Ajker Patrika

যন্ত্রপাতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অনন্ত নিটওয়্যারের এমডিসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঠিকাদারের মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অনন্ত নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির। ছবি: সংগৃহীত
অনন্ত নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির। ছবি: সংগৃহীত

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পোশাকশিল্প রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অনন্ত নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরীফ জহিরসহ চারজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে মামলাটি দায়ের হয়।

সাদ ৩৬০-ডি ইঞ্জিনিয়ারস অ্যান্ড আর্কিটেক্টস নামে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিজনেস কো-অর্ডিনেটর মো. আলী আজগর খান মোজাহেদী মামলাটি দায়ের করেন।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনসকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে— অনন্ত নিটওয়্যার লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ জহির, চিফ অপারেটিং অফিসার সৈয়দ মনির ও অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ মে অনন্ত নিটওয়্যার লিমিটেডের নরসিংদীর শিবপুরের একটি প্রকল্পে ফ্যাক্টরি শেড, অফিস বিল্ডিং ও প্রকল্পের অভ্যন্তরে সড়ক নির্মাণের জন্য নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাদ ৩৬০-ডি ইঞ্জিনিয়ারস অ্যান্ড আর্কিটেক্টস-এর সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বাদীর প্রতিষ্ঠান আসামিদের নকশা অনুযায়ী নির্মাণ কাজ শুরু করে। কাজ চলা অবস্থায় গত ৩১ অক্টোবর রাত ১১টা ১৬ মিনিটে আসামিদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চিফ অপারেটিং অফিসার সৈয়দ মনির একটি ইমেইল পাঠিয়ে বাদীকে নির্মাণ কাজ পরদিন থেকে বন্ধ রাখতে বলা হয়। কিন্তু গভীর রাতে ই-মেইল পাঠানোতে বাদীর শ্রমিক-কর্মচারীরা না জেনে পরদিন কাজ করতে যান। আসামিদের লোকজন বাদীর শ্রমিক-কর্মচারীকে প্রকল্পের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে তাঁদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন। এরপর আর বাদীর প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ কাজ করতে দেওয়া হয়নি। এদিকে বাদীর কাজের জন্য প্রকল্পের অভ্যন্তরে থাকা আনুমানিক এক কোটি টাকার মালামাল ও যন্ত্রপাতিও আসামিরা প্রকল্পের মধ্যে আটকে রাখে।

বাদী মামলার অভিযোগে আরও বলেন, এর আগে তাঁদের দাখিল করা এক কোটি ৮৯ লাখ ৬৪ হাজার ৭২৫ টাকাও আসামিরা পরিশোধ করেননি।

এরপর উকিল নোটিশ দিয়ে আসামিদের বাদীর পাওনা টাকা পরিশোধের এবং প্রকল্পের ভেতরে থাকা যন্ত্রপাতি ও মালামাল ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানান।

আসামিরা এ পর্যন্ত বাদীর টাকা পরিশোধ না করায় এবং প্রকল্পের ভিতরে থাকা মালামাল ও যন্ত্রপাতি ফেরত না দেওয়ায় সেগুলো প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

বাদী মো. আলী আজগর খান মোজাহেদী বলেন, অনন্ত নিটওয়্যার লিমিটেডের কর্মকর্তারা প্রকল্পের মধ্যে আটকে থাকা বাদীর মালামাল ও যন্ত্রপাতি ফেরত নেওয়ার কথা বললেও বাদীর শ্রমিকেরা সেখানে গেলে তাঁদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। আসামিরা বাদীর যন্ত্রপাতি ও মালামাল এবং তাদের পাওনা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছেন বলে তিনি বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) শরীফ জহির ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবগুলোর (যা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডসহ) লেনদেন স্থগিত করার নির্দেশ দেন। সিআইসির এই ধরনের পদক্ষেপ সাধারণত বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম বা কর ফাঁকির সন্দেহে নিয়ে থাকে।

শরীফ জহির ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...