Ajker Patrika

দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলায় সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনের জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলায় সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনের জামিন

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ ও মহানগর দায়রা জজ আস-সামছ জগলুল হোসেন জামিন দেন।

ঢাকা টাইমস এর চিফ রিপোর্টার রুদ্র রাসেল আজকের পত্রিকাকে জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরিফুর রহমান দোলন ‘ঢাকা টাইমস’ পত্রিকার সম্পাদক। বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহসভাপতি এবং গত জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুরে সংসদ সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

এর আগে গত ৫ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।  শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে এই মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আরিফুর রহমান দোলন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন পান। ছয় সপ্তাহ পর হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

আজ বুধবার শুনানিতে দোলনের আইনজীবীরা বলেন, এই মামলায় তাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য জড়ানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের কোনো অভিযোগ নেই।

এই মামলাটিতে সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরসহ ৪৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে শুনানির আগামী ২২ এপ্রিল দিন ধার্য রয়েছে।

গত বছর ২৫ জুন এই মামলায় সম্পূরক অভিযোগ পত্র দাখিল করে সিআইডি। সম্পূরক অভিযোগ পত্রে নতুন ৩৭ জন আসামি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আগের অভিযোগ পত্রে ১০ জন আসামি ছিলেন।

এই মামলায় ৪৭ আসামির মধ্যে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমানসহ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী রয়েছেন।

গত বছর ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২২ সালের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। এ ছাড়া, মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন তারা। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন ওই দুই ভাই। 

উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন তারা। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।

পরে এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য নির্ধারিত তারিখে রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মাহমুদ হাসান একটি দরখাস্ত দিয়ে আদালতকে জানান, এই মামলায় ৬ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে অর্থ পাচারের দায় স্বীকার করেছেন। এরমধ্যে আসামি নিশান মাহমুদ শামীম ও বিল্লাল হোসেন স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন। কিন্তু তাদেরকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

অন্যদিকে অন্যান্য আসামির স্বীকারোক্তিতে অর্থপাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়ে গেছে এমন কয়েকজনের নাম বলেছেন। তাদেরকেও মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আদালত শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।  পরে অধিকতর তদন্ত শেষে আরও সাইত্রিশজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত