Ajker Patrika

এক যুগের আইনি লড়াই শেষে স্বপদে ফিরলেন অধ্যক্ষ

আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ২৪
এক যুগের আইনি লড়াই শেষে স্বপদে ফিরলেন অধ্যক্ষ

এক এক করে কেটে গেছে ১২ বছর। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। অবৈধভাবে কলেজ থেকে বের করে দেওয়াটা মুখ বুজে মেনে নেওয়ার মানুষ নন তিনি। একাই চালিয়ে গেছেন আইনি লড়াই। অবশেষে আদালতের নির্দেশে নিজ পদে বহাল হলেন।

গাজীপুরের শ্রীপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী কলেজ (সদ্য জাতীয়করণ হয়েছে) থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন আকন্দের হার না মানা গল্প এটি। ২০০৯ সালে তাঁকে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছিলেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের অনুসারীরা। এরপর থেকেই তিনি পদ ফিরে পেতে শুরু করেন আইনি লড়াই।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের পঞ্চম সিনিয়র জজ আদালত তোফাজ্জল হোসেনকে স্বপদে বহাল করার আদেশ দেন। গতকাল শনিবার কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে যোগদানের আবেদন করেন তিনি। 

অধ্যক্ষের আইনজীবী এ এ এম আমানুল্লাহ ফরিদ আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন আকন্দকে ২০০৯ সালে সন্ত্রাসী কায়দায় জোর করে কলেজ থেকে বের করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় তৎকালীন পরিচালনা পরিষদ। পরে রাজনৈতিক প্রভাব ও পরিচালনা পরিষদকে ব্যবহার করে নুরুন্নবী আকন্দ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে বহাল হন। তোফাজ্জল হোসেন বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও কলেজে ঢুকতেই পারেননি। নিরুপায় হয়ে ২০১০ সালের ৩০ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর আদালতে দেওয়ানি মোকদ্দমা করেন। পরে তা পঞ্চম সিনিয়র জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন শুনানি শেষে অধ্যক্ষকে স্বপদে বহাল মর্মে রায় দেন আদালত। এখন থেকে তাঁর দায়িত্ব পালনে আর কোনো বাধা রইল না। 

এ ব্যাপারে তোফাজ্জল হোসেন আকন্দ বলেন, ২০০৫ সালে তিনি অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পান। ২০০৯ সালে কলেজের পরিচালনা পরিষদের এক সভা চলাকালে তাঁকে সন্ত্রাসী কায়দায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বের করে দেওয়া হয়। পরে তাঁরা রেজল্যুশন তৈরি করে নুরুন্নবী আকন্দকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। একজন শিক্ষক হিসেবে এটা তাঁর কাছে ছিল চরম অপমান। এ অন্যায় তিনি মেনে নিতে পারেননি। চালিয়ে গেছেন আইনি লড়াই। 

অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন আরও বলেন, বিধি অনুযায়ী বয়স হয়ে যাওয়ায় তার চাকরির মেয়াদ আর কয়েক মাস আছে। আদালতের আদেশে সত্যের জয় হয়েছে। বাকি কয়েক মাস তিনি সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে চান। 

কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ইউএনও তরিকুল ইসলাম বলেন, `তিনি (তোফাজ্জল হোসেন) মামলার আদেশের কপিসহ যোগদানের অনুমতি চেয়েছেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।' 

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে তোফাজ্জল হোসেনকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন কলেজটির প্রভাষক নুরুন্নবী আকন্দ। তিনি প্রয়াত সাংসদ অ্যাডভোকেট রহমত আলীর ছেলে জামিল হাসান দুর্জয়ের অনুসারী বলে পরিচিত। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত