Ajker Patrika

সন্তানকে স্বাধীনতা দেওয়ার পরামর্শ দিলেন হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সন্তানকে স্বাধীনতা দেওয়ার পরামর্শ দিলেন হাইকোর্ট

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় তরুণীকে দেশে এনে আটকে রাখার অভিযোগে করা রিট নিয়ে আজ রোববার হাইকোর্টে শুনানি হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশি বাবা-মা ও ওই তরুণীর কথা শুনেছেন আদালত। পরে বাবা-মাকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। সন্তানের সম্পর্ক আরও সহজ এবং সন্তানকে তার পছন্দের বিষয়ে স্বাধীনতা দেওয়ার কথা বলেছেন আদালত।

হাইকোর্ট বলেন, ‘সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বপূর্ণ। সন্তানের সঙ্গে বাবা-মাকে ব্রিজ তৈরি করতে হবে। বাবা-মায়ের বয়স হলে সন্তানই তাঁদের দেখাশোনা করে। তাই সন্তানকে দায়িত্বশীল হওয়ার বিষয়টি বোঝাতে হবে।’

তরুণীর ফোন পেয়ে ঢাকায় কানাডিয়ান হাইকমিশন বিষয়টি আইন ও সালিস কেন্দ্র এবং ব্লাস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে হাইকোর্টে রিট (হেভিয়াস করপাস) করা হয়। হাইকোর্ট তরুণীকে হাজির করার নির্দেশ দেন।

নির্দেশ অনুযায়ী আজ তরুণীকে হাজির করা হলে শুনানির সময় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ বাবা-মার উদ্দেশে এসব পরামর্শ দেন।

শুনানির শুরুতে তরুণীর বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আদালতকে বলেন, ‘মেয়ের লাইফ ও সেফটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা (কানাডা) নিয়ে যেতে চাইলে নিশ্চিত করতে হবে যেন তাঁর কোনো ক্ষতি না হয়।’ শুনানির শেষ দিকে কথা বলেন তরুণীর মাও। মা বলেন, ‘আমাদের একটাই মেয়ে। সে নিজের শরীরের যত্ন নেয় না। আমি চাই না আরও একটা ঐশী (সস্ত্রীক খুন হওয়া পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে) তৈরি হোক।’

আদালত তরুণীর বাবা-মাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তাকে ফ্রিডম দিতে হবে। সে কানাডায় যেতে চায়, সেখানে পড়তে চায়। সে সেখানে ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। বাবা-মাকে সেই সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। দুয়ার বন্ধ রাখা চলবে না। তাকে হঠাৎ করেই এখানকার কালচারে আনা যাবে না। সেটা করতে হলে তার জন্মটা এখানে অথবা এখানে বড় করা দরকার ছিল। সে অন্য একটি দেশে বড় হয়েছে।’

পরে আদালত ওই তরুণীর ল্যাপটপে ইন্টারনেট সংযোগ এবং তাঁকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সুযোগ দিতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে রিটে কানাডিয়ান হাইকমিশনকে পক্ষভুক্ত করতে বলা হয়। এ ছাড়া ১২ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।

এর আগে সবাইকে বাইরে বের করে দিয়ে আদালত একান্তে তরুণীর কথা শোনেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তরুণীর বাবা-মায়ের পক্ষে ছিলেন মো. ওজিউল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

জানা যায়, ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীর জন্ম কানাডায়। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। বাবা-মাও কানাডায় থাকতেন। দশ মাস আগে বাবা-মা তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলে তাঁকে যেতে দেওয়া হয়নি। ওই তরুণী ল্যান্ডফোনে কানাডা ও ঢাকায় কানাডিয়ান হাইকমিশনকে জানান, তাঁকে জোরপূর্বক ঘরবন্দী করে রাখা হয়েছে।

তরুণীর ফোন পেয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর হাইকমিশনের পক্ষ থেকে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট এবং আইন ও সালিস কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত