Ajker Patrika

বাধ্যতামূলক পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জুন ২০২৪, ২২: ০৭
বাধ্যতামূলক পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের

সর্বজনীন পেনশন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল না হওয়ায় আগামী ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবন ফটকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া।

এ সময় হল, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও গবেষণাকেন্দ্রের কার্যক্রমে কোনো শিক্ষক অংশ নেবেন না বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনের আগে কর্মসূচির অংশ হিসেবে অর্ধবেলা কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা।

এ সময় ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, কলা অনুষদ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকেরা বিভাগে যাননি এবং কোনো ধরনের একাডেমিক কাজেও অংশ নেননি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিজামুল বলেন, ‘আগামী ২৪ জুনের মধ্যে প্রত্যয় স্কিম প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া না হলে, সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হবে। তবে পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হবে এবং সেদিনও পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, ঢাবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রহিম, টেলিভিশন ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া, পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান প্রমুখ।

কেন শিক্ষকেরা সর্বজনীন পেনশন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন এ বিষয়ে চাইলে অধ্যাপক জিনাত হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন যখন ঘোষণা করা হয়, তখন আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। কিন্তু শিক্ষকেরা তো আগে থেকে পেনশনের অন্তর্ভুক্ত। তাদের আবার কেন প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করা হলো!’

তিনি আরও বলেন, ‘একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে নতুন নিয়মের কারণে শিক্ষকেরা বৈষম্যের শিকার হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন রয়েছে, সেখানে প্রত্যয় স্কিম স্বায়ত্তশাসনের বিরোধী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অবসরকালে একটা ভাতা পাবেন। প্রত্যয় স্কিম চালু হলে শিক্ষকদের সম্মানটুকু আর রইল না। যারা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করায় ভূমিকা রাখবে, তাদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।’

চলতি বছরের ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রত্যয় স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আগামী ১ জুলাই থেকে নিয়োগপ্রাপ্তরা এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবেন।

এই স্কিমের প্রতিবাদ জানিয়ে ২৬ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ ছাড়া নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন সময় কর্মবিরতিও পালন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত