Ajker Patrika

‘হাত কাটার প্রতিশোধ নিতে’ নড়াইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ মে ২০২৪, ১৯: ৩১
‘হাত কাটার প্রতিশোধ নিতে’ নড়াইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪

নড়াইলের লোহাগড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন প্রধান আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)। 

গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব জানায়, দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের সঙ্গে একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। 

১০ মে লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনায় মোস্তফা কামালের বড় ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে বিরোধের জেরে ভিকটিম মোস্তফা কামাল ও আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হন এবং তাঁর একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীকালে লিপন ও তাঁর অনুসারীরা মোস্তফা কামালের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তাঁর ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেপ্তারকৃত সাজেদুলসহ অন্য আসামিরা মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার সাজেদুলসহ অন্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রামদাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওত পেতে থাকে। মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই সুযোগ বুঝে সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি করে, যার মধ্যে দুটি গুলি মোস্তফা কামালের বুকে ও পিঠে লাগে। 

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি আকবর হোসেন লিপনের অন্যতম প্রধান সহযোগী। লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় তিনি আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি, চুরি ও চাঁদাবাজি-সংক্রান্ত তিনটি মামলা রয়েছে। 

গ্রেপ্তার রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। তিনি গ্রেপ্তার সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ মারামারি, ছিনতাই, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত বলে জানা যায়। গ্রেপ্তার সাজেদুলের সহযোগী হিসেবে তাঁকে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার জন্য এক লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল এবং হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি সাজেদুলের সঙ্গে সরাসরি অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত