Ajker Patrika

ওয়াসার তথ্য চান হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ৩৬
ওয়াসার তথ্য চান হাইকোর্ট

ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে দূষিত পানি সরবরাহের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমন অভিযোগ স্বীকার করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন সময়ে নানা পরিকল্পনা হাতে নেয় ওয়াসা। তবু নগরবাসীর বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। পানির দূষণ রোধে ঢাকা ওয়াসা কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সে বিষয়ে এবার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং হাইকোর্ট।

আগামী ২ নভেম্বর ওয়াসার আইনজীবীকে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে ২০১৯ সালের ৭ জুলাই পানি পরীক্ষায় আদালতের নির্দেশে গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের পানিতেই ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

সমন্বিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের পানিতেই ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কমিটি ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের বিভিন্ন এলাকা থেকে দৈবচয়ন ও দূষণের অভিযোগ রয়েছে এমন ৩৪টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে আটটি নমুনায় ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে।

গত ১৬ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পানি পরীক্ষাবিষয়ক একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার লিংকে (হটলাইন) গত তিন মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে ১০টি জোনের ৫৯ এলাকায় ময়লা পানির প্রবণতা বেশি বলে উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা ওয়াসার পানিদূষণের দুটি কারণ উল্লেখ করেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওয়াসা ভূগর্ভ থেকে যে পানি তোলে বা পরিশোধনের পর যে পানি, তা অনেক বিশুদ্ধ থাকে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিকল পাইপলাইনের কারণে অথবা বাসায় ট্যাংক পরিষ্কার না করার কারণে পানি ময়লা হয়। তিনি আরও বলেন, পুরোনো পাইপলাইন পাল্টে নতুন পাইপলাইন দিতে হবে। বাসাবাড়িতে পানির ট্যাংকও পরিষ্কার করতে হবে। এর জন্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া উচিত। মানুষ সচেতন না হলে পাইপলাইন ঠিক হওয়ার পরও পানিদূষণ কমবে না।

পানিদূষণের কথা স্বীকার করে ঢাকা ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম সহিদ বলেন, ‘আমরা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করি। তবে পুরোনো পানির লাইন ছিদ্র বা ভাঙা থাকার কারণে পানি দূষিত হয়। পুরোনো লাইন পরিবর্তন করে ইতিমধ্যে ৬৩টি ডিএমএ (ঢাকা ওয়াসার মডস জোন) লাইনে নতুন পাইপ দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো পরিবর্তনের কাজ চলছে। চোরা লাইনগুলো বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে  নতুন লাইন বাসানো হবে।'

গ্রাহকদের আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভ (মাটির নিচে পানি সংরক্ষণাগার) ট্যাংকগুলো পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা ওয়াসার এই পরিচালক বলেন, ‘আমরা যতই বিশুদ্ধ পানি দিই, আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভ (মাটির নিচে পানি সংরক্ষণাগার) ট্যাংক পরিষ্কার না করলে পানি দূষিত হবেই। এর জন্য গ্রাহকদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত