Ajker Patrika

এক ব্যক্তিকে রাতভর মারধর ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে 

জাবি প্রতিনিধি
এক ব্যক্তিকে রাতভর মারধর ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিকে মারধর ও রাতভর আটকে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক এলাকা থেকে ভুক্তভোগীকে পরিবারের সামনে মারধর করে রিকশায় করে তুলে আনা হয়। পরে, মাওলানা ভাসানী হল সংলগ্ন একটি জঙ্গলে (সুইজারল্যান্ড) তাঁকে আট ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। 

গতকাল রোববার রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আবাসিক এলাকা রাঙামাটিতে নিজ বাসায় ফরিদ হোসেন ওরফে পাঞ্চু নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। পরে, রাত দেড়টায় ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন তাঁরা। পরবর্তীতে, মাদক ব্যবসার অভিযোগ দিয়ে সুইজারল্যান্ড থেকে আজ সোমবার ভোর ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে পাঞ্চুকে হস্তান্তর করা হয়। 

পাঞ্চু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাউজিং সোসাইটিতে (অরুনাপল্লি) নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করতেন। এখন অসুস্থ থাকায় নিরাপত্তা রক্ষার কাজ করেন না। তাঁর শাশুড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহনারা ইমাম হলে বাবুর্চী হিসেবে কর্মরত। এ কারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় থাকতেন। 

পাঞ্চুর স্ত্রী শিরিন আক্তারের দাবি, তাঁর স্বামী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতা তাঁর স্বামীকে মাদক ব্যবসার জন্য চাপ দিতেন। 

শিরিন আক্তার বলেন, ‘মাদক ব্যবসা করতে রাজি না হওয়ায় গত ৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র সাব্বির হোসেন ও মেহেদী হাসান জয় আমার স্বামীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। স্বামীর কাছে যা টাকা ছিল তা নিয়ে নেন। পরে গতকাল রাত ৮টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার স্বামীকে মেরে তুলে নিয়ে যান। আমি ওই শিক্ষার্থীদের চিনি না তবে আমাদের সন্দেহ সাব্বির আর জয় যেহেতু আগে মাথা ফাটিয়েছিলেন তারাই এই কাজ করতে পারে।’ 

গতকাল রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র এসে পাঞ্চুকে মারধর করে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁরা বলেন, ‘মারধর করে রিকশায় ওঠানোর সময় পাঞ্চুর স্ত্রী ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও তাঁকে নিয়ে যান ওই ছাত্ররা।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রের সঙ্গে পাঞ্চু ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন নাহিদ বলেন, ‘আমি মারধর ও মুক্তিপণ আদায়ের সঙ্গে জড়িত না। রাতে যে সময়ে পাঞ্চুকে তুলে আনা হয়েছে তখন আমি প্রীতিলতা হলে ছাত্রলীগের কর্মী সভায় ছিলাম।’ মেহেদী হাসান জয়ও একই কথা বলেন। 

এদিকে আজ ভোর ৫টায় দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী নূর এ আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওলানা ভাসানি হলের বিপরীতে সুইজারল্যান্ড এলাকা থেকে পাঞ্চুকে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘ভোর চারটার দিকে নিরাপত্তা শাখা থেকে আমাকে জানানো হয় তখন আমি ওই ব্যক্তিকে (পাঞ্চু) নিয়ে আসি। তখন সেখানে চারজন ফরিদকে আমার কাছে হস্তান্তর করে যদিও তাঁদের কাউকে আমি চিনি না। তবে দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই মনে হয়েছে। ফরিদকে আনার সময় কিছু ইয়াবা এবং এক বোতল ফেনসিডিলও দিয়ে দেওয়া হয়।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) জেফরুল হাসান চৌধুরি সজল বলেন, ‘আজ ভোরে এই ঘটনা জানতে পারি। মাওলানা ভাসানি হলের ৪৪ ব্যাচের নাঈম আমাকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানায় তখন আমরা একজন নিরাপত্তা রক্ষীকে সেখানে পাঠাই। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করে এবং তাঁকে নিরাপত্তা শাখা থেকে নিয়ে যায়।’ 

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ফরিদ হোসেন ওরফে পাঞ্চু বলেন, ‘গতকাল শহীদ রফিক-জব্বার হলের সাজ্জাদ হোসেন, মাওলানা ভাসানি হলের নাঈম, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের তৌহিদুল ইসলাম তাকীদ এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আল রাজি সরকার আমাকে মারধর করে নিয়ে যান। সেখানে সাব্বির হোসেন নাহিদ ও মেহেদী হাসান জয় ছিল না কিন্তু যারা আমাকে মারধর করে উঠিয়ে নিয়ে আসেন তারা সাব্বির আর জয়ের সঙ্গে পুরো সময় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেছিল।’ 

ফরিদ হোসেন আরও বলেন, ‘ওই চারজন আমাকে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইজারল্যান্ড এলাকায় নিয়ে অনেক মারধর করেন। আমার পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে আমাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা হয়। রাত দেড়টার দিকে আমার পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দেন, তখনো তাঁরা আমাকে ছাড়েনি। পরে ভোরে তাঁরা কিছু নকল ইয়াবা ও একটি বোতলে পানি ভরে ফেনসিডিল নামে চালিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে দেয় আমাকে।’ 

ফরিদ হোসেনকে মারধর করে তুলে আনার ক্ষেত্রে ফরিদ হোসেন যাদের নাম বলেছেন তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। উঠিয়ে নিয়ে আসার মধ্যে শহীদ রফিক-জব্বার হলের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থী জাবি ছাত্রলীগের অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাকীদ, মাওলানা ভাসানি হলের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের সহসভাপতি এহসান ইমাম নাঈম, মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক আল রাজি সরকার। 

তাদের নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাব্বির হোসেন নাহিদ ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জয়। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট নেতাদের মোবাইল ফোনে কল করা হলে অনেককে পাওয়া যায়নি। তবে জাবি ছাত্রলীগের অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাকীদ বলেন, ‘আমি পাঞ্চুকে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে জানি। তাঁর সঙ্গে আমার কোনো খাতির নেই। কারণ ইয়াবা অপছন্দ করি। আর গতকাল মারধরের প্রশ্নই আসে না। গতকাল বিকেলেই আমি ঢাকা শহরে চলে আসি। এখনো সেখানে আছি।’ 
 
ছাত্রলীগের সহসভাপতি এহসান ইমাম নাইম বলেন, ‘আমার নামে এসব অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানি না। এখানে আমার নাম কীভাবে এল সেটাও জানি না। আজ ভোরের দিকে সুইজারল্যান্ড এলাকায় হট্টগোলের শব্দ শুনতে পেলে নিরাপত্তা শাখা থেকে বিষয়টি জানতে পারি।’ 

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ উপপরিদর্শক নুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে সবগুলো ইয়াবা মনে হয়নি, নকলও রয়েছে। তবে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের এটা পরীক্ষা করতে হবে। ইতিমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে মাদক সংশ্লিষ্টতার মামলা করেছে পাঞ্চুর বিরুদ্ধে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুর সিটির উন্নয়নে আসছে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প: নগর প্রশাসক

গাজীপুর প্রতিনিধি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠসহ মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।  ছবি: সংগৃহীত
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠসহ মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরীর অবকাঠামো, শিক্ষা ও জনসেবার মান উন্নয়নে শতকোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠসহ মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

শরফ উদ্দিন বলেন, নগর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতি আনতে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরের রাস্তা, ড্রেনেজ, জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হবে।

এ সময় ইজতেমা ময়দানে বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্মাণাধীন শেড, মেঘনা মাঠে স্কুল ও খেলার মাঠ নির্মাণের অগ্রগতি, এবং ‘প্রত্যাশা প্রকল্পে’র আওতাধীন বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নকাজ সরেজমিনে ঘুরে দেখেন প্রশাসক।

পরিদর্শন শেষে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজের মান বজায় রেখে দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব মো. আমিন আল পারভেজ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ ও সুদীপ বসাক, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন ও জহিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সোহেল রানা এবং অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তারা।

পরে প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ তুরাগ নদের উত্তর তীরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং টঙ্গীর প্রস্তাবিত সিটি করপোরেশন স্কুল পরিদর্শন করেন। তিনি স্কুলটির নির্মাণ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ডাস্টারের আঘাতে আহত রাফিউর রহমান আহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডাস্টারের আঘাতে আহত রাফিউর রহমান আহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর উত্তরায় ক্লাসে শিক্ষক কর্তৃক ডাস্টার নিক্ষেপের ঘটনায় রাফিউর রহমান আহাদ (১৭) নামের এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে।

উত্তরার ‘উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে’ রোববার (৯ নভেম্বর) বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ছাত্রটিকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে তাকে চিকিৎসাধীন দেখা যায়।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্র উত্তরা হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম (রিপ) প্রতিষ্ঠানটির পৌরনীতি বিষয়ের শিক্ষক।

আহত ছাত্র রাফিউর রহমান আহাদ আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘রফিকুল স্যার আমাদের ক্লাস নিচ্ছিলেন। ওই সময় আমার সামনের বেঞ্চে বসা এক ছেলে তার পাশের জনের সঙ্গে কথা বলছিল। তখন রফিক স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাতে থাকা ডাস্টার ছুড়ে মারে। পরে সামনের বন্ধুটি দেখতে পেয়ে সরে যায়। আর সেটি এসে আমার মাথায় লাগে।’

আহাদ আরও বলে, ‘আমি বেঞ্চ থেকে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম। হুঁশ ফিরলে দেখি, সামনের ব্যাগ রক্তে লাল হয়ে গেছে। মাথায় হাত দিয়ে দেখি, হাতও রক্তের ভিজে গেছে। পরে আমার শার্টসহ পরনের জামাকাপড় রক্তে একাকার হয়ে যায়। আমার বন্ধুরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করায়।’

আহত ছাত্রের বড় বোন খাদিজা রহমান হেরা বলেন, ‘আজকে আমার ছোট ভাই যথারীতি কলেজে যায়। ওর টিফিন টাইম আড়াইটায়। কিন্তু বেলা ২টায় ওর ফোন থেকে কল আসে। তারপর ওর বন্ধুরা বলে, আহাদ অনেক অসুস্থ, ওরে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি। আপনারা আসেন। হাসপাতালে এসে দেখি, ওর সারা শরীর রক্তে মাখা। মাথায় সেলাই চলছে।’

খাদিজা রহমান হেরা বলেন, ‘পরে জানতে পারলাম, রফিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক অন্য ছাত্র দুষ্টুমি করার অপরাধে আমার ভাইকে মারধর করেছে।’ ভাইয়ের ওপর আক্রমণের বিচার চেয়ে খাদিজা বলেন, ‘আমরা থানায় যাচ্ছি অভিযোগ দিতে।’

অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের করা যায়নি। তার ভাই আবু বক্কর জানান, রফিক সাহেব ফোনটি বাসায় রেখে বাইরে গেছেন।

শিক্ষকের মারধরে ছাত্র রক্তাক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলেই প্রতিষ্ঠানটির সামনে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দেন, যদি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে তারাই বিচার করবে।

এ বিষয়ে উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষক রফিকুল এক ছাত্রকে ডাস্টার দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। এতে ওই ছাত্র আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমিও গিয়েছিলাম।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষককে ক্লোজড করেছি। বিষয়টি চেয়ারম্যান স্যারকে অবগত করেছি। মোটকথা তাঁকে প্রতিষ্ঠান থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪০ বিএনপি প্রার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

সিলেট প্রতিনিধি
সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪০ বিএনপি প্রার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত) অংশ নেওয়া বিএনপির ৪০ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার (৯ নভেম্বর) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে নেতাদের প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, বিএনপি ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল। কিন্তু বিএনপির ৪০ নেতা তাতে অংশ নেওয়ায় তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত নেতারা দলের হাইকমান্ডের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁদের সেই আবেদন ও দলের প্রতি তাঁদের অবদান বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ তৌফিকুল হাদী ও মুফতি কমর উদ্দীন কামু; ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান মিঠু; ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কামাল মিয়া, খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন ও শাহেদ সিরাজ; ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরহাদ চৌধুরী শামীম; ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাঈদুর রহমান জুবের; ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহিম মতছির; ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম মুনিম; ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মুজিবুর রহমান; ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সালমান চৌধুরী শাম্মী; ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বদরুল আজাদ রানা; ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মামুনুর রহমান মামুন; ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির সুহিন; ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অ্যাডভোকেট রুকশানা বেগম শাহনাজ; ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম আহমদ রনি; ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলী আব্বাস; ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফা কামাল ও সাহেদ খান স্বপন; ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জাবেদ আমিন সেলিম, রাজু মিয়া ও সানর মিয়া; ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আবদুল মুকিত; ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানভীর ও দুলাল আহমদ; ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের গউছ উদ্দিন পাখী ও দেলওয়ার হোসেন নাদিম; ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের দিলওয়ার হোসেন জয়; ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের উসমান হারুন পনির; ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলতাফ হোসেন সুমন; ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল হাছিব এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সুমন আহমদ সিকদার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতের চার আঙুল কেটে নিল প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০১: ৫২
হাসপাতালে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
হাসপাতালে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক কিশোর গ্যাং সদস্যের হাতের চারটি আঙুল কেটে নিয়েছে আরেক গ্রুপের সদস্যরা।

গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে টঙ্গীর ভরান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আঙুল বিচ্ছিন্ন হওয়া গ্যাং সদস্যের নাম তাসরিফ (২৫)। এ ঘটনায় একই গ্রুপের আরও দুই সদস্য আবীর (২৪) ও সিয়াম (২৪) আহত হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে পুলিশ জানায়, রাত ৮টার দিকে টঙ্গীর ভরান এলাকায় দুটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা জড়ো হয়। পরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ‘ভরানের সৈকত বাহিনী’ নামের গ্যাংয়ের সদস্যরা ‘তাসরিফ বাহিনীর’ প্রধান তাসরিফের বাঁ হাতের চারটি আঙুল কেটে নেয়। এ সময় আবীর ও সিয়ামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় তারা।

ঘটনার একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে আহত তিন তরুণকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনবার্সন (নিটোর) হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘দুটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দুই দফায় সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত