Ajker Patrika

ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে মাইলস্টোন কলেজ

  • গত সোমবার থেকে প্রথম-অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আসছে ক্যাম্পাসে।
  • ৬ আগস্ট থেকে নবম-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১২: ০৬
প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর টানা কয়েক দিন বন্ধ ছিল রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিকের পথে। শিক্ষার্থীদের পদচারণে আবার মুখর হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর টানা কয়েক দিন বন্ধ ছিল রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিকের পথে। শিক্ষার্থীদের পদচারণে আবার মুখর হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাস। দুর্ঘটনার পর টানা কয়েক দিন বন্ধ ছিল এই ক্যাম্পাস। মাঝখানে কয়েক দিন ক্যাম্পাস খোলা থাকলেও হয়নি শ্রেণি কার্যক্রম। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিকের পথে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও আসছে ক্যাম্পাসে। তবে তারা এখনো শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে না। এখন তারা নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা, দোয়া এবং শোক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়া তাদের কাউন্সেলিং চলছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের শিক্ষার্থীদের নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এর আগে ৬ আগস্ট থেকে মাইলস্টোনের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাসে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। এদিন নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পূর্বনির্ধারিত মিডটার্ম ও প্রাক্-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। আর দ্বাদশ শ্রেণিতে স্বাভাবিক নিয়মে পাঠদান কার্যক্রম হয়।

শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, বিমান বিধ্বস্তের পর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এই ক্যাম্পাসের অনেকেই মানসিক ‘ট্রমার’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে এবং স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গ্রুপভিত্তিক ও ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক কাউন্সেলিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

এদিকে দুর্ঘটনার ধাক্কা কাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আবারও নিয়মিত কার্যক্রমে ফিরতে শুরু করায় অভিভাবকেরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। একজন অভিভাবক বলেন, ‘প্রথম দিকে আমরা ভয়ে সন্তানদের পাঠাতে চাইনি, কিন্তু এখন পরিবেশ অনেকটাই স্বাভাবিক। আশা করি, শিগগির সবকিছু আগের মতো হয়ে যাবে।’

আরেকজন অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষকেরা যে যত্ন নিচ্ছেন, তাতে আমরা আশ্বস্ত। তবে দুর্ঘটনার স্মৃতি কাটতে সময় লাগবে।’

গত ২১ জুলাই দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান। এরপর বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ ৩৫ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ২৭ জনই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ছিল। আর আহত ৩৪ জন এখনো চিকিৎসাধীন।

এদিকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার মাইলস্টোনের প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল (অব.) নুরন নবী ও অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম এক বিবৃতিতে নিহতদের প্রতি গভীর শোক ও পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল আলম বলেন, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাস। সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসা শুরু করলেও শুধু নবম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রম অংশগ্রহণ করছে। আর বাকি শিক্ষার্থীরা বিশেষ দোয়া মাহফিলে অংশ নিচ্ছে। তাদের জন্য কাউন্সেলিং কার্যক্রম চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত