Ajker Patrika

শিক্ষার্থী নির্যাতনকারীদের ছবি নিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করবে ছাত্র অধিকার পরিষদ

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২: ১০
শিক্ষার্থী নির্যাতনকারীদের ছবি নিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করবে ছাত্র অধিকার পরিষদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ছবি ও তাঁদের নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করা হবে বলে উল্লেখ করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি তারিকুল ইসলাম।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের এক শিক্ষার্থীকে ‘শিবির সন্দেহে’ রাতভর নির্যাতনের প্রতিবাদে ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মশাল মিছিল-পূর্ববর্তী সমাবেশে এ কথা বলেন তারিকুল ইসলাম।

তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন করে। জোর করে, ইচ্ছের বিরুদ্ধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে প্রোগ্রাম করায় ছাত্রলীগ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের কাছে ছাত্রলীগের নির্যাতনের খবর পৌঁছায় না, তারা দেখেও না। আপনারা (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন) কী বোবা হয়ে গেছেন? আপনারা কেন কথা বলছেন না! আপনাদের কি চোখ নেই, কান নেই?’

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার সভাপতিত্বে ও ঢাবি শাখার অন্যতম সংগঠক আহনাফ সাইদ খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীবসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বক্তারা বলেন, বিজয় একাত্তর হলে শিবির সন্দেহে শাহরিয়াদের ওপর যেভাবে ন্যক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছে, তা জাহেলিয়া যুগের বর্বরতাকেও হার মানায়। হামলা ও মারধরের ঘটনায় জড়িতদের তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান বক্তারা।

সভাপতির বক্তব্যে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিনিয়ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নির্যাতন চালান। কিছু বিষয় পত্রিকার মাধ্যমে উঠে আসে, আমরা জানতে পারি; প্রতিবাদ করি। কিন্তু অনেক নির্যাতনের ঘটনা আমাদের অগোচরে থেকে যায়।’

ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে আবু বকর নিহত হলেও খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করতে পারেনি বিচার বিভাগ। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে হাফিজুর মোল্লাকে শীতের রাতে গেস্টরুমে নির্যাতন করে দাঁড় করিয়ে রাখায় মৃত্যুবরণ করে, আমরা সেগুলো ভুলিনি; বুয়েটের আবরার ফাহাদকে হত্যার কথাও আমরা ভুলিনি।’ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নির্যাতনকে আর দীর্ঘায়িত হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন মোল্লা।

আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, গেস্টরুম করতে করতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট খারাপ করে; যা আমরা অ্যানালাইসিস করে জানতে পারি। ছাত্রলীগের গেস্টরুম, গণরুম আধুনিক যুগের ‘আবু গারিব’ জেলখানাকেও হারা মানায়। ছাত্রলীগের নির্যাতন থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলার বিকল্প নেই।’

সমাবেশ শেষে মশাল মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দিক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। এ সময় তাঁরা ‘শিক্ষা ও ছাত্রলীগ, একসঙ্গে চলে না’, ‘ছাত্রলীগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও,’ ‘ছাত্রলীগের নির্যাতন, বন্ধ করো করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

উল্লেখ্য, গত রোববার রাতে ঢাবির বিজয় একাত্তর হলে শাহরিয়াদ মিয়া সাগর নামের এক শিক্ষার্থীকে ‘শিবির সন্দেহে’ রাতভর নির্যাতন করেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. ফয়সাল মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়সাল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাজেদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ বাবু, শাকিরুল ইসলাম সাকিব, গণযোগাযোগ উপসম্পাদক শাকিবুল ইসলাম সুজন, সাহিত্য সম্পাদক ইউসুফ তুহিন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক বায়েজিদ বোস্তামী, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক পিয়ার হাসান সাকিব, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক আবুল হাসান সাইদসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এদের মধ্যে শাকিবুল ইসলাম সুজন, মাজেদুর রহমান ও ইউসুফ তুহিন বেশি মারধর করেন বলে উল্লেখ করে গতকাল (সোমবার) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে জানান শাহরিয়াদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত