Ajker Patrika

মায়ের 'ভুলে' প্রাণ গেল সন্তানের 

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
মায়ের 'ভুলে' প্রাণ গেল সন্তানের 

নবজাতক শিশুটির নাম আয়ান। বয়স ছিল মাত্র ১৬ দিন। শিশুটির মায়ের নাম সাকিলা বেগম ও বাবার নাম ইদ্রিছ মিয়া। ইদ্রিস ও সাকিলা দম্পতির প্রথম সন্তান ছিল আয়ান। গেল ৫ নভেম্বর শুক্রবার দুপুরে শিশুটির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ভৈরব শহরের কালিপুর গ্রামের মধ্যপাড়া মহল্লায়। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে নিহত শিশুটির বাবা-মা কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকা হলে ঘটনার ৫ দিন পর বেড়িয়ে আসে শিশু মৃত্যুর আসল রহস্য। 

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন শিশুটিকে শৌচাগারের বালতির পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি প্রচার করা হয় ঘুমন্ত মায়ের কোল থেকে শিশুটিকে কে বা কারা নিয়ে বালতির পানিতে ফেলে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

পুলিশ শিশুটির পরিবারের বরাত দিয়ে জানায়, মা সাকিলা বেগম শিশু সন্তান আয়ানকে ঘটনার দিনদুপুরে গোসল করাতে শৌচাগারে নিয়ে যান। এ সময় মা সাকিলার অসাবধানতায় হঠাৎ হাত থেকে শিশু আয়ান পানি ভর্তি বালতিতে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মা শিশুটিকে বালতি থেকে তুলে নিয়ে দেখতে পান শিশুটি আর বেঁচে নেই। পরে স্বামী ও শাশুড়ির ভয়ে সাকিলা শিশুটিকে বালতির পানিতে রেখে রুমে চলে যান এবং ঘুমের ভান ধরে শুয়ে থাকে। ঘটনাটির সময় কেউ কাছে ছিলেন না।

সাকিলা এ ঘটনায় ভয় পেয়ে যান এবং নাটক সাজিয়ে বলেন, আমি সন্তানকে কোলে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুমন্ত অবস্থায় কে বা কারা আমার সন্তানকে কোল থেকে নিয়ে বালতির পানিতে ফেলে দিয়েছে।

সাকিলার কথায় স্বামী ও শাশুড়িও যোগ দেন। সাকিলার স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী ভয়ে কাউকে কিছু না বলে চুপ ছিল। 

অবশেষে নবজাতকের মৃত্যুর রহস্য সামনে আসে। পুলিশের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন শিশুটির বাবা-মা। ঘটনার বিবরণ শুনে পুলিশও অবাক হয়ে যায়।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন জানান, ঘটনার ৫ দিন পর বুধবার রাতে শিশুটির মা-বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকা হয়। এ সময় শিশুটির বাবা ইদ্রিছ মিয়া বলেন, আমার স্ত্রীর ভুলের কারণে আমার সন্তান মারা গেছে। সে ভয়ে এত দিন সত্য কথা বলেনি। পরে সে আমাকে বিষয়টি জানায়, শিশুটিকে গোসল করানোর সময় অসাবধানতাবশত বালতির পানিতে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। তারপর নিজের ভুল ঢাকতে ভয়ে সে বলেছিল কে বা কারা শিশুটিকে বালতিতে ফেলে হত্যা করে। এ সময় থানায় স্বামীর সঙ্গে তার স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাটি সত্য বলে সাকিলা  স্বীকার করেন। 

ওসি মো. শাহিন আরও বলেন, আমি দু'জনের কথা শুনে অবাক হয়েছি। তবে, শিশুটিকে মা হত্যা করেনি বলে মনে হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত