Ajker Patrika

ডিশ ব্যবসার আড়ালে জমি দখল ও মাদক কারবার চালাতেন কালা জরিপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২১: ২৩
ডিশ ব্যবসার আড়ালে জমি দখল ও মাদক কারবার চালাতেন কালা জরিপ

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ হাসনাবাদ এলাকায় দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের জমি দখল, মাদক কারবারের অভিযোগে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি জরিপ মিয়া ওরফে কালা জরিপকে (৪০) সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় জরিপের তিন সহযোগী মো. আনিসুর রহমান (৩৮), মো. জাহিদ ওরফে বাবু মন্ডল (৪৫) ও ঝুমুর আক্তারকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বুধবার বিকেলে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি গুলি, একটি টেজার গান, একটি এয়ার পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র, ৫৮০টি ইয়াবা, চার বোতল বিদেশি মদ, একটি পাজেরো, সাতটি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক বলেন, কালা জরিপ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় ডিশ ব্যবসার আড়ালে সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করতেন। তাঁর বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির জমি জোরপূর্বক দখল ও লিখিয়ে নিতেন। এ ছাড়া এলাকায় মাদক কারবার চালিয়ে আসছিলেন। চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তার জরিপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, মারামারি, চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলাসহ অন্তত ২২টি মামলা রয়েছে।

মোহাম্মদ ফরিদ জানান, জরিপের সহযোগী আনিছুর রহমানের একই এলাকার ওয়ার্কশপ রয়েছে। তিনি ব্যবসার আড়ালে জরিপের সঙ্গে মাদক কারবারসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর বিরুদ্ধেও মাদক ও হত্যার দুটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আরেক সহযোগী মো. জাবিদ ওরফে রহিম একই উপজেলার বসুন্ধরা রিভার ভিউ এলাকায় গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে জরিপের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘হাসনাবাদ সুপার মার্কেটে তাঁর টর্চার সেলে প্রায় সময় নারীদের নিয়ে ফুর্তি করতেন তিনি। সেখান থেকে অভিযানের সময় ঝুমুর নামে এক নারীকে পাওয়া যায়। ঝুমুর প্রায় তাঁদের সঙ্গে ফুর্তিবাজি করতেন।’

জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করছে, এমন কোনো ভুক্তভোগীকে পেয়েছেন কি না? জানতে চাইলে র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক বলেন, ‘পতিতাবৃত্তি বাংলাদেশের আইনে অবৈধ। সেটা জোর করে আনুক আর স্বেচ্ছায় বা পয়সার বিনিয়মে আনুক, সেটা অবৈধ। কোনো ব্যক্তি যদি বিবাহবহির্ভূত কোনো নারীর সঙ্গে নিয়মিত মেলামেশা করে, তাহলে সেটি আইনের চোখে অপরাধ বটে।’

জরিপের পেছনে ইন্ধনদাতা কে বা কারা জানতে চাইলে মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, র‍্যাবের তদন্তে উঠে এসেছে, জরিপ নিজেই একজন বড় সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আসছিল। হাসনাবাদ সুপার মার্কেটটি তাঁর কথিত সম্পত্তি। এটাও তিনি দখল করে রেখেছেন। তাঁর একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। ওই বাহিনীতে ২২ সদস্য যুক্ত থাকার তথ্য ও নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। যাদের দিয়ে জরিপ সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তথ্য অনুযায়ী জরিপের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মামলা বিচারাধীন।

তাঁর বিরুদ্ধে দায়ে করা মামলায় যারা সাক্ষী হিসেবে ছিলেন, প্রতিনিয়ত তাঁদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। মূলত তিনি এলাকায় ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছেন।

তাঁর টর্চার সেলে আগে বিভিন্ন সময় একাধিক নারীকে নির্যাতন করার অভিযোগও রয়েছে। ইতিপূর্বে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মামলায় জামিন নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর অপরাধ তৎপরতা কেউ থামাতে পারেননি।

তাঁর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না জানতে চাইলে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সে অপরাধী, এটাই তার পরিচয়। তবে তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আমরা পাইনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

সারজিস আলমের পোস্ট: সেই সাবরেজিস্ট্রারের অফিসে দুদকের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত