ নিয়ে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটিও আশিয়ান গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলায় গত ১৫ ডিসেম্বর আশিয়ান গ্রুপের এমডি নজরুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হাসিবুল হক। 

এর আগে প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনায় গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অধ্যাপক আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ ও সরকার লুৎফুল কবীরকে আসামি করে মামলা করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। আসামি পক্ষ থেকে বলা হয়, একই অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়েছে। এ কারণে শেষোক্ত মামলা চলতে পারে না। এ ছাড়া অধ্যাপক ইউসুফ আবদুল্লাহ করোনা আক্রান্ত। এসব বিবেচনায় তাঁকে আদালত জামি দিয়েছেন বলে আজকের পত্রিকাকে জানান আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত