Ajker Patrika

কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ঢাবি শিক্ষার্থী হলছাড়া, অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২: ৩৫
কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ঢাবি শিক্ষার্থী হলছাড়া, অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

ছাত্রলীগের নিয়মিত কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইনামুল ইসলাম নোমানকে হল ছাড়া করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাইনুল ইসলাম অনিক এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ।

অনিক আসন্ন হল ছাত্রলীগের কমিটিতে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী।

হল ছাড়া করার অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইনামুল। তিনি লেখেন, ‘প্রোগ্রাম করিনি বলে আমার শ্রদ্ধেয় সিনিয়রগণ নাকি আমার সিট ক্যান্সেল করে আরেকজনকে দিয়েছেন। অতি চমৎকার ব্যাপার!’

আরেক স্ট্যাটাসে ইনামুল লেখেন, ‘অবশেষে হল লাইফের সমাপ্তি ঘটানো হলো। ইচ্ছা ছিল ডিসেম্বরে মাস্টার্স শেষ করেই হল ত্যাগ করব, কিন্তু মাস্টার্স শেষ হওয়ার আগেই হল ছাড়তে বাধ্য করা হলো। করোনা প্যানডেমিকের সময় বাদ দিয়ে একটা লম্বা সময় হলে থেকেছি। এই সময়ে অনেক সিনিয়র, জুনিয়র ও বন্ধু পেয়েছি। পলিটিক্যাল ভাব ধরা সিনিয়রদের প্রতি আমার কখনো মন থেকে সম্মান আসেনি, ওনাদের দেখলেও কোনো দিন মন থেকে সম্মান করতে পারব বলেও মনে হয় না। তবে অনেক সিনিয়রকে পেয়েছি, যাঁরা কখনোই সিনিয়রিটি দেখানোর চেষ্টা করেননি, বরং ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করেছেন, তাঁদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। হল লাইফে ১০৪, ১০৯, ১২০, ২১৮, ৫০৪, ৫০৬, ৪১৩ (ক) ও টিভি রুমে থেকেছি। এর মধ্যে ১০৪ ও ৫০৬ নম্বর রুমে অতিবাহিত করা সময়গুলো বেশ ভালো ছিল এবং রুমমেট ভাই ও বন্ধুরা ছিল অসাধারণ।’

ঢাবির এই শিক্ষার্থী আরও লেখেন, ‘হলে অবস্থানকালে একটি বিশেষ ছাত্র সংগঠনের দাসত্ব স্বীকার করেই থাকতে হতো। ক্লাসের থেকেও তাদের রাজনৈতিক প্রোগ্রামকে বেশি গুরুত্ব দিতে হতো। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সমর্থনের বিনিময়ে তারা সিট দিত; যদিও সিট দেওয়া বা নেওয়ার তারা কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষ নয়। খুব মজার ব্যাপার হলো, যে সিনিয়ররা আমার সিট বাতিল করেছে, তাদের নিজেদেরই হলে বৈধতা নেই; অথচ আমার আরও চার মাস বৈধতা ছিল হলে থাকার। আমার সিট বাতিল করার কারণ, আমি নাকি তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উপস্থিত হয়ে সমর্থন দিতে ব্যর্থ হয়েছি, তাই তারা চাইছে না তাদের একটি সিট দখল করে রাখি। যাই হোক, আশা করি একদিন এই জঘন্য সংস্কৃতির অবসান ঘটবে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঠিক অক্সফোর্ডের মতোই রূপ ফিরে পাবে।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাইনুল ইসলাম অনিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ও (ইনামুল) নিজে থেকে হল ছেড়ে দিয়েছে। তাকে বলেছি হলে এসে আমার সঙ্গে দেখা করতে, কিন্তু সে করেনি। বর্তমানে তার সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না।’

বিষয়টি নিয়ে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘ছাত্রলীগে এ ধরনের কাজ করার সুযোগ নেই। বিষয়টি দেখব এবং অভিযোগের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেব।’

সার্বিক বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তার সিট ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত