Ajker Patrika

সার্ভিস লেনহীন মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি

  • ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বেশির ভাগ মহাসড়কে সার্ভিস লেন নেই
  • একই মহাসড়কে ভারী ও দ্রুতগতির যানবাহন ও ধীরগতির যান চলছে
  • সার্ভিস লেন ব্যবহারের নিয়ম, দণ্ডের বিষয়ে জানেন না ব্যবহারকারীরা
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১১: ৩২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বাড়ছেই। মহাসড়কে দ্রুতগতির যানবাহনের পাশাপাশি ধীরগতির যান চলাচল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যাপ্ত সার্ভিস লেন না থাকায় মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। যেসব মহাসড়কে সার্ভিস লেন আছে, সেগুলোও কিছুদূর পরপর মহাসড়কে মিশেছে। সার্ভিস লেন ব্যবহারের নিয়ম জানেন না চালকেরা। নিয়ম অমান্যে দণ্ডের বিষয়েও নেই যথেষ্ট প্রচার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শুধু নির্মাণকেই সমাধান মনে করে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সার্ভিস লেন নেই। যেগুলো আছে সেগুলোতেও চলাচলকারী যানবাহন প্রধান সড়কে উঠে ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। নিয়মের ব্যতিক্রম হওয়ায় ঝুঁকির মাত্রা বাড়ে। দেশে যে উদ্দেশ্যে সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হয়, তা বাস্তবায়ন হয় না।

সবচেয়ে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। দেশের প্রথম চার লেনের এই মহাসড়কে নেই সার্ভিস লেন। ফলে এই মহাসড়কে ভারী ও দ্রুতগতির যানবাহনের পাশাপাশি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, রিকশা ভ্যানসহ ধীরগতির যানবাহনও চলে পাল্লা দিয়ে।

ফলে ধীরগতির যানবাহনের কারণে ওই মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার কারণে প্রাণহানি হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার্ভিস লেন থাকলে গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কে দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমে যেত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ২৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে উল্টো পথেও চলতে দেখা গেছে। এই উল্টো পথে চলাচল আটকাতে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। অথচ আগের দিন কুমিল্লার পদুয়ার বাজারে ইউটার্ন নেওয়া একটি প্রাইভেট কার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ওপর উল্টে পড়ে একটি কাভার্ড ভ্যান। এতে কারে থাকা একই পরিবারের চারজন নিহত হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সার্ভিস লেন না রাখা বিরাট ভুল হয়েছে। এই মহাসড়কে ৬৬২টি ফিডার রোড রয়েছে। সার্ভিস লেন থাকলে যানগুলো ফিডার রোড থেকে সরাসরি মহাসড়কে উঠতে পারত না; কিংবা উল্টো পথে চলার সুযোগ পেত না। যেমন সার্ভিস লেন রয়েছে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে।

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েজুড়ে সার্ভিস লেন আছে। ফলে ধীরগতির যান মহাসড়কে তেমন ওঠে না। কিন্তু সাসেক-১ (গাজীপুর-এলেঙ্গা) মহাসড়কের পুরোটায় সার্ভিস লেন নেই। কিছুদূর পরপর সার্ভিস লেন মিশেছে মহাসড়কের সঙ্গে। গাজীপুরের ভোগড়া থেকে ঢাকা বাইপাস ফোর লেন এক্সপ্রেসওয়ের ৪৮ কিলোমিটার সার্ভিস লেনসহ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভোগড়া থেকে ভুলতা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সাসেক-২ (এলেঙ্গা-রংপুর), ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক, আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পে সার্ভিস লেন করা হচ্ছে। হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের এক পাশে সার্ভিস লেন থাকলেও কিছুদূর পর মূল সড়কে মিশেছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘মহাসড়কের প্রধান বৈশিষ্ট্য সার্ভিস লেন থাকতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক। আমাদের একাধিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন থাকলেও সেগুলো কিছুদূর পরপর মূল সড়কের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব মহাসড়কে সার্ভিস লেন নেই, সেখানে অবশ্যই সড়ক ডিভাইডার রাখতে হবে; কিন্তু তাও করা হচ্ছে না।’

সওজ সূত্র বলেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের আদলে এক্সপ্রেসওয়ে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য নকশাও তৈরি করা হয়েছে। এটি নির্মাণে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হতে পারে। এরই মধ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এখানে অবকাঠামো তৈরি করাকেই দায়িত্ব শেষ বলে মনে করা হয়। কিন্তু ব্যবহারকারীদের সচেতন করার বিষয়ে চিন্তা করা হয় না। উন্নয়নশীল দেশে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বাড়াতে হবে। চালকদের সচেতন করতে হবে, তাঁদের পথচলার নিয়ম ও ঝুঁকি সম্পর্কে জানাতে হবে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সূত্র বলেছে, কিছু এলাকায় সার্ভিস লেন করার প্রয়োজন ছিল ২০ ফুট। কিন্তু জায়গাস্বল্পতার কারণে ১৬-১৮ ফুট করতে হয়েছে। এগুলো ভবিষ্যতে সমন্বয় করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজের একাধিক প্রকৌশলী বলেন, মহাসড়কে সার্ভিস লেন হলে দুর্ঘটনা কমে যাবে। কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সব মহাসড়কে সার্ভিস লেন করা যাচ্ছে না। কৃষিজমি নষ্ট না করার নির্দেশনাও আছে। দেশে সার্ভিস লেনের প্রচলনও বেশি পুরোনো নয়। ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো নির্মাণের সময় সার্ভিস লেনসহ করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজি মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা বলেন, সার্ভিস লেন ছাড়া মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। সার্ভিস লেন থাকা মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কম, সেখানে দুর্ঘটনার হারও কম। এখন থেকে যেসব মহাসড়ক সম্প্রসারণ করা হবে, সেগুলো অবশ্যই সার্ভিস লেনসহ করার অনুরোধ জানান তিনি।

মহাসড়কে গতি ও যাত্রার সময় কমানোর জন্য সার্ভিস লেন প্রয়োজন বলে মনে করেন সওজ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, মহাসড়ককে নিরাপদ করার জন্য সার্ভিস লেন প্রয়োজন। একই সঙ্গে স্থানীয় মানুষের চলাচলের জন্য ধীরগতির যানবাহনের চলাচলও দরকার। বাজেটস্বল্পতার কারণে সব মহাসড়কে সার্ভিস লেন করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জমি নেই। কৃষিজমি নষ্ট হয়। মহাসড়কের পাশে বাজার আছে। মহাসড়ক সম্প্রসারণ করতে গেলে সেগুলো সরাতে হয়। এসব তাঁদের সীমাবদ্ধতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
জেসমিন আরা রুমা। ছবি: সংগৃহীত
জেসমিন আরা রুমা। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার রুমা নগরীর মালগুদাম এলাকার অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী আবু তাহেলের মেয়ে। তাঁর স্বামী সুলতান মাহমুদ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেসমিন আরা রুমা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে গত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নালিতাবাড়ীতে মসজিদে ঢুকে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ২

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা ও ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা ও ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের জহিরুল ইসলামের দুই ছেলে উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা (৩৫) ও ফরহাদ হোসেন (২৭)।

পুলিশ জানায়, ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বারোমারী বাজার এলাকার চেল্লাখালী নদীর পশ্চিমপাড়ে উত্তর বাতকুচি ফরেস্ট অফিসসংলগ্ন বাইতুল নূর জামে মসজিদে ওই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সেদিন ফরহাদ, উমর ফারুক ও রুবেল নামে তিনজন মদ্যপ অবস্থায় মসজিদে ঢুকে ইমাম শফিকুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ থেকে এই মসজিদে আজান দেওয়া যাবে না, আমাদের অনুমতি ছাড়া আর আজান হবে না।’

ইমাম প্রতিবাদ করলে তাঁরা তাঁকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে ইমাম পালিয়ে গেলে হামলাকারীরা মসজিদে ঢুকে মাইক সেট, বৈদ্যুতিক বোর্ড, টিনের বেড়া ও অন্য সামগ্রী ভাঙচুর করেন।

এ সময় মুসল্লি হাবিবুর রহমান ও কাজল মিয়া বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। পরে গ্রামবাসী আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

ঘটনার পর মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন।

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ঘোরাফেরা, প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে যুবক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে আজ মঙ্গলবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে যুবক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে আজ মঙ্গলবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত যুবকের নাম মারুফ (২২)। তিনি মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। আহত যুবকের নাম জামিল (২৪)। তাঁরা পরস্পর বন্ধু।

পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবি (২৪) ও ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেন (১৮)। তাঁরা এলাকায় কিশোর গ্যাং হিসেবে পরিচিত হলেও সবাই তরুণ বয়সী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকার আক্তারের বাড়ির সামনে এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় এক দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই বন্ধুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে তারুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মারুফ মারা গেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে জামিলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত জামিলের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ ৮-১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, আহত জামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।

জিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে জানান, মারুফ হত্যাকাণ্ডে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। এজাহারে মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে প্রধান আসামি করা হয়।

জাহিদুল হাসান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে জিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে আজ সকালে রবিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর একটি টিম ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেনকে গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উল্টোপথে অটোরিকশা, বাসচাপায় চালক ও যাত্রী নিহত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
ঘটনাস্থল পরিদর্শন পুলিশের। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থল পরিদর্শন পুলিশের। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় অটোরিকশার চালক ও যাত্রী দুজনই নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার দেওহাটা আন্ডারপাসের সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার রশিদ দেওহাটা গ্রামের আব্দুল হামিদ (৬০) ও রানাশাল গ্রামের অটোরিকশাচালক রহিজ সিকদার (৪৬)।

মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল সারোয়ার জানান, অটোরিকশাচালক মহাসড়কে উল্টোপথে দেওহাটা আন্ডারপাসের ওপরে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী যাত্রীবাহী বাস চাপা দিলে এই প্রাণহানি ঘটে। লাশ আইনিপ্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যাত্রীবাহী বাসটি আটকের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত