নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘দুই সপ্তাহ ধইরা পোলাডা ইলিশ মাছ খাওনের লাইগা বায়না ধরছে। কিন্তু ইলিশ কিনার সাহস করতে পারি নাই। আজকা সাহস কইরা আইসিলাম ছোট একটা মাছ কিনতে। কিন্তু তাও পারলাম না। ছোট ছোট ইলিশ মাছের দাম চায় ১ হাজার ২০০ টেয়া। কেমনে কিনমু। এক কেজি ইলিশ কিনলে আমার দুই সপ্তাহের বাজার খরচ শেষ অইয়া যাইব।’
আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন মুগদা বাশার টাওয়ার মোড় বাজারে মাছ কিনতে আসা শাহিদা বেগম। স্কুলপড়ুয়া এক ছেলে ও এক মেয়ে আর শাশুড়িকে নিয়ে পাঁচজনের সংসার তাঁর। নিজে বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন আর স্বামী সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে। দুজনের যে আয়, তাতে নিজেরা ইলিশ মাছ খেতে না পারার আক্ষেপ আগেই ছিল। ভেবেছিলেন মৌসুমে ইলিশের দাম কমলে ছেলেমেয়েদের কিনে খাওয়াবেন। কিন্তু ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে এখন সন্তানদের শখ পূরণ করতে পারছেন না।
এমন আক্ষেপ শুধু শাহিদাদের মতো মানুষেরই নয়, বর্তমান দামে অনেক মধ্যবিত্ত মানুষও ইলিশ কিনতে পারছেন না। বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবারও এক কেজি ওজনের একটা ইলিশ কিনতে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা লেগেছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে। ইলিশের এমন দামে ক্রেতা হারিয়ে বিক্রেতারাও ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে ভিন্ন পথ ধরছেন।
মুগদা বাজারের ইলিশ বিক্রেতা ছাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বছর দু-এক আগেও এই বাজারেই আমিসহ মোট ছয়জন ইলিশ মাছ বিক্রি করতাম। বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার এলে আমাদের প্রত্যেকের দোকানের সামনে ভিড় লেগে থাকত। কিন্তু এখন দুজন বিক্রি করি। তাও খুব বেশি বড় মাছ নেই আমাদের কাছে। ছোট ছোট মাছ নিয়ে বসেছি। এই বাজারে আড়াই শ গ্রাম ওজনের জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের পিপিআরসি গবেষণা অনুসারে, দেশের ৪০ শতাংশ পরিবারের প্রতি মাসের গড় আয় মাত্র ১৪ হাজার ৮৮১ টাকা আর মধ্যবর্তী অবস্থানে থাকা ৪০ শতাংশ পরিবারের মাসের গড় আয় ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। সংসার চালাতে এসব পরিবারের খরচ আয়ের চেয়ে বেশি।
ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসেইন বলেন, এক কেজি ইলিশের দাম যদি ২ হাজার টাকার বেশি হয়, তবে যাঁদের আয় ২৮ হাজার টাকা, তাঁদেরও ইলিশ কেনার সামর্থ্য থাকে না। তার ওপর যদি তাঁদের ব্যয় আয়ের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে তো আরও পারবেন না। সে হিসাবে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষই এখন ইলিশ মাছ কেনার সামর্থ্য হারিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় এ বছর দাম বেশি। সপ্তাহ দু-এক আগে অতিবৃষ্টির কারণে ইলিশ মাছ ধরতে পারছিলেন না জেলেরা। ক্রেতারা আশা করেছিলেন ঝড়বৃষ্টি কমলে দামও কমে আসবে। কিন্তু বাজারচিত্র বলছে, দাম কমেনি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, চলতি বছর ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আর গত বছর ইলিশের দাম বেড়েছিল ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ গত দুই বছর ধরেই ২৫-২৬ শতাংশ হারে বাড়ছে সাধু ও লোনা পানির এই মাছের দাম।
পাথরঘাটায়ও নাগালের বাইরে ইলিশ
পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, ইলিশ ধরার পর যেসব এলাকায় ট্রলার বা জেলেদের নৌকা এসে থাকে, সেগুলোর অন্যতম বরগুনার পাথরঘাটা। তবে এখানেও ইলিশের দাম চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম কমপক্ষে ২ হাজার ৫০০ টাকা। পাথরঘাটার কৃষক আবদুর আজিজ বলেন, ‘এক কেজি ইলিশ কেনার জন্য দুই মণ ধানের চেয়ে বেশি বিক্রি করতে হয়। বছরে একটি ইলিশও মুখে তুলতে পারি না। এটা এখন ধনীদের খাবার, আমরা শুধু টিভিতেই দেখি। বাজারে গিয়া দাম শুনলেই হাঁসফাঁস লাগে।’
চরদুয়ানী ইউনিয়নের বাসিন্দা কবির খান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ইলিশের উৎপাদন হলেও খাওয়া এখন স্বপ্নের মতো। এক কেজি ইলিশ কিনতে বেতনের তিন দিনের টাকা লাগে।’
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বললেন, ভরা মৌসুম হলেও তিনি নিজেই এ বছর এখনো ইলিশ খেতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রিপন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘ইলিশ এখন বিলাসপণ্য হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রণহীন রপ্তানি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার চাইলে স্বল্প সময়ের জন্য রপ্তানি সীমিত করে রেশনিং পদ্ধতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ইলিশ বাজার চালু করতে পারে।’
‘দুই সপ্তাহ ধইরা পোলাডা ইলিশ মাছ খাওনের লাইগা বায়না ধরছে। কিন্তু ইলিশ কিনার সাহস করতে পারি নাই। আজকা সাহস কইরা আইসিলাম ছোট একটা মাছ কিনতে। কিন্তু তাও পারলাম না। ছোট ছোট ইলিশ মাছের দাম চায় ১ হাজার ২০০ টেয়া। কেমনে কিনমু। এক কেজি ইলিশ কিনলে আমার দুই সপ্তাহের বাজার খরচ শেষ অইয়া যাইব।’
আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন মুগদা বাশার টাওয়ার মোড় বাজারে মাছ কিনতে আসা শাহিদা বেগম। স্কুলপড়ুয়া এক ছেলে ও এক মেয়ে আর শাশুড়িকে নিয়ে পাঁচজনের সংসার তাঁর। নিজে বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন আর স্বামী সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে। দুজনের যে আয়, তাতে নিজেরা ইলিশ মাছ খেতে না পারার আক্ষেপ আগেই ছিল। ভেবেছিলেন মৌসুমে ইলিশের দাম কমলে ছেলেমেয়েদের কিনে খাওয়াবেন। কিন্তু ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে এখন সন্তানদের শখ পূরণ করতে পারছেন না।
এমন আক্ষেপ শুধু শাহিদাদের মতো মানুষেরই নয়, বর্তমান দামে অনেক মধ্যবিত্ত মানুষও ইলিশ কিনতে পারছেন না। বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবারও এক কেজি ওজনের একটা ইলিশ কিনতে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা লেগেছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে। ইলিশের এমন দামে ক্রেতা হারিয়ে বিক্রেতারাও ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে ভিন্ন পথ ধরছেন।
মুগদা বাজারের ইলিশ বিক্রেতা ছাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বছর দু-এক আগেও এই বাজারেই আমিসহ মোট ছয়জন ইলিশ মাছ বিক্রি করতাম। বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার এলে আমাদের প্রত্যেকের দোকানের সামনে ভিড় লেগে থাকত। কিন্তু এখন দুজন বিক্রি করি। তাও খুব বেশি বড় মাছ নেই আমাদের কাছে। ছোট ছোট মাছ নিয়ে বসেছি। এই বাজারে আড়াই শ গ্রাম ওজনের জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের পিপিআরসি গবেষণা অনুসারে, দেশের ৪০ শতাংশ পরিবারের প্রতি মাসের গড় আয় মাত্র ১৪ হাজার ৮৮১ টাকা আর মধ্যবর্তী অবস্থানে থাকা ৪০ শতাংশ পরিবারের মাসের গড় আয় ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। সংসার চালাতে এসব পরিবারের খরচ আয়ের চেয়ে বেশি।
ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসেইন বলেন, এক কেজি ইলিশের দাম যদি ২ হাজার টাকার বেশি হয়, তবে যাঁদের আয় ২৮ হাজার টাকা, তাঁদেরও ইলিশ কেনার সামর্থ্য থাকে না। তার ওপর যদি তাঁদের ব্যয় আয়ের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে তো আরও পারবেন না। সে হিসাবে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষই এখন ইলিশ মাছ কেনার সামর্থ্য হারিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় এ বছর দাম বেশি। সপ্তাহ দু-এক আগে অতিবৃষ্টির কারণে ইলিশ মাছ ধরতে পারছিলেন না জেলেরা। ক্রেতারা আশা করেছিলেন ঝড়বৃষ্টি কমলে দামও কমে আসবে। কিন্তু বাজারচিত্র বলছে, দাম কমেনি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, চলতি বছর ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আর গত বছর ইলিশের দাম বেড়েছিল ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ গত দুই বছর ধরেই ২৫-২৬ শতাংশ হারে বাড়ছে সাধু ও লোনা পানির এই মাছের দাম।
পাথরঘাটায়ও নাগালের বাইরে ইলিশ
পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, ইলিশ ধরার পর যেসব এলাকায় ট্রলার বা জেলেদের নৌকা এসে থাকে, সেগুলোর অন্যতম বরগুনার পাথরঘাটা। তবে এখানেও ইলিশের দাম চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম কমপক্ষে ২ হাজার ৫০০ টাকা। পাথরঘাটার কৃষক আবদুর আজিজ বলেন, ‘এক কেজি ইলিশ কেনার জন্য দুই মণ ধানের চেয়ে বেশি বিক্রি করতে হয়। বছরে একটি ইলিশও মুখে তুলতে পারি না। এটা এখন ধনীদের খাবার, আমরা শুধু টিভিতেই দেখি। বাজারে গিয়া দাম শুনলেই হাঁসফাঁস লাগে।’
চরদুয়ানী ইউনিয়নের বাসিন্দা কবির খান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ইলিশের উৎপাদন হলেও খাওয়া এখন স্বপ্নের মতো। এক কেজি ইলিশ কিনতে বেতনের তিন দিনের টাকা লাগে।’
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বললেন, ভরা মৌসুম হলেও তিনি নিজেই এ বছর এখনো ইলিশ খেতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রিপন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘ইলিশ এখন বিলাসপণ্য হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রণহীন রপ্তানি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার চাইলে স্বল্প সময়ের জন্য রপ্তানি সীমিত করে রেশনিং পদ্ধতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ইলিশ বাজার চালু করতে পারে।’
নদীবেষ্টিত চাঁদপুর শহরে সাঁতার শেখার জন্য একমাত্র সুইমিংপুলটি সংস্কারের কথা বলে সাত বছর ধরে বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এতে সাঁতার প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত শত শত শিশু-কিশোর। ফলে সাঁতার না জানাসহ নানা কারণে চলতি বছরের ৮ মাসে জেলায় পানিতে ডুবে ১৪৫ শিশু প্রাণ হারায়।
২ ঘণ্টা আগেখসে পড়ছে ছাদের পলেস্তারা, বৃষ্টি হলেই ক্লিনিকের চিকিৎসকের কক্ষ ও ল্যাবসহ বিভিন্ন ঘরে ঢোকে পানি। ক্লিনিকের প্রায় সব ঘরের মধ্যে দেখা দিয়েছে ফাটল। বালু-সিমেন্টের আস্তরণ খুলে ঘরগুলোর ছাদ ও দেয়ালের রড বের হয়ে রয়েছে। এমনকি ছাদে ঝোলানো ফ্যানও খসে পড়েছে। এমন অবস্থার মধ্যেই চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ...
২ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের পাঁচটি হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। মামলার বাদীকে খুঁজে না পাওয়া, একাধিক থানায় একই ঘটনার মামলা দায়ের এবং ঘটনাস্থল থানার বাইরে হওয়ায় এই প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেরাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দ্রুতগতির যানবাহনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ওয়াজেদ আলী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৫ ঘণ্টা আগে