Ajker Patrika

অস্ত্র বেচতে গিয়ে নিজেই যোগ দেন জঙ্গি সংগঠনে

নিজস্ব প্রতিবেদক
অস্ত্র বেচতে গিয়ে নিজেই যোগ দেন জঙ্গি সংগঠনে

নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের কাছে টাকার বিনিময়ে অস্ত্র সরবরাহ করতেন কবীর আহাম্মদ। জঙ্গিদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে গিয়ে এক সময় নিজেও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কবির আহাম্মদকে বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন টিমের হাতে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল রোববার বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ও রাজধানীর কদমতলীতে অভিযান চালিয়ে তাঁকেসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—অস্ত্র সরবরাহকারী মো. কবীর আহাম্মদ (৫০), শারক্বীয়া সংগঠনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ পলাতক শামীম মাহফুজের অন্যতম সহযোগী মো. ইয়াসিন (৪০) ও আব্দুর রহমান ইমরান (২৬)। 

এ সময় তাঁদের হেফাজত থেকে ৩টি দেশীয় পিস্তল,৬টি একনলা বন্দুক, ১১ রাউন্ড গুলি, ১৪০ রাউন্ড সিসার তৈরি গুলি, ২ লিটার অ্যাসিড, গান পাউডার, ৩ লিটার অকটেন, ২ কার্টন ম্যাচ বক্স, এক কয়েল বৈদ্যুতিক তার, ২ বোতল দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ,২টি স্প্রে ক্যান, একটি করাত, স্কচ টেপ ও সুপার গ্লু, প্রশিক্ষণের পোশাক ও টুপি, হ্যান্ডস করাত ও ব্লেড উদ্ধার করা হয়। 

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান। 

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গত বছরের ২১ ডিসেম্বর কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি দল জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম তুহিন ও মো. নাঈম হোসেনকে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠনে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে কবির আহাম্মদকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় সিটিটিসি। পরবর্তীতে সিটিটিসির একটি দল কবির আহাম্মদকে বান্দরবান জেলা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার বাইশারী এলাকার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে দুটি প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।’ 

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘কবীর আহাম্মদ জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের কিছু অংশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। প্রাথমিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অস্ত্র মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। শারক্বিয়ার মাস্টারমাইন্ড পলাতক আসামি শামিন মাহফুজ দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সংগঠনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধাপে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে।’ 

আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার আব্দুর রহমান ইমরানের মাধ্যমে শামিন মাহফুজ বিভিন্ন সময় তাঁর সাংগঠনিক আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতেন। মো. ইয়াসিন বিভিন্ন সময় শামিন মাহফুজের জন্য শেল্টার হাউস ব্যবস্থাপনাসহ সংগঠনের উগ্রবাদী আদর্শে দীক্ষিত হয়ে হিজরতে গমনকারীদের জন্য ব্যবহৃত শেল্টার হাউস ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। 

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ডেমরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত