Ajker Patrika

মাংস কেটে ১২ ঘণ্টায় বেলাল উদ্দিনের আয় অর্ধলাখ টাকা

শরীফুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২১, ২২: ৩৭
মাংস কেটে ১২ ঘণ্টায় বেলাল উদ্দিনের আয় অর্ধলাখ টাকা

বেলাল উদ্দিন। বাড়ি জয়পুরহাট। নিয়মিত কাজ করেন ঢাকার রামপুরায় একটি মাংসের দোকানে। যা থেকে মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় হয় তাঁর। বাড়তি আয়ের জন্য বেলালকে অপেক্ষা করতে হয় উৎসব-অনুষ্ঠানের জন্য।

করোনার কারণে বাড়তি আয়ের সুযোগ প্রায় বন্ধ বেলাল উদ্দিনের। কিন্তু ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু জবাই উপলক্ষে আবারও বাড়তি আয়ের সুযোগ আসে বেলালের সামনে। ঈদের দিন আটটি গরুর মাংস কাটার বুকিং পান বেলাল।

আজ বুধবার সকাল আটটা থেকে রামপুরা এলাকায় দেড় লাখ টাকা দামের একটি গরুর মাংস কাটার মধ্য দিয়ে ঈদের দিনের কাজ শুরু করেন বেলাল উদ্দিন। রাত আটটার দিকে মহানগর আবাসিক এলাকায় ৯০ হাজার টাকা দামের একটি গরুর মাংস কাটার মধ্য দিয়ে যখন দিনের কাজ শেষ করেন তিনি। এ সময় আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হয় বেলাল উদ্দিনের। দিনে শেষে কত টাকা আয় করলেন এ প্রশ্নের জবাবে স্মিত হেসে জানালেন, ‘এই হবে আরকি ৫০ হাজার।’

এ সময় তিনি আরও জানান, সকাল থেকে জবাই করা আটটি পশুর দাম প্রায় ছয় লাখ টাকা। এর মধ্যে দুপুরের আগে মাংস কেটেছেন মোট তিন লাখ টাকা দামের চারটি গরুর। এ ক্ষেত্রে পশুর দামের হাজারপ্রতি তিনি নিয়েছেন ২০০ টাকা। আর দুপুরের পরও মাংস কেটেছেন মোট তিন লাখ টাকা দামের চারটি গরুর। এ ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে তিনি নিয়েছেন ১০০ টাকা।

বেলাল জানান, মাত্র একজন সহযোগী নিয়েই আটটি গরুর মাংস কেটেছেন তিনি। এ সময় তাঁর পাশে থাকা সহযোগী মতিন মোল্লা জানালেন, ১২ ঘণ্টার কাজে তিনি পেয়েছেন ৪০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে দুজনের আয় ৯০ হাজার টাকা।

বেলাল জানালেন, ঈদের পরদিনও পাঁচটি গরুর মাংস কাটার বুকিং রয়েছে তাঁর ও মতিনের হাতে। সে ক্ষেত্রে তাদের আয় হবে কিছুটা কম হবে। তবুও দুজনে মিলে পাবেন ২০ হাজার টাকা।

বেলাল উদ্দিন জানালেন, আগেও ঈদে পশুর মাংস কাটার কাজ করতেন তিনি। তবে আয় কিছুটা কম হতো। কারণ তকজন কসাইয়ের চাহিদা কম ছিল। কিন্তু করোনার কারণে গত কোরবানির ঈদ থেকে তাদের আয় বেশ ভালো। অবশ্য করোনার কারণে সারা বছর উৎসবকেন্দ্রিক যে বাড়তি আয় করতেন তা বন্ধ হয়ে গেছে বলেও আফসোস করেন বেলাল।

অল্প সময়ে অনেক আয়ে অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে বেলালের জবাব, শুধু আয়টাই দেখলেন, পরিশ্রমটা দেখলেন না। সাধারণত আমরা দিনে দুই-একটা গরুর মাংস কাটি। আজকে (বুধবার) আটটি গুরুর মাংস কেটেছি। কালকে আরও পাঁচটি কাটতে হবে। এরপর অন্তত এক সপ্তাহ আমাদের শরীরের ওপর দিয়ে মারাত্মক ধকল যাবে, সেটাও একটু লিখবেন, বললেন বেলাল।

বেলালের মতো মাংস শ্রমিকদের চাহিদা খুব ঈদুল আজহার সময়ে। রাজধানীতেই মূলত তাদের চাহিদা বেশি। কারণ ঢাকায় অন্তত পাঁচ লাখ পশু কোরবানি হয়। অথচ এসব কাজে পেশাদার কসাই আছেন মাত্র ১২ হাজার।

অবশ্য প্রায় ১০ হাজারের মতো মৌসুমি কসাইকে ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুর মাংস কাটতে দেখা যায়। মূলত যারা ঢাকার বাইরে থেকে কোরবানির পশু বেচতে আসেন, তাদেরই একাংশ মূলত মৌসুমি কসাইদের বড় অংশ। তাদের সঙ্গে ঈদের সময় আয় কমে যাওয়া রিকশা-ভ্যানচালকেরা যোগ দেন। তবে পেশাদার কসাইয়ের তুলনায় তাদের আয় হয় অর্ধেক। অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকেই তাঁদেরকে দিয়ে পশুর মাংস কাটাতে চান না, কাটালেও পারিশ্রমিক দেন কমিয়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

র‍্যাবকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার ঠেকাতে হচ্ছে নতুন আইন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত