মোস্তাকিম ফারুকী, ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। ঈদের ছুটি। পরিচিতদের অনেকেই ছুটছে গ্রামের উদ্দেশ্যে। নিজের মনেও দিল পাখির উড়াল। কিন্তু উপায় কী। ঢাকা থেকে খুব কাছের দূরত্বও যে দুর্লঙ্ঘ হয়ে গেছে শুধু টিকিটের কারণে। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মিরাশানী গ্রামে। সেখানে যেতে আইঢাই মন নিয়ে বাস ও ট্রেনের টিকিট কত না খুঁজেছি। পাওয়া হলো কই।
কোথাও কোনো টিকিট নেই। তাই ১৯ ঘণ্টা রিকশা ভ্রমণ করে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌঁছাই। ঘটনা শুরু থেকে বলা যাক।
গত ২৮ এপ্রিল (বুধবার) দুপুর ২টায় ওয়ারির বাসা থেকে বের হয়েছি কাঁটাবনের দিকে একটা ইফতারের দাওয়াতের উদ্দেশ্যে। বাড়িতে পরিবারের সবাই একত্রিত হবে, শবে কদরকে কেন্দ্র করে বাড়িতে একটা উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হবে। সে আয়োজনে আমাকে অবশ্যই থাকতে হবে বলে তাড়া দিচ্ছিল বাড়ি থেকে। কমলাপুরে কয়েকবার সন্ধান করেছি, ট্রেনের কোনো টিকিট নেই। ২৭ রমজান বাড়িতে যেতে পারব না বলে হাল ছেড়ে দিয়েছি, ঢাকার কাজেই মনোযোগ দিয়েছি। কাঁটাবনে ইফতার শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। পরিচিতদের সঙ্গে বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছিলাম। রাত ১২টার দিকে ভর্তা বাড়িতে ইমরান ভাইয়ের সৌজন্যে একটা খাওয়াদাওয়ার আয়োজন হয়।
খাওয়াদাওয়া শেষে সৈকত ভাইয়ের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে আবারও আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলে। হঠাৎ মোবারক ভাই বলেন, ‘রাত অনেক হয়েছে বাসার দিকে চলে যা।’ সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। ওয়ারির উদ্দেশ্যে রিকশায় উঠলাম। কথায় কথায় জানা গেল, রিকশাওয়ালা ভদ্রলোকের বাড়িও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। টিএসসি থেকে উদ্দেশ্য ছিল ওয়ারি যাব। তখন তিনি গলা ছেড়ে মনের সুখে গান গাইছিলেন, ‘অ ছখিনা, গেচছ কি না ভুইল্ল্যা আমারে। আমি অহন রিসকা চালাই ঢাহা শহরে।’ গান শুনে আমি রসিকতা করে উত্তর দিলাম, ‘আপনার ছখিনে আপনারে ভুলে নাই।’ বেচারা আবেগপ্রবণ হয়ে গেলেন, থামিয়ে দিলেন গান। স্তব্ধ হয়ে পড়লেন কিছু সময়ের জন্য। তারপর করুণ কণ্ঠে বলতে লাগলেন, ‘মামা ৪ মাস যাবৎ বাড়িতে যাই না, বাড়ির কাউরে দেখি না।’
প্রস্তাব করলাম, ‘চলেন আজই বাড়িতে, যেহেতু নিজের গাড়ি। বউ-বাচ্চার সঙ্গে ঈদ করবেন।’ রিকশা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন—এমন কথা শুনে প্রথমে তিনি বিচলিত হয়েছিলেন। বললাম, ‘আরে মিয়া চলেন, গাড়ি চালাইয়াই তো যাবেন। এটা কোনো ব্যাপার হইল! টাকা-পয়সা নিয়ে চিন্তা করবেন না, সারা দিনে আপনার যা ইনকাম হয় পুষিয়ে দিব।’ যেই কথা, সেই কাজ! বেচারা রাজি।
আধ ঘণ্টার ব্যবধানে আমি আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বাসা থেকে সংগ্রহ করি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। যাত্রাবাড়ীতে রিকশাচালকের বাসা। পথিমধ্যে তিনিও তাঁর বাসা থেকে একটা ব্যাগ নিয়ে আসেন। যাত্রাপথে ব্যাটারি চালিত এই রিকশার চার্জ শেষ হয়ে যাবে—এটা নিশ্চিত। তবে চার্জ শেষ হলে প্যাডেল দিয়ে চলবে এমন ব্যবস্থাও আছে। রিকশায় চার্জ দেওয়ার জন্য তিনটি যাত্রাবিরতি হতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হলো। প্রথমটি নরসিংদী, দ্বিতীয়টি ভৈরব এবং তৃতীয়টি বিশ্বরোড। এই তিনটি জায়গার রিকশা গ্যারেজে চার্জ দিয়ে আবার ছুটে চলা হবে গন্তব্যে—এমনই সিদ্ধান্ত। গাড়ি চার্জে লাগিয়ে সে এলাকায় পরিচিত কাউকে পেলে, তাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সময় কাটানো যাবে।
মদনপুর দিয়ে রিকশা ঢুকল। সে রাস্তায় শুধু ট্রাক আর ট্রাক! গাজীপুরের সব ফ্যাক্টরির মালামাল সে রাস্তা দিয়েই চট্টগ্রাম বন্দরে যায়। রাস্তায় জ্যামের কারণে সারিবদ্ধ হয়ে ট্রাকের পর ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। তবে পাশ দিয়ে রিকশা চলার মতো যথেষ্ট ফাঁকা ছিল। তাই অল্প সময়ে পৌঁছে গেলাম গাউছিয়া। রাত ৩টা ১০ মিনিটে মায়ের দোয়া নামের একটা হোটেলে সাহরি খেতে ঢুকলাম।
হোটেল মালিক মো. রাকিব খুব আন্তরিকতার সঙ্গে খাবার পরিবেশন করলেন এবং আমাদের দীর্ঘ যাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। খাবার শেষে রিকশাচালক শুক্কর মিয়া চা পান করলেন। চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ার কিঞ্চিৎ আশঙ্কা ছিল। তাই প্যাডেলে চেপে রিকশা চালালেন কিছুক্ষণ। হাইওয়েতে বড় বড় গাড়ি দেখে দড়িপাড়ার রোড দিয়ে গ্রামের ভেতরে চলে গেলাম আমরা রিকশা নিয়ে। সেখানে একটি মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে আবার যাত্রা শুরু।
চলতে চলতে সকাল ৯টায় মাধবদী পৌঁছালাম আমরা। সকালবেলা রাস্তা খুব নীরব। বৈশাখী সূর্যের প্রখরতা তেমন নেই। ভাটিয়ালি গান চলছিল রিকশাওয়ালার ফোনে। তখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছিল। ইটাখোলা, চান্দিনা অতিক্রম করেছি বেলা ১২টায়। সেই মুহূর্তটা ভ্রমণের মধ্যে সবচেয়ে ক্লান্তিকর ছিল। প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছিল; কিন্তু রিকশায় ঘুমানোর কোনো সুযোগ নেই। নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে একটা অটো গ্যারেজে ৩০ মিনিট ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হলো প্রথমবারের মতো।
আশপাশে ঘোরাঘুরি করলাম। কিন্তু কোথাও বসব, সে সুযোগ হচ্ছিল না। যেহেতু রোজা আছি, তাই অহেতুক অপরিচিত হোটেলে বসে থাকাটাও অস্বস্তিকর ছিল। হাঁটতে হাঁটতে আবার রিকশার কাছে যাই। দুপুর ২টায় রায়পুরা জামে মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিই আমরা। তারপর গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে রামনগর দিয়ে ভৈরব চলে আসি। ভৈরব বাজারে প্রবেশের সময় আমার সার্জেন্ট পুলিশের সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপচারিতা হয়। ভৈরব চৌরাস্তায় আবার অটো গ্যারেজে রিকশা রেখে চালককে নিয়ে আশপাশে হাঁটছিলাম।
খাবার খাওয়া ছাড়া কোনো হোটেলে বসাটা অস্বস্তিকর ছিল। তাই রিকশার ড্রাইভারকে কিছু খাওয়ার প্রস্তাব করলাম। কিন্তু তিনি রোজা ভাঙতে নারাজ। আমরা তখন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থিত ভৈরব ব্রিজের পাশে দাঁড়ালাম। খেয়াল করলাম, সেখানে রিকশা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
স্থানীয় এক ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলাম এবং তিনি কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা করতে এলেন। খানিকক্ষণ আগে একজন পুলিশের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করলাম। ততক্ষণে ইফতারের সময় ঘনিয়ে এসেছে বলে রাস্তায় গাড়ির চাপ কম। সেই বড় ভাই আর পুলিশ সদস্যটির সহযোগিতায় ব্রিজ পার হওয়া সম্ভব হলো। এর মধ্যে ফোনটা বন্ধ হয়ে গেল।
একটা পানির বোতল আর কিছু শুকনো খাবার দিয়ে ইফতার সেরে ফেললাম আমরা। ভালো কোথাও বসে ইফতার করার প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না ড্রাইভার সাহেব। কারণ, এ সময় রাস্তা সম্পূর্ণ ফাঁকা ছিল এবং খুব দ্রুতই আমরা বিশ্বরোড চলে এলাম। সেখানে আমরা একটা ছোট খাবারের দোকানে বসে কিছু খেয়ে নিলাম। দোকানে মোবাইল চার্জে লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে ছোট ভাই রিফাতের ফোন এল। তাকে কোথায় আছি জানালাম। সে দ্রুতই দুই প্যাকেট বিরিয়ানি আর দোকানের কেনা জুস নিয়ে হাজির হলো। আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম। এবার রিকশায় সঙ্গী হলো রিফাত।
ভরা পেটে আমাদের যাত্রা আবার শুরু হলো। শুক্কর মিয়ার গানের সুরও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। শুক্কর মিয়া লোক ভালো, রসিক মানুষ। উচ্চ শব্দযুক্ত মোবাইল আছে তাঁর। মাঝেমধ্যেই গান, গজল বাজাচ্ছেন। আবার নিজেও গলা ছেড়ে গাইছেন। আমি রিকশাওয়ালাকে সম্বোধন করছিলাম ড্রাইভার সাহেব বলে। যতবারই এভাবে ডাকি, ততবারই ফিক করে একটা হাসি দেন তিনি। জিজ্ঞেস করলাম, ‘মামা হাসেন কেন?’ তিনি চাপা আনন্দে হেসে উত্তর দিলেন, ‘আমি আবার সাহেব নাকি!’
সারা দিনব্যাপী তাঁর কর্মকাণ্ড খেয়াল করলাম। আসলে প্রতিটি মানুষই তার পরিবারের কাছে একজন হিরো। প্রত্যেকেই যার যার আত্মসম্মানে বলিষ্ঠ। প্রতিদিন রিকশা নিয়ে বের হলে তিনি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন। এর মধ্যে কিছু রাস্তায় ব্যয় হয়, কিছু গ্যারেজে। সবকিছু বাদ দিয়েও এক থেকে দেড় হাজার টাকা তাঁর থেকে যায়। বিষয়টা নিয়ে ভাবলাম অনেকক্ষণ। অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করা আমার পরিচিত খুব কম মানুষের বেতনই ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার ওপরে। অথচ যাদের আমরা দরিদ্র রিকশাওয়ালা হিসেবে চিনি, তাঁরা প্রতিদিন যা উপার্জন করেন, তার পরিমাণ এক মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজারের বেশি। অথচ দুই শ্রেণির মানুষের জীবনযাপনে কত পার্থক্য! আমার কাছে বিষয়টা স্পষ্ট, কীভাবে শুধু পড়াশোনা মানুষে মানুষে পার্থক্য সৃষ্টি করতে পারে।
রাত ৯টা। গ্রামে প্রবেশ করলাম। দীর্ঘ প্রায় ১৯ ঘণ্টা ভ্রমণ শেষে দূর থেকে নিজের বাড়ি যখন দেখতে পাচ্ছিলাম, তখনকার অনুভূতি বলে প্রকাশ করার মতো নয়। সারা দিন কত কত বাড়ি ছেড়ে আসলাম, শত শত দোকানের সামনে দিয়ে গেলাম, রাস্তায় জীবনের সবচেয়ে ক্লান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাতে। কিন্তু কোথাও বসে যে একদণ্ড বিশ্রাম নেব, সেই আন্তরিক অনুভূতি ভেতরে তৈরি হয়নি। মাথায় একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছিল, কখন বাড়ি পৌঁছাব। সকল জল্পনা-কল্পনা শেষে যখন বাড়ির লাইট দেখা যাচ্ছিল দূর থেকে, তখন মন আনন্দে নেচে উঠছিল।
রিকশা কাছে আসতেই দেখি আম্মাসহ আশপাশের সবাই দাঁড়িয়ে বাড়ির সামনে। ১৯ ঘণ্টার দীর্ঘ রিকশাযাত্রা শেষ করে বাসায় উপস্থিত হলাম। কীভাবে ছিলি এতক্ষণ রিকশায়, ঠিকঠাক আছিস তো? সবার মনে কত প্রশ্ন। আর আমার ভাবনায় তখন একটাই কথা, বাড়ি পৌঁছে গেছি।
রিকশা ড্রাইভার শুক্কর মিয়াকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলো খাওয়াদাওয়ার জন্য। কিন্তু তিনিও চলে যেতে অস্থির। বুঝতে পারলাম, আমার মতো তাঁর মধ্যেও অস্থিরতা কাজ করছে, কখন বাড়ি যাবেন। বাড়িতে শুক্কর মিয়ার পরিবার অপেক্ষায় আছে।
লেখক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। ঈদের ছুটি। পরিচিতদের অনেকেই ছুটছে গ্রামের উদ্দেশ্যে। নিজের মনেও দিল পাখির উড়াল। কিন্তু উপায় কী। ঢাকা থেকে খুব কাছের দূরত্বও যে দুর্লঙ্ঘ হয়ে গেছে শুধু টিকিটের কারণে। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মিরাশানী গ্রামে। সেখানে যেতে আইঢাই মন নিয়ে বাস ও ট্রেনের টিকিট কত না খুঁজেছি। পাওয়া হলো কই।
কোথাও কোনো টিকিট নেই। তাই ১৯ ঘণ্টা রিকশা ভ্রমণ করে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌঁছাই। ঘটনা শুরু থেকে বলা যাক।
গত ২৮ এপ্রিল (বুধবার) দুপুর ২টায় ওয়ারির বাসা থেকে বের হয়েছি কাঁটাবনের দিকে একটা ইফতারের দাওয়াতের উদ্দেশ্যে। বাড়িতে পরিবারের সবাই একত্রিত হবে, শবে কদরকে কেন্দ্র করে বাড়িতে একটা উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হবে। সে আয়োজনে আমাকে অবশ্যই থাকতে হবে বলে তাড়া দিচ্ছিল বাড়ি থেকে। কমলাপুরে কয়েকবার সন্ধান করেছি, ট্রেনের কোনো টিকিট নেই। ২৭ রমজান বাড়িতে যেতে পারব না বলে হাল ছেড়ে দিয়েছি, ঢাকার কাজেই মনোযোগ দিয়েছি। কাঁটাবনে ইফতার শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। পরিচিতদের সঙ্গে বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছিলাম। রাত ১২টার দিকে ভর্তা বাড়িতে ইমরান ভাইয়ের সৌজন্যে একটা খাওয়াদাওয়ার আয়োজন হয়।
খাওয়াদাওয়া শেষে সৈকত ভাইয়ের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে আবারও আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলে। হঠাৎ মোবারক ভাই বলেন, ‘রাত অনেক হয়েছে বাসার দিকে চলে যা।’ সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। ওয়ারির উদ্দেশ্যে রিকশায় উঠলাম। কথায় কথায় জানা গেল, রিকশাওয়ালা ভদ্রলোকের বাড়িও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। টিএসসি থেকে উদ্দেশ্য ছিল ওয়ারি যাব। তখন তিনি গলা ছেড়ে মনের সুখে গান গাইছিলেন, ‘অ ছখিনা, গেচছ কি না ভুইল্ল্যা আমারে। আমি অহন রিসকা চালাই ঢাহা শহরে।’ গান শুনে আমি রসিকতা করে উত্তর দিলাম, ‘আপনার ছখিনে আপনারে ভুলে নাই।’ বেচারা আবেগপ্রবণ হয়ে গেলেন, থামিয়ে দিলেন গান। স্তব্ধ হয়ে পড়লেন কিছু সময়ের জন্য। তারপর করুণ কণ্ঠে বলতে লাগলেন, ‘মামা ৪ মাস যাবৎ বাড়িতে যাই না, বাড়ির কাউরে দেখি না।’
প্রস্তাব করলাম, ‘চলেন আজই বাড়িতে, যেহেতু নিজের গাড়ি। বউ-বাচ্চার সঙ্গে ঈদ করবেন।’ রিকশা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন—এমন কথা শুনে প্রথমে তিনি বিচলিত হয়েছিলেন। বললাম, ‘আরে মিয়া চলেন, গাড়ি চালাইয়াই তো যাবেন। এটা কোনো ব্যাপার হইল! টাকা-পয়সা নিয়ে চিন্তা করবেন না, সারা দিনে আপনার যা ইনকাম হয় পুষিয়ে দিব।’ যেই কথা, সেই কাজ! বেচারা রাজি।
আধ ঘণ্টার ব্যবধানে আমি আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বাসা থেকে সংগ্রহ করি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। যাত্রাবাড়ীতে রিকশাচালকের বাসা। পথিমধ্যে তিনিও তাঁর বাসা থেকে একটা ব্যাগ নিয়ে আসেন। যাত্রাপথে ব্যাটারি চালিত এই রিকশার চার্জ শেষ হয়ে যাবে—এটা নিশ্চিত। তবে চার্জ শেষ হলে প্যাডেল দিয়ে চলবে এমন ব্যবস্থাও আছে। রিকশায় চার্জ দেওয়ার জন্য তিনটি যাত্রাবিরতি হতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হলো। প্রথমটি নরসিংদী, দ্বিতীয়টি ভৈরব এবং তৃতীয়টি বিশ্বরোড। এই তিনটি জায়গার রিকশা গ্যারেজে চার্জ দিয়ে আবার ছুটে চলা হবে গন্তব্যে—এমনই সিদ্ধান্ত। গাড়ি চার্জে লাগিয়ে সে এলাকায় পরিচিত কাউকে পেলে, তাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সময় কাটানো যাবে।
মদনপুর দিয়ে রিকশা ঢুকল। সে রাস্তায় শুধু ট্রাক আর ট্রাক! গাজীপুরের সব ফ্যাক্টরির মালামাল সে রাস্তা দিয়েই চট্টগ্রাম বন্দরে যায়। রাস্তায় জ্যামের কারণে সারিবদ্ধ হয়ে ট্রাকের পর ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। তবে পাশ দিয়ে রিকশা চলার মতো যথেষ্ট ফাঁকা ছিল। তাই অল্প সময়ে পৌঁছে গেলাম গাউছিয়া। রাত ৩টা ১০ মিনিটে মায়ের দোয়া নামের একটা হোটেলে সাহরি খেতে ঢুকলাম।
হোটেল মালিক মো. রাকিব খুব আন্তরিকতার সঙ্গে খাবার পরিবেশন করলেন এবং আমাদের দীর্ঘ যাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। খাবার শেষে রিকশাচালক শুক্কর মিয়া চা পান করলেন। চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ার কিঞ্চিৎ আশঙ্কা ছিল। তাই প্যাডেলে চেপে রিকশা চালালেন কিছুক্ষণ। হাইওয়েতে বড় বড় গাড়ি দেখে দড়িপাড়ার রোড দিয়ে গ্রামের ভেতরে চলে গেলাম আমরা রিকশা নিয়ে। সেখানে একটি মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে আবার যাত্রা শুরু।
চলতে চলতে সকাল ৯টায় মাধবদী পৌঁছালাম আমরা। সকালবেলা রাস্তা খুব নীরব। বৈশাখী সূর্যের প্রখরতা তেমন নেই। ভাটিয়ালি গান চলছিল রিকশাওয়ালার ফোনে। তখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছিল। ইটাখোলা, চান্দিনা অতিক্রম করেছি বেলা ১২টায়। সেই মুহূর্তটা ভ্রমণের মধ্যে সবচেয়ে ক্লান্তিকর ছিল। প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছিল; কিন্তু রিকশায় ঘুমানোর কোনো সুযোগ নেই। নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে একটা অটো গ্যারেজে ৩০ মিনিট ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হলো প্রথমবারের মতো।
আশপাশে ঘোরাঘুরি করলাম। কিন্তু কোথাও বসব, সে সুযোগ হচ্ছিল না। যেহেতু রোজা আছি, তাই অহেতুক অপরিচিত হোটেলে বসে থাকাটাও অস্বস্তিকর ছিল। হাঁটতে হাঁটতে আবার রিকশার কাছে যাই। দুপুর ২টায় রায়পুরা জামে মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিই আমরা। তারপর গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে রামনগর দিয়ে ভৈরব চলে আসি। ভৈরব বাজারে প্রবেশের সময় আমার সার্জেন্ট পুলিশের সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপচারিতা হয়। ভৈরব চৌরাস্তায় আবার অটো গ্যারেজে রিকশা রেখে চালককে নিয়ে আশপাশে হাঁটছিলাম।
খাবার খাওয়া ছাড়া কোনো হোটেলে বসাটা অস্বস্তিকর ছিল। তাই রিকশার ড্রাইভারকে কিছু খাওয়ার প্রস্তাব করলাম। কিন্তু তিনি রোজা ভাঙতে নারাজ। আমরা তখন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থিত ভৈরব ব্রিজের পাশে দাঁড়ালাম। খেয়াল করলাম, সেখানে রিকশা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
স্থানীয় এক ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলাম এবং তিনি কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা করতে এলেন। খানিকক্ষণ আগে একজন পুলিশের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করলাম। ততক্ষণে ইফতারের সময় ঘনিয়ে এসেছে বলে রাস্তায় গাড়ির চাপ কম। সেই বড় ভাই আর পুলিশ সদস্যটির সহযোগিতায় ব্রিজ পার হওয়া সম্ভব হলো। এর মধ্যে ফোনটা বন্ধ হয়ে গেল।
একটা পানির বোতল আর কিছু শুকনো খাবার দিয়ে ইফতার সেরে ফেললাম আমরা। ভালো কোথাও বসে ইফতার করার প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না ড্রাইভার সাহেব। কারণ, এ সময় রাস্তা সম্পূর্ণ ফাঁকা ছিল এবং খুব দ্রুতই আমরা বিশ্বরোড চলে এলাম। সেখানে আমরা একটা ছোট খাবারের দোকানে বসে কিছু খেয়ে নিলাম। দোকানে মোবাইল চার্জে লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে ছোট ভাই রিফাতের ফোন এল। তাকে কোথায় আছি জানালাম। সে দ্রুতই দুই প্যাকেট বিরিয়ানি আর দোকানের কেনা জুস নিয়ে হাজির হলো। আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম। এবার রিকশায় সঙ্গী হলো রিফাত।
ভরা পেটে আমাদের যাত্রা আবার শুরু হলো। শুক্কর মিয়ার গানের সুরও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। শুক্কর মিয়া লোক ভালো, রসিক মানুষ। উচ্চ শব্দযুক্ত মোবাইল আছে তাঁর। মাঝেমধ্যেই গান, গজল বাজাচ্ছেন। আবার নিজেও গলা ছেড়ে গাইছেন। আমি রিকশাওয়ালাকে সম্বোধন করছিলাম ড্রাইভার সাহেব বলে। যতবারই এভাবে ডাকি, ততবারই ফিক করে একটা হাসি দেন তিনি। জিজ্ঞেস করলাম, ‘মামা হাসেন কেন?’ তিনি চাপা আনন্দে হেসে উত্তর দিলেন, ‘আমি আবার সাহেব নাকি!’
সারা দিনব্যাপী তাঁর কর্মকাণ্ড খেয়াল করলাম। আসলে প্রতিটি মানুষই তার পরিবারের কাছে একজন হিরো। প্রত্যেকেই যার যার আত্মসম্মানে বলিষ্ঠ। প্রতিদিন রিকশা নিয়ে বের হলে তিনি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন। এর মধ্যে কিছু রাস্তায় ব্যয় হয়, কিছু গ্যারেজে। সবকিছু বাদ দিয়েও এক থেকে দেড় হাজার টাকা তাঁর থেকে যায়। বিষয়টা নিয়ে ভাবলাম অনেকক্ষণ। অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করা আমার পরিচিত খুব কম মানুষের বেতনই ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার ওপরে। অথচ যাদের আমরা দরিদ্র রিকশাওয়ালা হিসেবে চিনি, তাঁরা প্রতিদিন যা উপার্জন করেন, তার পরিমাণ এক মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজারের বেশি। অথচ দুই শ্রেণির মানুষের জীবনযাপনে কত পার্থক্য! আমার কাছে বিষয়টা স্পষ্ট, কীভাবে শুধু পড়াশোনা মানুষে মানুষে পার্থক্য সৃষ্টি করতে পারে।
রাত ৯টা। গ্রামে প্রবেশ করলাম। দীর্ঘ প্রায় ১৯ ঘণ্টা ভ্রমণ শেষে দূর থেকে নিজের বাড়ি যখন দেখতে পাচ্ছিলাম, তখনকার অনুভূতি বলে প্রকাশ করার মতো নয়। সারা দিন কত কত বাড়ি ছেড়ে আসলাম, শত শত দোকানের সামনে দিয়ে গেলাম, রাস্তায় জীবনের সবচেয়ে ক্লান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাতে। কিন্তু কোথাও বসে যে একদণ্ড বিশ্রাম নেব, সেই আন্তরিক অনুভূতি ভেতরে তৈরি হয়নি। মাথায় একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছিল, কখন বাড়ি পৌঁছাব। সকল জল্পনা-কল্পনা শেষে যখন বাড়ির লাইট দেখা যাচ্ছিল দূর থেকে, তখন মন আনন্দে নেচে উঠছিল।
রিকশা কাছে আসতেই দেখি আম্মাসহ আশপাশের সবাই দাঁড়িয়ে বাড়ির সামনে। ১৯ ঘণ্টার দীর্ঘ রিকশাযাত্রা শেষ করে বাসায় উপস্থিত হলাম। কীভাবে ছিলি এতক্ষণ রিকশায়, ঠিকঠাক আছিস তো? সবার মনে কত প্রশ্ন। আর আমার ভাবনায় তখন একটাই কথা, বাড়ি পৌঁছে গেছি।
রিকশা ড্রাইভার শুক্কর মিয়াকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলো খাওয়াদাওয়ার জন্য। কিন্তু তিনিও চলে যেতে অস্থির। বুঝতে পারলাম, আমার মতো তাঁর মধ্যেও অস্থিরতা কাজ করছে, কখন বাড়ি যাবেন। বাড়িতে শুক্কর মিয়ার পরিবার অপেক্ষায় আছে।
লেখক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ইছামতী নদীতে পড়ে গেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ঘিওর বাজার-সংলগ্ন কুস্তা বন্দর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৯ মিনিট আগে
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ কর্মকর্তাকে গুরু ও লঘুদণ্ড দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। চিনিকলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
১৩ মিনিট আগে
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নত পোশাক ও সরকারি নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে আগুনের ভেতর ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ফুটপাত থেকে কেনা প্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি পরে আর মুখে এক টুকরো কাপড় বেঁধে জ্বলন্ত আগুন ও শ্বাসরুদ্ধকর কালো ধোঁয়ার ভেতরে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন এক সাধারণ যুবক।
১৮ মিনিট আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জোষিতা ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান ভূঁইয়া।
আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি তদন্তের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন। অনলাইন নিউজ পোর্টালটির ফেসবুক পেজের অ্যাডমিনসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের আসামি করে মামলা করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে ও সেই সঙ্গে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের কাছ থেকে অন্য প্রকার অবৈধ সুবিধা আদায়ের চেষ্টার অংশ হিসেবে আজকের কণ্ঠ জেনেশুনে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে এবং সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত চরিত্র সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে আসছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর ঢাকার বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।
মামলার বাদী বলেছেন, আজকের কণ্ঠ ও এর সহযোগীরা ১২ ডিসেম্বর বেলা ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে ‘মির্জা আব্বাসের ক্যাডারদের গুলিতে বিদ্ধ ওসমান হাদি’ শীর্ষক বিবৃতি প্রদান ও প্রকাশ করে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বাদী আরও বলেছেন, শুধু বিএনপি ঘোষিত ঢাকা-৮ আসনের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনাময় প্রার্থী মির্জা আব্বাসের ব্যক্তিগত চরিত্র ও আচরণ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে এই সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, দলের নেতা-কর্মীদের সম্মানহানি হয়েছে এবং দলীয় কর্মী হিসেবে তাঁরও মানহানি হয়েছে।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জোষিতা ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান ভূঁইয়া।
আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি তদন্তের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন। অনলাইন নিউজ পোর্টালটির ফেসবুক পেজের অ্যাডমিনসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের আসামি করে মামলা করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে ও সেই সঙ্গে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের কাছ থেকে অন্য প্রকার অবৈধ সুবিধা আদায়ের চেষ্টার অংশ হিসেবে আজকের কণ্ঠ জেনেশুনে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে এবং সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত চরিত্র সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে আসছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর ঢাকার বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।
মামলার বাদী বলেছেন, আজকের কণ্ঠ ও এর সহযোগীরা ১২ ডিসেম্বর বেলা ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে ‘মির্জা আব্বাসের ক্যাডারদের গুলিতে বিদ্ধ ওসমান হাদি’ শীর্ষক বিবৃতি প্রদান ও প্রকাশ করে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বাদী আরও বলেছেন, শুধু বিএনপি ঘোষিত ঢাকা-৮ আসনের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনাময় প্রার্থী মির্জা আব্বাসের ব্যক্তিগত চরিত্র ও আচরণ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে এই সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, দলের নেতা-কর্মীদের সম্মানহানি হয়েছে এবং দলীয় কর্মী হিসেবে তাঁরও মানহানি হয়েছে।

পরিচিতদের অনেকেই ছুটছে গ্রামের উদ্দেশ্যে। নিজের মনেও দিল পাখির উড়াল। কিন্তু উপায় কী। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মিরাশানী গ্রামে। সেখানে যেতে আইঢাই মন নিয়ে বাস ও ট্রেনের টিকিট কত না খুঁজেছি। কোথাও কোনো টিকিট নেই। তাই ১৯ ঘণ্টা রিকশা ভ্রমণ করে...
০৩ মে ২০২২
মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ইছামতী নদীতে পড়ে গেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ঘিওর বাজার-সংলগ্ন কুস্তা বন্দর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৯ মিনিট আগে
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ কর্মকর্তাকে গুরু ও লঘুদণ্ড দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। চিনিকলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
১৩ মিনিট আগে
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নত পোশাক ও সরকারি নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে আগুনের ভেতর ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ফুটপাত থেকে কেনা প্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি পরে আর মুখে এক টুকরো কাপড় বেঁধে জ্বলন্ত আগুন ও শ্বাসরুদ্ধকর কালো ধোঁয়ার ভেতরে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন এক সাধারণ যুবক।
১৮ মিনিট আগেঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ইছামতী নদীতে পড়ে গেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ঘিওর বাজার-সংলগ্ন কুস্তা বন্দর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার সার নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। দুর্ঘটনায় ট্রাকের চালক ও হেলপার সামান্য আহত হয়েছেন।
ট্রাকটিতে বিভিন্ন প্রকারের সারের প্রায় ৫৫০টি বস্তা ছিল। ঘিওরের ক্ষতিগ্রস্ত সার ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলী জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘিওর ফুলহারা বাজারের ডিলারদের জন্য সার নিয়ে ট্রাকটি ঘিওর বাজারের উদ্দেশে আসছিল। তবে চালক মূল সড়ক ব্যবহার না করে ভুলবশত একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা দিয়ে বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করলে ট্রাকটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়। তিনি চালকের ‘খামখেয়ালি’ আচরণকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আশিষ, আবুল হোসেন, জবেদ আলী জানান, ঘিওর কুস্তা বন্দর গরুহাট-সংলগ্ন রাস্তাটি অনেক দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সাধারণত এই পথে বড় যানবাহন চলাচল করে না। আজ সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ করে সারবোঝাই ট্রাকটি ওই রাস্তায় ঢুকতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহাবুব বলেন, দুর্ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। সার ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নদীতে পড়ে যাওয়া সার উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
এদিকে নদীর স্বল্প পানিতে সার মিশে যাওয়ায় পরিবেশ দূষণ, মাছের ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তহমিনা খাতুন জানান, ট্রাক উদ্ধারের পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ইছামতী নদীতে পড়ে গেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ঘিওর বাজার-সংলগ্ন কুস্তা বন্দর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার সার নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। দুর্ঘটনায় ট্রাকের চালক ও হেলপার সামান্য আহত হয়েছেন।
ট্রাকটিতে বিভিন্ন প্রকারের সারের প্রায় ৫৫০টি বস্তা ছিল। ঘিওরের ক্ষতিগ্রস্ত সার ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলী জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘিওর ফুলহারা বাজারের ডিলারদের জন্য সার নিয়ে ট্রাকটি ঘিওর বাজারের উদ্দেশে আসছিল। তবে চালক মূল সড়ক ব্যবহার না করে ভুলবশত একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা দিয়ে বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করলে ট্রাকটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়। তিনি চালকের ‘খামখেয়ালি’ আচরণকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আশিষ, আবুল হোসেন, জবেদ আলী জানান, ঘিওর কুস্তা বন্দর গরুহাট-সংলগ্ন রাস্তাটি অনেক দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সাধারণত এই পথে বড় যানবাহন চলাচল করে না। আজ সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ করে সারবোঝাই ট্রাকটি ওই রাস্তায় ঢুকতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহাবুব বলেন, দুর্ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। সার ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নদীতে পড়ে যাওয়া সার উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
এদিকে নদীর স্বল্প পানিতে সার মিশে যাওয়ায় পরিবেশ দূষণ, মাছের ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তহমিনা খাতুন জানান, ট্রাক উদ্ধারের পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পরিচিতদের অনেকেই ছুটছে গ্রামের উদ্দেশ্যে। নিজের মনেও দিল পাখির উড়াল। কিন্তু উপায় কী। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মিরাশানী গ্রামে। সেখানে যেতে আইঢাই মন নিয়ে বাস ও ট্রেনের টিকিট কত না খুঁজেছি। কোথাও কোনো টিকিট নেই। তাই ১৯ ঘণ্টা রিকশা ভ্রমণ করে...
০৩ মে ২০২২
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ কর্মকর্তাকে গুরু ও লঘুদণ্ড দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। চিনিকলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
১৩ মিনিট আগে
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নত পোশাক ও সরকারি নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে আগুনের ভেতর ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ফুটপাত থেকে কেনা প্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি পরে আর মুখে এক টুকরো কাপড় বেঁধে জ্বলন্ত আগুন ও শ্বাসরুদ্ধকর কালো ধোঁয়ার ভেতরে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন এক সাধারণ যুবক।
১৮ মিনিট আগেচুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ কর্মকর্তাকে গুরু ও লঘুদণ্ড দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। চিনিকলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ-সংক্রান্ত আদেশের চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান স্বাক্ষরিত আদেশ থেকে জানা গেছে, সাবেক এমডিসহ চার কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে আগামী ৩০ জুন ২০২৮ সাল পর্যন্ত তাঁদের বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা হয়েছে। অপর ছয়জনকে লঘুদণ্ড হিসেবে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কেরু চিনিকলে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণপ্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। ২০২৩ সালের মে মাসে যখন দেশের সব চিনিকলের মৌসুমি শ্রমিক ও কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়, তখন সারা দেশে একযোগে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেরু চিনিকলে ১৪০ জন শ্রমিক ও কর্মচারী পরীক্ষায় অংশ নেন।
কিন্তু কেরু চিনিকলে মূল অভিযোগ ওঠে স্থায়ীকরণে মেধাভিত্তিক নির্বাচন উপেক্ষা করা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের। এ বিষয়ে বঞ্চিত কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের সচিব চৌধুরী শহিদুল্লাহ কায়ছার ২০২৩ সালের ১৫ মে এক জরুরি পত্রে কেরু চিনিকলের এমডিকে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের সব কার্যক্রম অবিলম্বে স্থগিত করার নির্দেশ দেন।
দেশের অন্যান্য চিনিকল এই নির্দেশনা মেনে নিলেও কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ নির্দেশ অমান্য করে পরীক্ষার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪০ জনের মধ্যে ১০৪ জনকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে স্থায়ীকরণ সম্পন্ন করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তৎকালীন করপোরেশন চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম ২০২৩ সালের ১৭ মে কেরু চিনিকলের এমডি মোশাররফ হোসেনের কাছে কৈফিয়ত তলব করেন। ঘটনাটি পরে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃথক দুটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয়। তদন্ত শেষে ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আদেশপত্র থেকে জানা গেছে, তৎকালীন এমডি মো. মোশাররফ হোসেন, সদর দপ্তরের কর্মকর্তা সাইফুল আলম, কেরু চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. ইউসুফ আলী ও লেবার অফিসার মো. আল আমিনের বিরুদ্ধে করপোরেশন প্রবিধিমালা অনুযায়ী গুরুদণ্ড ও বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা হয়েছে। এই শাস্তি আগামী ৩০ জুন ২০২৮ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এ ছাড়া ওই আদেশে মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) আব্দুস সাত্তার, মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) সুমন কুমার সাহা, মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) রাজিবুল হাসান, ব্যবস্থাপক (খামার) সুমন কুমার ও পরিবহন প্রকৌশলী আবু সাঈদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে আরও বলা হয়, ১৯৮৯ সালের প্রবিধিমালার ৩৮ ধারা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনা দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি কার্যকর হবে না।
এ বিষয়ে দর্শনা কেরু চিনিকলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। তবে এটি অফিশিয়াল বিষয় হওয়ায় এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।’

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ কর্মকর্তাকে গুরু ও লঘুদণ্ড দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। চিনিকলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ-সংক্রান্ত আদেশের চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান স্বাক্ষরিত আদেশ থেকে জানা গেছে, সাবেক এমডিসহ চার কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে আগামী ৩০ জুন ২০২৮ সাল পর্যন্ত তাঁদের বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা হয়েছে। অপর ছয়জনকে লঘুদণ্ড হিসেবে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কেরু চিনিকলে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণপ্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। ২০২৩ সালের মে মাসে যখন দেশের সব চিনিকলের মৌসুমি শ্রমিক ও কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়, তখন সারা দেশে একযোগে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেরু চিনিকলে ১৪০ জন শ্রমিক ও কর্মচারী পরীক্ষায় অংশ নেন।
কিন্তু কেরু চিনিকলে মূল অভিযোগ ওঠে স্থায়ীকরণে মেধাভিত্তিক নির্বাচন উপেক্ষা করা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের। এ বিষয়ে বঞ্চিত কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের সচিব চৌধুরী শহিদুল্লাহ কায়ছার ২০২৩ সালের ১৫ মে এক জরুরি পত্রে কেরু চিনিকলের এমডিকে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের সব কার্যক্রম অবিলম্বে স্থগিত করার নির্দেশ দেন।
দেশের অন্যান্য চিনিকল এই নির্দেশনা মেনে নিলেও কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ নির্দেশ অমান্য করে পরীক্ষার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪০ জনের মধ্যে ১০৪ জনকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে স্থায়ীকরণ সম্পন্ন করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তৎকালীন করপোরেশন চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম ২০২৩ সালের ১৭ মে কেরু চিনিকলের এমডি মোশাররফ হোসেনের কাছে কৈফিয়ত তলব করেন। ঘটনাটি পরে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃথক দুটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয়। তদন্ত শেষে ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আদেশপত্র থেকে জানা গেছে, তৎকালীন এমডি মো. মোশাররফ হোসেন, সদর দপ্তরের কর্মকর্তা সাইফুল আলম, কেরু চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. ইউসুফ আলী ও লেবার অফিসার মো. আল আমিনের বিরুদ্ধে করপোরেশন প্রবিধিমালা অনুযায়ী গুরুদণ্ড ও বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা হয়েছে। এই শাস্তি আগামী ৩০ জুন ২০২৮ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এ ছাড়া ওই আদেশে মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) আব্দুস সাত্তার, মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) সুমন কুমার সাহা, মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) রাজিবুল হাসান, ব্যবস্থাপক (খামার) সুমন কুমার ও পরিবহন প্রকৌশলী আবু সাঈদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে আরও বলা হয়, ১৯৮৯ সালের প্রবিধিমালার ৩৮ ধারা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনা দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি কার্যকর হবে না।
এ বিষয়ে দর্শনা কেরু চিনিকলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। তবে এটি অফিশিয়াল বিষয় হওয়ায় এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।’

পরিচিতদের অনেকেই ছুটছে গ্রামের উদ্দেশ্যে। নিজের মনেও দিল পাখির উড়াল। কিন্তু উপায় কী। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মিরাশানী গ্রামে। সেখানে যেতে আইঢাই মন নিয়ে বাস ও ট্রেনের টিকিট কত না খুঁজেছি। কোথাও কোনো টিকিট নেই। তাই ১৯ ঘণ্টা রিকশা ভ্রমণ করে...
০৩ মে ২০২২
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ইছামতী নদীতে পড়ে গেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ঘিওর বাজার-সংলগ্ন কুস্তা বন্দর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৯ মিনিট আগে
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নত পোশাক ও সরকারি নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে আগুনের ভেতর ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ফুটপাত থেকে কেনা প্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি পরে আর মুখে এক টুকরো কাপড় বেঁধে জ্বলন্ত আগুন ও শ্বাসরুদ্ধকর কালো ধোঁয়ার ভেতরে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন এক সাধারণ যুবক।
১৮ মিনিট আগেকেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নত পোশাক ও সরকারি নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে আগুনের ভেতর ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ফুটপাত থেকে কেনা প্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি পরে আর মুখে এক টুকরো কাপড় বেঁধে জ্বলন্ত আগুন ও শ্বাসরুদ্ধকর কালো ধোঁয়ার ভেতরে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন এক সাধারণ যুবক। প্রতিবারই বেরিয়ে আসছিলেন বড় বড় বস্তা, কাপড়ের থান আর ঝুট নিয়ে। সেগুলো নিরাপদ জায়গায় ফেলে আবারও অন্ধকারের ভেতরে মিলিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
এভাবেই গতকাল শনিবার কেরানীগঞ্জের আগানগরে জাবালে নূর টাওয়ারে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অচেনা ব্যবসায়ীদের মালামাল আগুনের হাত থেকে রক্ষা করছিলেন কেরানীগঞ্জের কদমতলীর শহীদ নগরের বাসিন্দা শাহীন শিকদার।
নিজ জেলা শরীয়তপুরে নদীভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে ছোটবেলাতেই শাহীন আশ্রয় নেন কেরানীগঞ্জের কদমতলীতে। সেখানেই বড় হয়েছেন। ফুটপাতে ছোট ব্যবসা করে কোনোমতে চলে তাঁর ছয় সদস্যের সংসার। নিজের জীবনে অভাব-অনটন থাকলেও মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে কখনো পিছপা হন না তিনি।
গতকাল জাবালে নূর টাওয়ারে আগুন লাগার খবর পেয়ে সকালে ছুটে যান শাহীন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে হাত লাগান। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক মনে হওয়ায় সকাল ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু দুপুরের পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার খবর পেয়ে আর ঘরে থাকতে পারেননি। আবার ছুটে যান আগুনের মুখে।

দুপুরের পর আগুন যখন এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন কাপড়ের বস্তা আর থানই আগুন বাড়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আগুনের ভয়াবহতা দেখে শাহীন আর অপেক্ষা করেননি। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে কাপড় বস্তা টেনে বের করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলতে থাকেন। ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে এলে সঙ্গে থাকা অন্য স্বেচ্ছাসেবী ও ফায়ার সার্ভিসের সাহায্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যান।
সেদিন কালো কালিতে আচ্ছন্ন তাঁর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন শাহীন। আজ রোববার সকালে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মানবতার টানেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে নেমেছিলাম। মরব না বাঁচব সেটা তখন মাথায় ছিল না। শুধু মনে হচ্ছিল, আগুন যেন আর না বাড়ে।’
জাবালে নূর টাওয়ারের এক ব্যবসায়ী আসিফ বলেন, ‘এই লোকটির অবদান কখনো ভোলার মতো না। আমরা তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’ প্রত্যক্ষদর্শী তানাকা ইসলাম বলেন, ‘আজ সবার চাইতে বেশি কাজ করেছে এই মানুষটা।’
বন্ধু নাসির উদ্দীন বলেন, ‘শাহীন এমনই। কোনো স্বার্থ ছাড়া যেকোনো মানবিক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অহংকার নেই। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি। কখনো খারাপ ব্যবহার করেনি। এমন বন্ধু পেয়ে আমরা গর্বিত।’
শরীয়তপুরে নদীভাঙনে ভেঙে গেছে শাহীনের শৈশবের বাড়ি। ভাঙেনি স্বপ্ন, ভাঙেনি মানবতা। আগুনের ভেতর দাঁড়িয়ে শাহীন প্রমাণ করেছেন, মানুষ বড় হয় সম্পদে নয় বড় হয় হৃদয়ে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নত পোশাক ও সরকারি নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে আগুনের ভেতর ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ফুটপাত থেকে কেনা প্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি পরে আর মুখে এক টুকরো কাপড় বেঁধে জ্বলন্ত আগুন ও শ্বাসরুদ্ধকর কালো ধোঁয়ার ভেতরে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন এক সাধারণ যুবক। প্রতিবারই বেরিয়ে আসছিলেন বড় বড় বস্তা, কাপড়ের থান আর ঝুট নিয়ে। সেগুলো নিরাপদ জায়গায় ফেলে আবারও অন্ধকারের ভেতরে মিলিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
এভাবেই গতকাল শনিবার কেরানীগঞ্জের আগানগরে জাবালে নূর টাওয়ারে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অচেনা ব্যবসায়ীদের মালামাল আগুনের হাত থেকে রক্ষা করছিলেন কেরানীগঞ্জের কদমতলীর শহীদ নগরের বাসিন্দা শাহীন শিকদার।
নিজ জেলা শরীয়তপুরে নদীভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে ছোটবেলাতেই শাহীন আশ্রয় নেন কেরানীগঞ্জের কদমতলীতে। সেখানেই বড় হয়েছেন। ফুটপাতে ছোট ব্যবসা করে কোনোমতে চলে তাঁর ছয় সদস্যের সংসার। নিজের জীবনে অভাব-অনটন থাকলেও মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে কখনো পিছপা হন না তিনি।
গতকাল জাবালে নূর টাওয়ারে আগুন লাগার খবর পেয়ে সকালে ছুটে যান শাহীন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে হাত লাগান। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক মনে হওয়ায় সকাল ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু দুপুরের পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার খবর পেয়ে আর ঘরে থাকতে পারেননি। আবার ছুটে যান আগুনের মুখে।

দুপুরের পর আগুন যখন এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন কাপড়ের বস্তা আর থানই আগুন বাড়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আগুনের ভয়াবহতা দেখে শাহীন আর অপেক্ষা করেননি। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে কাপড় বস্তা টেনে বের করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলতে থাকেন। ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে এলে সঙ্গে থাকা অন্য স্বেচ্ছাসেবী ও ফায়ার সার্ভিসের সাহায্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যান।
সেদিন কালো কালিতে আচ্ছন্ন তাঁর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন শাহীন। আজ রোববার সকালে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মানবতার টানেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে নেমেছিলাম। মরব না বাঁচব সেটা তখন মাথায় ছিল না। শুধু মনে হচ্ছিল, আগুন যেন আর না বাড়ে।’
জাবালে নূর টাওয়ারের এক ব্যবসায়ী আসিফ বলেন, ‘এই লোকটির অবদান কখনো ভোলার মতো না। আমরা তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’ প্রত্যক্ষদর্শী তানাকা ইসলাম বলেন, ‘আজ সবার চাইতে বেশি কাজ করেছে এই মানুষটা।’
বন্ধু নাসির উদ্দীন বলেন, ‘শাহীন এমনই। কোনো স্বার্থ ছাড়া যেকোনো মানবিক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অহংকার নেই। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি। কখনো খারাপ ব্যবহার করেনি। এমন বন্ধু পেয়ে আমরা গর্বিত।’
শরীয়তপুরে নদীভাঙনে ভেঙে গেছে শাহীনের শৈশবের বাড়ি। ভাঙেনি স্বপ্ন, ভাঙেনি মানবতা। আগুনের ভেতর দাঁড়িয়ে শাহীন প্রমাণ করেছেন, মানুষ বড় হয় সম্পদে নয় বড় হয় হৃদয়ে।

পরিচিতদের অনেকেই ছুটছে গ্রামের উদ্দেশ্যে। নিজের মনেও দিল পাখির উড়াল। কিন্তু উপায় কী। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মিরাশানী গ্রামে। সেখানে যেতে আইঢাই মন নিয়ে বাস ও ট্রেনের টিকিট কত না খুঁজেছি। কোথাও কোনো টিকিট নেই। তাই ১৯ ঘণ্টা রিকশা ভ্রমণ করে...
০৩ মে ২০২২
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
৩ মিনিট আগে
মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ইছামতী নদীতে পড়ে গেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ঘিওর বাজার-সংলগ্ন কুস্তা বন্দর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৯ মিনিট আগে
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ কর্মকর্তাকে গুরু ও লঘুদণ্ড দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। চিনিকলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
১৩ মিনিট আগে