Ajker Patrika

ইয়াসিনের এক চোখে গুলি, অপর চোখও ঝুঁকিতে

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
ইয়াসিন আরাফাত। ছবি সংগৃহীত
ইয়াসিন আরাফাত। ছবি সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ চোখের চিকিৎসা না পেয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন কিশোরগঞ্জের মো. ইয়াসিন আরাফাত (২৮)। চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও অর্থের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি টাকার অভাবে দেশেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছেন না তিনি। দিন যত যাচ্ছে, তাঁর গুলিবিদ্ধ চোখের পাশাপাশি অপর চোখও ঝুঁকিতে পড়ছে।

ইয়াসিন আরাফাত কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম দ্বিপেশ্বর এলাকার মো. রতন মিয়ার ছেলে। তিনি হোসেনপুর পৌর শহরে চাল-কুঁড়ার ব্যবসা করতেন। আহত হওয়ার পর থেকে তাঁর ব্যবসাও বন্ধ রয়েছে।

ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট জেলা শহরের পুরান থানা এলাকার তাজ রেস্টুরেন্টের সামনে পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি আমার চোখে, পেটে, পিঠে লাগে। অন্য সব গুলি বের করতে পারলেও বাম চোখের ভেতরে একটা গুলি এখনো রয়ে গেছে। আমি এখন বাম চোখে দেখতে পাই না। চোখ নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। সিএমএইচের চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বললেও অর্থের অভাবে যেতে পারিনি। তবে নিয়মিত হাসপাতালের চিকিৎসকদের সেবা নিচ্ছি। তাঁরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ দিচ্ছেন। কিন্তু গুলি বের করতে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এখন আমার বাম চোখের কারণে ডান চোখেও সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সময়ে অপারেশন করতে পারলে আমার ডান চোখটা অন্তত বাঁচবে।’

ইয়াসিনের মা জাহানারা খাতুন বলেন, ‘আমার তিন মেয়ে এক ছেলে। আমার ছেলেটা চোখে গুলি নিয়ে অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বউ-বাচ্চা নিয়ে তাকে বাকি জীবন অন্ধ হয়ে কাটাতে হবে কি না, জানি না। তবে ঠিকমতো চিকিৎসা পেলে ছেলেটা হয়তো দেখতে পারবে। এ বিষয়ে আমি সরকারের সহায়তা চাই।’

ইয়াসিনের স্ত্রী পৌষা আক্তার বলেন, ‘এ পর্যন্ত চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ মিলিয়ে লাখ টাকা চলে গেছে। চোখের একটা ড্রপের দাম নেয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। গুলি লাগার পর প্রথমে বা চোখে মানুষের ছায়া দেখত। এখন চোখের রেটিনার সঙ্গে গুলি থাকার কারণে কিছুই দেখতে পারে না। গুলি আস্তে আস্তে চোখের নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। নিয়মিত ড্রপ ব্যবহার না করলে তার ডান চোখও লাল হয়ে যায়, ব্যথা করে।’

ইয়াসিনের স্ত্রী আরও বলেন, ‘আন্দোলনের পর জেলা শহরের গাইটাল সার্কিট হাউসের সামনের বিডি ল্যাবের সার্জন আমিনুল ইসলাম আকন্দ একবার অপারেশন করেন। তবে তিনি চোখ থেকে গুলি বের করতে পারেননি। এ পর্যন্ত প্রশাসন থেকে বা অন্য কেউ কোনো খোঁজখবর নেননি। আমার তিন বছরের একটা ছেলে আছে। আমি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার স্বামী অনাগত সন্তানের মুখ দেখতে পারবে কিনা, তার নিশ্চয়তা নেই।’

ইয়াসিনের ছোট বোন হোসনা বলেন, ‘আমার ভাইয়ের উপার্জনেই আমাদের সংসার চলে। ভাইয়ের দুই চোখ নষ্ট হয়ে গেলে পুরো পরিবার পঙ্গু হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আহতদের তালিকায় ইয়াসিন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। আমরা অবশ্যই চোখের চিকিৎসাসহ প্রশাসন থেকে তাঁকে সব ধরনের সহায়তা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত