Ajker Patrika

কুমিল্লার লালমাইয়ে মিলেছে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, চলছে খনন

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লার লালমাইয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে খননকাজ। আজ সোমবার উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার লালমাইয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে খননকাজ। আজ সোমবার উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা সদর দক্ষিণে লালমাই পাহাড়ে আবারও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান মিলেছে। উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে (চারাবাড়ি) বসতঘর নির্মাণের জন্য মাটি খননের সময় ঘরের দেয়াল ও প্রাচীন কাঠামোর অংশবিশেষ পাওয়া যায়। শালবন বৌদ্ধবিহারের দক্ষিণে এই প্রথম কোনো প্রত্নক্ষেত্র পাওয়া গেল।

গত শনিবার থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত ও খননকাজ শুরু করেছে। গতকাল রোববার ও আজ সোমবারও খননকাজ করা হয়।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক দপ্তর ও কুমিল্লার একটি প্রত্নতাত্ত্বিক দল বালাগাজী মুড়ায় খনন ও অনুসন্ধানকাজ পরিচালনা করছে।

আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সাত সদস্যের খনন টিমে আরও আছেন মাঠ কর্মকর্তা মো. আবু সাইদ ইনাম তানভীর, ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলম, গবেষণা সহকারী মো. ওমর ফারুক, সার্ভেয়ার চাইথোয়াই মার্মা, ফটোগ্রাফার শঙ্খনীল দাশ ও পটারী রেকর্ডার রিপন মিয়া।

খননকাজ–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, স্থাপনাটি কোনো রাজা বা জমিদার আমলের স্থাপনার অংশ। তবে চূড়ান্ত তথ্য নিশ্চিত হতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বিশ্লেষণ ও গবেষণা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ১০ থেকে ১২ একর এলাকাজুড়ে খননকাজ পরিচালনা করা গেলে শালবন বিহার, আনন্দ বিহার কিংবা রূপবান মুড়ার মতো আরও একটি নিদর্শন উন্মোচিত হতে পারে। এমনকি ব্যতিক্রমী কোনো নিদর্শন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, শালবন বৌদ্ধবিহারের দক্ষিণে এই প্রথম কোনো প্রত্নক্ষেত্র পাওয়া গেল। খ্রিষ্টীয় সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীর কুমিল্লা ময়নামতি অঞ্চলে পট্টিকেরা জনপদের অংশও হতে পারে এটি। পট্টিকেরা সমতটের পাঁচটি রাজধানীর একটি ছিল। বিভিন্ন সময় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা এই অঞ্চলে পট্টিকেরার বিষয়ে উল্লেখ করলেও তার নিদর্শন উন্মুক্ত হয়নি।

কুমিল্লার লালমাইয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে খননকাজ। আজ সোমবার উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার লালমাইয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে খননকাজ। আজ সোমবার উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান ও খননকাজ পরিচালনার সদস্য মো. শাহীন আলম জানান, পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বড় বড় ইট দিয়ে তৈরি প্রায় ছয় ফুট চওড়া প্রাচীন একটি দেয়ালের অংশবিশেষ উন্মোচিত হয়েছে, যা হয়তো কোনো স্থাপনার কর্নার। খননকালে মৃৎপাত্রের ভাঙা টুকরোবিশিষ্ট তিন-চার ফুট পুরো একাধিক মাটির স্তর সরানোর পরে প্রাচীন সভ্যতার এই ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলে।

বালাগাজীর মুড়া নামে পরিচিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটিতে উন্মোচিত প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ লালমাই ময়নামতিতে আবিষ্কৃত হাজার বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান শালবন বিহার, আনন্দ বিহার, ভোজ বিহার, ইটাখোলা ও রূপবান মুড়ার প্রাচীন মন্দির ও বিহারের ধ্বংসাবশেষের সমসাময়িক হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধান দল।

কুমিল্লার লালমাইয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে খননকাজ। আজ সোমবার উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার লালমাইয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়ার পর চলছে খননকাজ। আজ সোমবার উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মো. শাহীন আলম আরও জানান, বালাগাজীর মুড়ায় মাত্রই তো খনন ও অনুসন্ধানকাজ শুরু হয়েছে। এটির প্রকৃত সময়কাল সম্পূর্ণ খনন ও গবেষণাকাজ সম্পন্ন করার পরে জানা যাবে। বালাগাজীর মুড়া স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে চারাবাড়ি নামে সুপরিচিত। মূলত এ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটির উপরিভাগে প্রচুর চারা অর্থাৎ মৃৎপাত্রের ভগ্ন টুকরো থাকায় স্থানীয়ভাবে এই নামকরণ হয়।

খনন ও অনুসন্ধানকাজের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মাঠ কর্মকর্তা) মো. আবু সাইদ ইনাম তানভীর বলেন, বালাগাজীর মুড়ায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধানকাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত তা চলবে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রায় ৮০ বছর আগে বালাগাজীর মুড়াকে সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ঘোষণা করা হয়; যা ১৯৪৫ সালের শিমলা গেজেটে প্রকাশ করা হয়। নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে মহাপরিচালক সাবিনা আলমের অনুমোদন ও নির্দেশনা নিয়ে এ বছর কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলায় অবস্থিত বালাগাজীর মুড়ায় খনন ও অনুসন্ধানকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার বলেন, কুমিল্লার লালমাই বৌদ্ধবিহারের মতো এখানেও প্রত্নতত্ত্বের সন্ধান মিলেছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের লোকজন খননকাজ চালাচ্ছেন। খননকাজ শেষ হলে স্থাপনার পরিধি বোঝা যাবে। এখানে আরেকটি প্রত্নতত্ত্ব সাইট উন্মুক্ত হবে আশা করছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিজিটাল যুগে যেভাবে বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চল

বিজ্ঞপ্তি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ এখন দ্রুত ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামগুলোও ধীরে ধীরে ডিজিটাল সেবার আওতায় চলে আসছে। সেইসাথে মানুষের জীবনযাপন, শিক্ষা আর যোগাযোগের ধরনও বদলে যাচ্ছে। আগে যেখানে দূরত্ব ছিল বাধা, এখন সেখানে প্রযুক্তি এনে দিয়েছে নতুন সুযোগ। মোবাইল ইন্টারনেটের বিস্তার, সাশ্রয়ী স্মার্টফোন আর বাড়তে থাকা ডিজিটাল শিক্ষার কারণে গ্রামীণ জীবন বদলে যাচ্ছে। অনলাইন শিক্ষা, মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা ছোট ব্যবসা, সব ক্ষেত্রেই ডিজিটাল প্রযুক্তি এখন নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে।

এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আগে যে সুযোগগুলো শুধু শহরে ছিল, এখন তা ধীরে ধীরে পৌঁছে যাচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। চাষি, দোকানদার, ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি গৃহিণীরাও এখন মোবাইল ওয়ালেট ব্যবহার করছেন। তারা টাকা পাঠাচ্ছেন, বিল পরিশোধ করছেন আবার সঞ্চয়ও করছেন ফোনের মাধ্যমেই। নরসিংদীর সবজি চাষি রফিক, বাজারে না গিয়েই বিকাশে টাকা পাঠিয়ে সার কিনে নিচ্ছেন। নোয়াখালীর এক গৃহিণী সুলতানা, বিকাশের মাধ্যমেই মেয়ের কলেজ ফি দিয়ে দিচ্ছেন।

আবার গ্রামের অনেক তরুণ ও শিক্ষার্থী স্মার্টফোনে অনলাইন কোর্স করছে। কেউ ইংরেজি শিখছে, কেউ কম্পিউটার বা ডিজাইন শেখার চেষ্টা করছে। পাবনার আমিনা পরিবারের দেখাশোনা করা পাশাপাশি প্রতিদিন অনলাইনে সেলাই শেখেন। দিনাজপুরের রুবেল ইংরেজি শেখার অ্যাপ ব্যবহার করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

একইভাবে কৃষকেরাও এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফসলের যত্ন নিচ্ছেন। অনেক কৃষক এখন ইউটিউব দেখে বা অ্যাপ ব্যবহার করে জানতে পারছেন কীভাবে পানি সাশ্রয় করে সেচ দেওয়া যায় বা বাজারে কোন ফসলের দাম কেমন। এতে কৃষকের উৎপাদন ও আয় বাড়ছে।

আগে চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে হতো। এখন অনেকেই অনলাইনে ডাক্তার দেখাচ্ছেন। এভাবে সবকিছুই এখন মানুষের হাতের নাগালে। ফলে মানুষের সময় বাঁচছে, নিরাপত্তা বাড়ছে এবং কষ্টও কম হচ্ছে।

এই ডিজিটাল পরিবর্তনের সময়ে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইমো হয়ে উঠেছে মানুষের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর মাধ্যমে পরিবার-পরিজন, প্রবাসী স্বজন বা দূরের বন্ধুরা একে অপরের সাথে কথা বলতে পারেন, খোঁজ-খবর নিতে পারেন। ইমো দুর্বল ইন্টারনেটেও ভালোভাবে কাজ করে তাই টুজি বা থ্রিজি নেটওয়ার্কেও ভিডিও কল স্পষ্ট হয়, যা প্রবাসীদের জন্য একটি বড় আশীর্বাদ। দুর্বল নেটওয়ার্কেও এইচডি ভিডিও কলের সুযোগ করে দেয়ায় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ইমোর মত মেসেজিং অ্যাপগুলো। ভিডিও কলের সাহায্যে সহজেই প্রবাসীরা পরিবারের সঙ্গে একসাথে বসে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, টাকা পাঠানোর আগে পরিবারকে জানিয়ে দিতে পারেন; এমনকি উৎসবের আনন্দেও পরিবারের সাথে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

আমাদের দেশে এই ডিজিটাল পরিবর্তনকে টেকসই করতে হলে দরকার সবার জন্য সাশ্রয়ী ইন্টারনেট, ডিজিটাল শিক্ষা এবং নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ। এখনও বাংলাদেশের অনেক গ্রামে ভালো নেটওয়ার্ক পাওয়া কঠিন। এমনকি, ইন্টারনেটের খরচ তুলনামূলক বেশি। ফলে অনেকে ইন্টারনেটের অভাবে অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। ইন্টারনেট সাশ্রয়ী হলে আরও বেশি মানুষ শিক্ষা, কাজ ও যোগাযোগের সাথে যুক্ত হতে পারবেন। ডিজিটাল সাক্ষরতা এক্ষেত্রে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যেমন- নিরাপদভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা, তথ্য যাচাই করা ও নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে এই বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থলে আরও একটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। রাত প্রায় ১১টা ১০ মিনিটের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ বা কার্যালয়-সংশ্লিষ্ট কেউ বিস্ফোরণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি।

রাজধানীতে গত কয়েক ঘণ্টায় একাধিক স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রাতে মিরপুরের শাহ আলী মার্কেটের সামনে পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময় ধানমন্ডি ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশের শাহ আলী মার্কেটের সামনে এসব বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময় খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপরেও একটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়।

দিনজুড়ে রাজধানীর আরও কয়েকটি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত চারটি স্থানে সাতটি বিস্ফোরণের ঘটনা নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এগুলোর মধ্যে মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনার সামনে এবং ভেতরে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ হয়। ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারের সামনে দুটি এবং ধানমন্ডি ৯/এ এলাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে আরও দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

এ ছাড়া গতকাল ভোর হতেই রাজধানীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে শাহজাদপুরে ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। সকাল সোয়া ৬টার দিকে মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কাছে আকাশ পরিবহনের আরেকটি বাসেও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

রাজধানীতে ধারাবাহিক ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের এসব ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নগরজুড়ে টহল জোরদার করেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনা, মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্য নিহত

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছীতে ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্য রায়হান (৩২) নিহত হয়েছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার কেশাইল গ্রামের শ্যালুকুড়ি ব্রিজের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। এক সুখী পরিবারের হাসি মুহূর্তেই নিভে গেল।

থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিমালা গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে রায়হান ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে থানায় কর্মরত ছিলেন। কিছুদিনের ছুটি কাটাতে তিনি স্ত্রী মিম্মা ও চার বছরের শিশুপুত্র আব্দুর রহমানকে নিয়ে নিজ গ্রামে এসেছিলেন। আজ দুপুরে মোটরসাইকেলযোগে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আক্কেলপুর যাচ্ছিলেন। পথে কেশাইল শ্যালুকুড়ি ব্রিজের কাছাকাছি পৌঁছালে এক ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে সামনে থাকা একটি ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে রায়হান ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হান মারা যান।

দুর্ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী মিম্মা ও চার বছরের শিশুসন্তান আব্দুর রহমানও গুরুতর আহত হয়। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নবগঠিত আসন বাতিল, গাজীপুরবাসী হতাশ

গাজীপুর প্রতিনিধি
নবগঠিত আসন বাতিল, গাজীপুরবাসী হতাশ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের আসন পাঁচটি থেকে বাড়িয়ে ছয়টি নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল, তা অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ফলে পাঁচটি সংসদীয় আসনই থাকবে গাজীপুরে। এ ঘটনায় বৃহত্তর টঙ্গীসহ ওই এলাকায় রাজনৈতিক হতাশা দেখা দিয়েছে।

হতাশা প্রকাশ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, প্রবীণ রাজনীতিক ও সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, গাজীপুর-৬ আসনটি নাগরিক ও ভোটারদের জন্য নতুন সম্ভাবনার সূচনা করতে পারত। কিন্তু আজকের রায়ে সেই সম্ভাবনা ব্যর্থ হলো।

হাসান সরকারের চাচাতো ভাই মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমরা আপিল করব এবং গাজীপুর-৬ আসন পুনর্বহাল করব। সবাইকে ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করছি। জয় আমাদেরই হবে, ইনশা আল্লাহ।’

জামায়াতে ইসলামীর গাজীপুর-৬ আসনের মনোনীত প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘গাজীপুর-৬ আসনটি গাজীপুরবাসীর আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ছিল। টঙ্গী, গাছা ও হায়দারাবাদের মানুষ এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। আমি আশা করি, নির্বাচন কমিশন আপিলসহ আইনি পদক্ষেপ নেবে। আমরা সবাই মিলেই গাজীপুর-৬ আসনের জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করব, ইনশা আল্লাহ।’

গাজীপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘গাজীপুর একটি জনবহুল শিল্পাঞ্চল। এখানে ছয়টি আসন থাকা গণতান্ত্রিক ভারসাম্যের জন্য জরুরি ছিল। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত ছিল জনগণভিত্তিক ও যৌক্তিক। আমরা চাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিষয়টি সমাধান করা হোক।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাজহারুল আলম বলেন,‘গাজীপুরে পাঁচটি আসন বহাল থাকলে এটি দেশের অন্যতম বড় বৈষম্যের উদাহরণ হবে। বাসন মেট্রো থানা ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক ও মানবিক বিবেচনায় গাজীপুর সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কালিয়াকৈরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। আশা করি, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন।’

গাজীপুর নাগরিক ফোরামের সভাপতি মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, গাজীপুরের জনসংখ্যা ও প্রশাসনিক বাস্তবতা বিবেচনায় ছয়টি আসনই যৌক্তিক ছিল। নতুন আসন বাতিল হলে নাগরিক অংশগ্রহণ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা ব্যাহত হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গাজীপুর-২-এ আগেভাগে প্রার্থী ঘোষণা এবং গাজীপুর-৬ বাতিলে আমরা দুদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। টঙ্গী, গাছা ও পুবাইল এলাকার মানুষ এখন না প্রার্থী পাচ্ছে, না এমপি পাচ্ছে—এটা চরম হতাশার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত