রাশেদ নিজাম, মাওয়া প্রান্ত থেকে
দুপুরটা যাই যাই করছে। মাথার ওপর থেকে কিছুটা সরেছে সূর্য। মাওয়া পুরান ঘাট রাস্তায় মাছ বাজার লাগোয়া পদ্মার পাড়। এক দৃষ্টিতে পদ্মা সেতুর দিকে তাকিয়ে আছেন মধ্যবয়সী রিপন সরকার। ‘কী দেখেন’ প্রশ্নের উত্তরে জানালেন, ‘স্বপ্নের সেতু দেহি। প্রতিদিনই আসি। দেখতে ভালা লাগে।’ কথায় কথায় জানালেন, বাড়ি লৌহজং থানার পাশে ঘোড়দৌড় এলাকায়। ‘২৫ জুন আসবেন কি না’, জানতে চাইলে রিপনের উত্তর, ‘অবশ্যই আসমু। প্রধানমন্ত্রীরে দেখতে পারুম না মনে হয়। মানুষজন দেখমু। উদ্বোধন দেখমু।’
রিপন সরকারের সঙ্গে কথা বলার সময়ই কানে এল গানের আওয়াজ। নদীর পাড়ে জোরে গান শুনছেন কে? চোখ পড়ল একটা সাউন্ড বক্সে। সেখান থেকে ভেসে আসছে রেকর্ড করা গানের সুর। দুজন নারী-পুরুষ ডুয়েট গাইছেন, ‘আয় দেখে যা বিশ্ববাসী, শেখ হাসিনার কীর্তি/ বাংলার বুকে পদ্মা সেতু, বিস্ময় এক সৃষ্টি।’ বাস্তবের দুজন রেকর্ডের সঙ্গে ঠোঁট মেলাচ্ছেন।
মোবাইলে তাঁদের ধারণ করছেন আরও দুজন। ভিডিও ধারণ শেষে শুরু হলো আলোচনা। গায়কের নাম ডা. চঞ্চল সৈকত, গায়িকা মহুয়া লিপি। গানের কথা লিখেছেন রোস্তম মল্লিক, আর সুর ও সংগীত করেছেন তাঁদেরই বন্ধু চঞ্চল।
পদ্মা সেতু নিয়ে গানের কারণ হিসেবে গায়ক জানালেন, ‘আমাদের গর্বের বিষয় এই সেতু। পুরো দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে এবার। তাই আমাদের এ গান। দুদিন ধরে ভিডিও ধারণ হচ্ছে। আজই (মঙ্গলবার) শেষ করে, সম্পাদনার পর ২৪ তারিখের মধ্যে ইউটিউবে মুক্তি পাবে গানটি।’ দুটি বেসরকারি চ্যানেলেও কথা হয়েছে বলে জানালেন গায়িকা।
প্রতিদিন এমন হাজারো স্বপ্ন ডানা মেলছে স্বপ্নের সেতু ঘিরে। পদ্মা পাড়ের মানুষই শুধু নন, নানা প্রান্তের মানুষের এক আবেগ ও ভালোবাসার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে পদ্মা সেতু। কারও চোখে সম্ভাবনার স্বপ্ন, কারও ব্যবসার, কারও-বা কম সময়ে যোগাযোগের।
মাঝে আর মাত্র দুদিন। সেতু প্রকল্পে কারও কথা বলার সময় নেই। মাওয়া প্রান্তে কান পাতলেই কর্মতৎপরতার নানা শব্দ শোনা যায়। এ যেন উদ্বোধনেরই সুর। মাঝে বৃষ্টির কারণে কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটায় তা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় সবাই।
মূল সেতুর শুরুর দিকে বসছে নানা রং-বেরঙের পোস্টার-ফেস্টুন। দুপাশের রাস্তায়ও প্রধানমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যানার, ফেস্টুনে একাকার। এর মাঝেই চলছে কাজ। ওপরে ওঠার সুযোগ না হলেও দূর থেকে ভেসে আসা টুং টাং শব্দ এনে দেয় কর্মতৎপরতার খবর।
লৌহজংয়ের দক্ষিণ মেদিনী মণ্ডল এলাকায় মাওয়ার পুরোনো ঘাট। এখন একেবারেই নিশ্চল। পাথর টানা কিছু ট্রলার বাধা ঘাটে। দোকানপাটগুলোতে ব্যস্ততা নেই। স্থানীয় কয়েকজন বসে আলাপ করছেন নিজেদের মধ্যেই।
অনুমতি নিয়ে তাঁদের মাঝে বসতেই বোঝা গেল, আলোচ্য বিষয় সেই পদ্মা সেতুই। ছোট জিজ্ঞাসায় ৮১ বছরের কাদির ভূঁইয়া কথা শুরু করলেন পাকিস্তান আমল থেকে। সেই ছোটবেলায় তাঁরা নাকি শুনেছিলেন এখানে ব্রিজ হবে। তারপর মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু সরকার গঠন করেছেন। তখনো পদ্মার বুক চিরে সেতুর খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। ৫০ বছর পর জাতির জনকের মেয়ে সেই সেতু উদ্বোধন করবেন—এটাই কাদিরের কাছে বড় খবর।
কাদির ভূঁইয়া দিলেন পদ্মা নদীর নানা তত্ত্বতালাশও। বললেন, যেখানে বসে এই আলাপ হচ্ছে, যুবক বয়সে ঠিক এই জায়গাটাতেই নাকি ঠাঁই ছিল না। ভোরে মাছ ধরতে বের হওয়ার পর সকালে পান্তা খেতেন দল বেঁধে। পানির স্রোতে যেন কেউ পড়ে না যান, সে জন্যই দল বাঁধা। সেই নদীতে সেতু দেখে তাঁর মনে কথা, গল্প, আর স্মৃতি দল পদ্মার মাছেদের মতোই ঘাঁই মেরে ওঠে। স্মৃতির আস্তর ঠেলে জেগে ওঠে কথার দল। আয়ুর দৌড়ে লেটার মার্ক পাওয়া কাদির ভূঁইয়া সুকৌশলে সেই কথা দিয়ে জাল বুনতে থাকেন।
এই শেষ বয়সে সেতু ঘিরে কাদির আসলে কী ভাবেন? কথার ঝাঁপি খোলা কাদিরের দিকে তাকিয়ে সরাসরি এ প্রশ্ন তুলতেই বললেন, ‘জীবন কেটে গেছে পদ্মার পাড়ে। এখন যাওয়ার পালা। লাখো মানুষের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে—এটা দেখে নিজের স্বপ্নের কথা আর নাই-বা বললাম।’
তাঁর এ কথা শেষে মাথায় এল কানাডীয় বুদ্ধিজীবী ‘স্টিফেন ল্যাকক’-এর একটি উক্তি: ‘সম্ভবত তারাই সবচেয়ে বেশি অর্জন করে, যারা সবচেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখে।’
দুপুরটা যাই যাই করছে। মাথার ওপর থেকে কিছুটা সরেছে সূর্য। মাওয়া পুরান ঘাট রাস্তায় মাছ বাজার লাগোয়া পদ্মার পাড়। এক দৃষ্টিতে পদ্মা সেতুর দিকে তাকিয়ে আছেন মধ্যবয়সী রিপন সরকার। ‘কী দেখেন’ প্রশ্নের উত্তরে জানালেন, ‘স্বপ্নের সেতু দেহি। প্রতিদিনই আসি। দেখতে ভালা লাগে।’ কথায় কথায় জানালেন, বাড়ি লৌহজং থানার পাশে ঘোড়দৌড় এলাকায়। ‘২৫ জুন আসবেন কি না’, জানতে চাইলে রিপনের উত্তর, ‘অবশ্যই আসমু। প্রধানমন্ত্রীরে দেখতে পারুম না মনে হয়। মানুষজন দেখমু। উদ্বোধন দেখমু।’
রিপন সরকারের সঙ্গে কথা বলার সময়ই কানে এল গানের আওয়াজ। নদীর পাড়ে জোরে গান শুনছেন কে? চোখ পড়ল একটা সাউন্ড বক্সে। সেখান থেকে ভেসে আসছে রেকর্ড করা গানের সুর। দুজন নারী-পুরুষ ডুয়েট গাইছেন, ‘আয় দেখে যা বিশ্ববাসী, শেখ হাসিনার কীর্তি/ বাংলার বুকে পদ্মা সেতু, বিস্ময় এক সৃষ্টি।’ বাস্তবের দুজন রেকর্ডের সঙ্গে ঠোঁট মেলাচ্ছেন।
মোবাইলে তাঁদের ধারণ করছেন আরও দুজন। ভিডিও ধারণ শেষে শুরু হলো আলোচনা। গায়কের নাম ডা. চঞ্চল সৈকত, গায়িকা মহুয়া লিপি। গানের কথা লিখেছেন রোস্তম মল্লিক, আর সুর ও সংগীত করেছেন তাঁদেরই বন্ধু চঞ্চল।
পদ্মা সেতু নিয়ে গানের কারণ হিসেবে গায়ক জানালেন, ‘আমাদের গর্বের বিষয় এই সেতু। পুরো দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে এবার। তাই আমাদের এ গান। দুদিন ধরে ভিডিও ধারণ হচ্ছে। আজই (মঙ্গলবার) শেষ করে, সম্পাদনার পর ২৪ তারিখের মধ্যে ইউটিউবে মুক্তি পাবে গানটি।’ দুটি বেসরকারি চ্যানেলেও কথা হয়েছে বলে জানালেন গায়িকা।
প্রতিদিন এমন হাজারো স্বপ্ন ডানা মেলছে স্বপ্নের সেতু ঘিরে। পদ্মা পাড়ের মানুষই শুধু নন, নানা প্রান্তের মানুষের এক আবেগ ও ভালোবাসার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে পদ্মা সেতু। কারও চোখে সম্ভাবনার স্বপ্ন, কারও ব্যবসার, কারও-বা কম সময়ে যোগাযোগের।
মাঝে আর মাত্র দুদিন। সেতু প্রকল্পে কারও কথা বলার সময় নেই। মাওয়া প্রান্তে কান পাতলেই কর্মতৎপরতার নানা শব্দ শোনা যায়। এ যেন উদ্বোধনেরই সুর। মাঝে বৃষ্টির কারণে কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটায় তা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় সবাই।
মূল সেতুর শুরুর দিকে বসছে নানা রং-বেরঙের পোস্টার-ফেস্টুন। দুপাশের রাস্তায়ও প্রধানমন্ত্রী, যোগাযোগমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যানার, ফেস্টুনে একাকার। এর মাঝেই চলছে কাজ। ওপরে ওঠার সুযোগ না হলেও দূর থেকে ভেসে আসা টুং টাং শব্দ এনে দেয় কর্মতৎপরতার খবর।
লৌহজংয়ের দক্ষিণ মেদিনী মণ্ডল এলাকায় মাওয়ার পুরোনো ঘাট। এখন একেবারেই নিশ্চল। পাথর টানা কিছু ট্রলার বাধা ঘাটে। দোকানপাটগুলোতে ব্যস্ততা নেই। স্থানীয় কয়েকজন বসে আলাপ করছেন নিজেদের মধ্যেই।
অনুমতি নিয়ে তাঁদের মাঝে বসতেই বোঝা গেল, আলোচ্য বিষয় সেই পদ্মা সেতুই। ছোট জিজ্ঞাসায় ৮১ বছরের কাদির ভূঁইয়া কথা শুরু করলেন পাকিস্তান আমল থেকে। সেই ছোটবেলায় তাঁরা নাকি শুনেছিলেন এখানে ব্রিজ হবে। তারপর মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু সরকার গঠন করেছেন। তখনো পদ্মার বুক চিরে সেতুর খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। ৫০ বছর পর জাতির জনকের মেয়ে সেই সেতু উদ্বোধন করবেন—এটাই কাদিরের কাছে বড় খবর।
কাদির ভূঁইয়া দিলেন পদ্মা নদীর নানা তত্ত্বতালাশও। বললেন, যেখানে বসে এই আলাপ হচ্ছে, যুবক বয়সে ঠিক এই জায়গাটাতেই নাকি ঠাঁই ছিল না। ভোরে মাছ ধরতে বের হওয়ার পর সকালে পান্তা খেতেন দল বেঁধে। পানির স্রোতে যেন কেউ পড়ে না যান, সে জন্যই দল বাঁধা। সেই নদীতে সেতু দেখে তাঁর মনে কথা, গল্প, আর স্মৃতি দল পদ্মার মাছেদের মতোই ঘাঁই মেরে ওঠে। স্মৃতির আস্তর ঠেলে জেগে ওঠে কথার দল। আয়ুর দৌড়ে লেটার মার্ক পাওয়া কাদির ভূঁইয়া সুকৌশলে সেই কথা দিয়ে জাল বুনতে থাকেন।
এই শেষ বয়সে সেতু ঘিরে কাদির আসলে কী ভাবেন? কথার ঝাঁপি খোলা কাদিরের দিকে তাকিয়ে সরাসরি এ প্রশ্ন তুলতেই বললেন, ‘জীবন কেটে গেছে পদ্মার পাড়ে। এখন যাওয়ার পালা। লাখো মানুষের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে—এটা দেখে নিজের স্বপ্নের কথা আর নাই-বা বললাম।’
তাঁর এ কথা শেষে মাথায় এল কানাডীয় বুদ্ধিজীবী ‘স্টিফেন ল্যাকক’-এর একটি উক্তি: ‘সম্ভবত তারাই সবচেয়ে বেশি অর্জন করে, যারা সবচেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখে।’
গতকাল শনিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যশোর বোর্ডে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা স্থগিতের বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ে।
৫ মিনিট আগেবন্ধুর সার্টিফিকেটের (সনদ) কপি দিয়ে ১০ বছর ধরে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছেন রাজিব আলম (৩৩)। চাকরির বায়োডাটায় নিজের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা, সার্টিফিকেট সবই ব্যবহার করেছেন বন্ধুর। এটি দিয়েই তিনি শিল্প গ্রুপ পলমলের কেন্দ্রীয় গুদামের এজিএম (কাগজ-কলমে টিপু সুলতান) পদে কর্মরত ছিলেন।
৯ মিনিট আগেবরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় কোস্ট গার্ডের নাম ব্যবহার করে একটি অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করতে আজ রোববার (২২ জুন) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়।
১৪ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে এক প্রবাসীকে বন্দুক দিয়ে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ভূঁইয়া ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের আমগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
২০ মিনিট আগে