Ajker Patrika

গার্মেন্টস কর্মীর ছদ্মবেশে ৮ বছর আত্মগোপন, অবশেষে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২, ১৭: ৩৬
গার্মেন্টস কর্মীর ছদ্মবেশে ৮ বছর আত্মগোপন, অবশেষে গ্রেপ্তার

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের চাঞ্চল্যকর হালিম খান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মবজেলকে (৩৩) ঢাকা জেলার ধামরাই থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। দীর্ঘদিন ধরে গার্মেন্টস শ্রমিকের ছদ্মবেশে থাকা মবজেলকে গত বৃহস্পতিবার ধামরাই থানার ইসলামপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক পুলিশের ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

মোজাম্মেল হক জানান, হালিম হত্যা মামলার আসামি মবজেলসহ তিন আসামি স্থানীয় বখাটে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। হত্যার শিকার হালিম খান (৩০) মানিকগঞ্জ সদর ও হরিরামপুর এলাকায় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। ঘটনার ৭-৮ দিন আগে মবজেলসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ভাড়া নিয়ে হালিমের কথাকাটাকাটি ও মারামারি হয়। এতে হালিমের ওপর মবজেলসহ অন্যরা ক্ষিপ্ত ছিলেন। এরই জেরে হালিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৪ সালের ১৪ মার্চ মবজেল ও ছমির মানিকগঞ্জ সদরের বলড়া এলাকা থেকে হরিরামপুর উপজেলায় ওয়াজ-মাহফিলে যাওয়ার কথা বলে হালিমের মোটরসাইকেল ভাড়া করে। মাহফিল শেষে বাড়ি ফিরবে বলে তারা হালিমকে অপেক্ষা করতে বলেন।

গভীর রাতে মবজেল ও ছমির হালিমের মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। হরিরামপুর সদর থানা থেকে কিছু দূর আসার পথে আগে থেকে অপেক্ষারত হত্যা মামলার আসামিরা পথ রোধ করে হালিমের গাড়ি থামায়। এর পর হালিমের মুখ চেপে পদ্মা নদীর চরে নিয়ে যায় এবং হালিমের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হালিমের হত্যা নিশ্চিতের জন্য তারা হালিমের হাত ও পায়ের রগ কেটে ফেলে। এর পর মরদেহ সেখানেই ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে রেখে হালিমের মোটরসাইকেল নিয়েই পালিয়ে যায় তারা।

ঘটনার দিন রাতে হালিম বাড়ি না ফিরলে তাঁর পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। অনেক খুঁজেও পেয়ে পরদিন ১৫ মার্চ হালিমের স্ত্রী ফরিদা হরিরামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। হরিরামপুর থানা-পুলিশ ১৮ মার্চ ছমিরকে হালিমের মোটরসাইকেলসহ আটক করে এবং ছমিরের স্বীকারোক্তি মোতাবেক হরিরামপুর থানার অদূরে পদ্মা নদীর চরে ঝোপের মধ্য থেকে হালিমের মরদেহ উদ্ধার করে। হরিরামপুর থানা-পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ছমির ঘটনার সঙ্গে মবজেল জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় হালিমের স্ত্রী ফরিদা বাদী হয়ে মবজেল ও তিনজন আসামির বিরুদ্ধে হরিরামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সেই মামলা তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। আদালত হালিমকে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে ২০১৭ সালের এপ্রিলে মবজেলকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। এ ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে পলাতক ছিলেন মবজেল। 

মোজাম্মেল হক বলেন, গ্রেপ্তার আসামি মবজেল দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট। তাঁর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ধামরাই এলাকায় বসবাস করতেন। ২০১৪ সালের পর থেকে তিনি আর কোনো দিন মানিকগঞ্জ যাননি। গত ৮ বছর আসামি মবজেল ঢাকা জেলার সাভার, আশুলিয়া, ধামরাইসহ বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। এই সময়ে তিনি নিজের পরিচয় গোপনের জন্য ক্রমাগত পেশা পরিবর্তন করেছেন।

প্রথমদিকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন। গত কিছুদিন ধরে ধামরাই থানার ইসলামপুরের একটি গার্মেন্টসে পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

জম্মু-কাশ্মীরে ধ্বংস করা হলো ৪৪ হাজার কেজি রসগোল্লা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত