জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
পৈতৃক ব্যবসা, কিন্তু হাবিব সেই ব্যবসায় খুব সক্রিয়। বাবা বসেন ক্যাশে, হাবিব এত দিন বিভিন্ন বাজার থেকে মাল কিনে আনতেন, ‘কাস্টমারদের’ বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসতেন। কিন্তু সামনে আলু-পেঁয়াজের মধ্যে যে চাচা বসতেন, তিনি হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই, চলে গেছেন বিদেশে, ভাগ্যপরীক্ষায়। ফলে হাবিবের বাড়তি কাজ যোগ হয়েছে বেশি সময়ের জন্য দোকানে বসার। আগে দোকানে বসতেন কম, এখন বেশিক্ষণ বসতে হয়।
করোনা শুরুর সময়টা হাবিবের জন্য ছিল এক শিক্ষা। সে সময়ই মূলত ক্রেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাল পৌঁছে দেওয়ার কাজটা শুরু করেন। এতে দুই পক্ষেরই লাভ হয়। গত বছর করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার সময়টা যাঁদের মনে আছে, তাঁরা স্মরণ করতে পারবেন, ভয়ে অনেকেই বাজারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দুটো মাস্ক পরেও ভরসা পেতেন না। আর কখন কীভাবে কোভিড অণুজীবটি শরীরে এসে নিজের জায়গা করে নিত, সেটাও ছিল রহস্যময়। তাই জীবনের সবকিছুতেই এসেছিল মন্দা।
সে রকম একটি সময়ে যখন হাবিবের কাছে বাঁধা ‘কাস্টমাররা' ফোন করতেন, হাবিব তা পৌঁছে দিতেন বাড়ি বাড়ি। তাতে ক্রেতাও ভয়মুক্ত হতেন, হাবিবদের ব্যবসাও চলত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
তারপর যা হয়, ধীরে ধীরে অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করে। মানুষের মনে সাহস ভর করে। অনেকেই মনে করতে শুরু করে, গরিব মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হবে না। ওয়াজ থেকেও কিছু মানুষ করোনা নিয়ে উল্টোপাল্টা বলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কিন্তু একসময় করোনা এসে ধনী-গরিব, হিন্দু-মুসলমান কাউকেই রেহাই দেয় না। ভুয়া বিশেষজ্ঞ আর ধর্মব্যবসায়ীরা যে বানোয়াট কথা বলছে, তা ধরা পড়ে যায়। সে সময় আবার ব্যবসায় খানিক মন্দা। কিন্তু এখন মানুষ অনেক সাহসী, কিংবা বলা যায় নিজেকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছে বুঝি!
‘আপনার ব্যবসা কেমন চলছে?’
‘এখন ভালো চলে।’
‘কখন খারাপ চলেছিল?’
‘আপনি তো জানেনই। করোনা যখন খুব বেশি ছিল, তখন।’
‘কোনো সমস্যা আছে?’
‘এখনো তো ব্যবসা টিকে আছে। সেটাই অনেক বড় কথা।’
‘মাল কোত্থেকে আনেন?’
‘কারওয়ান বাজার থেকে। ডিসিসি মার্কেট থেকেও আনি।’
হাবিবদের দোকানটা মালে বোঝাই। একটা অল্পবয়স্ক ছেলে আছে, যে করিতকর্মা। কোনো অর্ডার পেলেই পলিথিনে ভরতে থাকে মাল। শুধু হাবিবের একটা আদেশই যথেষ্ট। মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে সারি সারি মুদিদোকানের একটি হলো স্বপন স্টোর। তার সঙ্গেই হাবিবের বোঝাপড়া।
বিয়ে করেছেন হাবিব। মাঝে মাঝে দুপুরে খাওয়ার ছলে বাড়িতে যান। বউয়ের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে এসে আবার বসেন দোকানে। দোকানের কাজ খুবই একঘেয়ে বলে মনে হয় তাঁর কাছে। কিন্তু বাবার ব্যবসাটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জীবন পণ করেছেন। ছোট ভাই টিপু অন্য আরেকটি ব্যবসা সামাল দেয়। পড়াশোনায় বেশি দূর এগোয়নি বলে ব্যবসাটাতেই সংহত হতে চাইছেন।
হাবিবকে শেষ প্রশ্নটা করি, ‘জীবনটা আসলে কেমন, হাবিব?’
এরপর যা হয়, তার কোনো অর্থ হয়তো নেই, আবার থাকতেও পারে।
হাবিব মনের মধ্যে প্রশ্নটাকে খানিকক্ষণ নাড়াচাড়া করেন, কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে ভাবেন, তারপর বলেন, ‘জীবন, স্যার আপনি জীবনের কথা জিগাইতাছেন, স্যার? জীবন? এতকিছু থাকতে জীবন?’
মনে হয়, ‘জীবন’ শব্দটা জীবনে প্রথম শুনলেন হাবিব।
পৈতৃক ব্যবসা, কিন্তু হাবিব সেই ব্যবসায় খুব সক্রিয়। বাবা বসেন ক্যাশে, হাবিব এত দিন বিভিন্ন বাজার থেকে মাল কিনে আনতেন, ‘কাস্টমারদের’ বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসতেন। কিন্তু সামনে আলু-পেঁয়াজের মধ্যে যে চাচা বসতেন, তিনি হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই, চলে গেছেন বিদেশে, ভাগ্যপরীক্ষায়। ফলে হাবিবের বাড়তি কাজ যোগ হয়েছে বেশি সময়ের জন্য দোকানে বসার। আগে দোকানে বসতেন কম, এখন বেশিক্ষণ বসতে হয়।
করোনা শুরুর সময়টা হাবিবের জন্য ছিল এক শিক্ষা। সে সময়ই মূলত ক্রেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাল পৌঁছে দেওয়ার কাজটা শুরু করেন। এতে দুই পক্ষেরই লাভ হয়। গত বছর করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার সময়টা যাঁদের মনে আছে, তাঁরা স্মরণ করতে পারবেন, ভয়ে অনেকেই বাজারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দুটো মাস্ক পরেও ভরসা পেতেন না। আর কখন কীভাবে কোভিড অণুজীবটি শরীরে এসে নিজের জায়গা করে নিত, সেটাও ছিল রহস্যময়। তাই জীবনের সবকিছুতেই এসেছিল মন্দা।
সে রকম একটি সময়ে যখন হাবিবের কাছে বাঁধা ‘কাস্টমাররা' ফোন করতেন, হাবিব তা পৌঁছে দিতেন বাড়ি বাড়ি। তাতে ক্রেতাও ভয়মুক্ত হতেন, হাবিবদের ব্যবসাও চলত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
তারপর যা হয়, ধীরে ধীরে অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করে। মানুষের মনে সাহস ভর করে। অনেকেই মনে করতে শুরু করে, গরিব মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হবে না। ওয়াজ থেকেও কিছু মানুষ করোনা নিয়ে উল্টোপাল্টা বলে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কিন্তু একসময় করোনা এসে ধনী-গরিব, হিন্দু-মুসলমান কাউকেই রেহাই দেয় না। ভুয়া বিশেষজ্ঞ আর ধর্মব্যবসায়ীরা যে বানোয়াট কথা বলছে, তা ধরা পড়ে যায়। সে সময় আবার ব্যবসায় খানিক মন্দা। কিন্তু এখন মানুষ অনেক সাহসী, কিংবা বলা যায় নিজেকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছে বুঝি!
‘আপনার ব্যবসা কেমন চলছে?’
‘এখন ভালো চলে।’
‘কখন খারাপ চলেছিল?’
‘আপনি তো জানেনই। করোনা যখন খুব বেশি ছিল, তখন।’
‘কোনো সমস্যা আছে?’
‘এখনো তো ব্যবসা টিকে আছে। সেটাই অনেক বড় কথা।’
‘মাল কোত্থেকে আনেন?’
‘কারওয়ান বাজার থেকে। ডিসিসি মার্কেট থেকেও আনি।’
হাবিবদের দোকানটা মালে বোঝাই। একটা অল্পবয়স্ক ছেলে আছে, যে করিতকর্মা। কোনো অর্ডার পেলেই পলিথিনে ভরতে থাকে মাল। শুধু হাবিবের একটা আদেশই যথেষ্ট। মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে সারি সারি মুদিদোকানের একটি হলো স্বপন স্টোর। তার সঙ্গেই হাবিবের বোঝাপড়া।
বিয়ে করেছেন হাবিব। মাঝে মাঝে দুপুরে খাওয়ার ছলে বাড়িতে যান। বউয়ের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে এসে আবার বসেন দোকানে। দোকানের কাজ খুবই একঘেয়ে বলে মনে হয় তাঁর কাছে। কিন্তু বাবার ব্যবসাটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জীবন পণ করেছেন। ছোট ভাই টিপু অন্য আরেকটি ব্যবসা সামাল দেয়। পড়াশোনায় বেশি দূর এগোয়নি বলে ব্যবসাটাতেই সংহত হতে চাইছেন।
হাবিবকে শেষ প্রশ্নটা করি, ‘জীবনটা আসলে কেমন, হাবিব?’
এরপর যা হয়, তার কোনো অর্থ হয়তো নেই, আবার থাকতেও পারে।
হাবিব মনের মধ্যে প্রশ্নটাকে খানিকক্ষণ নাড়াচাড়া করেন, কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে ভাবেন, তারপর বলেন, ‘জীবন, স্যার আপনি জীবনের কথা জিগাইতাছেন, স্যার? জীবন? এতকিছু থাকতে জীবন?’
মনে হয়, ‘জীবন’ শব্দটা জীবনে প্রথম শুনলেন হাবিব।
চট্টগ্রাম নগরে পরীর পাহাড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে বছরখানেক আগে সড়কের পাশের ২৩ শতক জায়গার ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। উচ্ছেদের পর সেখানে জনস্বার্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল।
৫ ঘণ্টা আগেসিলেটের ১৩৩ বছরের পুরোনো এমসি কলেজ। এর ছাত্রাবাসের সপ্তম ব্লকে ১২৮ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি কলেজের কয়েকজন কর্মচারীও থাকেন। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে পানির তীব্র সংকট থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। গোসল করা দূরে থাক, প্রয়োজনীয় খাওয়ার পানিও পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে
৫ ঘণ্টা আগেটানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পদ্মা নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ডুবে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের সাড়ে ৬ হাজার পরিবার। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরের নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণপুর
৫ ঘণ্টা আগেরংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে শ্বশুর রূপলাল দাস (৪৫) ও জামাই প্রদীপ লালের (৩৫) প্রাণহানির পেছনে আইনশৃঙ্খলাহীনতাকে দুষছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনের চুরি, ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট অপরাধের কারণে স্থানীয় জনতার ভেতর মবের মনোভাব তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশও সেভাবে তৎপর নয়। এসব কারণেই শ্
৬ ঘণ্টা আগে