মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
দেশে মাদক আসা রোধ করতে স্থলপথে নজরদারি কড়াকড়ি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে স্থলসীমান্ত দিয়ে খুব বেশি সুবিধা করতে না পারায় সাগরপথেই মাদকের চালান আনছে চোরাকারবারিরা। সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মনে করছে, দেশে এখন মিয়ানমার থেকে যে মাদক আসছে, তার ৮০ শতাংশ সাগরপথে আনা হচ্ছে।
টানা ১০ মাস সংঘাতের পর জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তও তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন পুরো রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জান্তা ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সঙ্গে তাদের লড়াই চলছে। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও রাখাইনে মাদক উৎপাদন বন্ধ হয়নি। উপরন্তু জল ও স্থলপথে সীমান্ত পেরিয়ে সেখান থেকে ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) বিভিন্ন ধরনের মাদক বাংলাদেশে ঢুকছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্তসংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি অস্ত্র ও রসদ জোগাতে মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে তারা বাহক হিসেবে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে। সম্প্রতি স্থলপথে মাদক পাচার রোধে তল্লাশি ও নজরদারি বাড়ায় পাচারকারীরা সাগরপথ ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ ছাড়াও দেশটি থেকে সাগরপথে বিভিন্ন দেশে মাদক পাচার হচ্ছে।
বিজিবি বলছে, মাছ ধরার নৌযানে করে দেশের সাগর উপকূল হয়ে ৮০ শতাংশ মাদক ঢুকছে। বিজিবি আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে নাফ নদী ও সাগরে চলাচল করা বাংলাদেশি অসংখ্য নৌযানের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যাতায়াতের দৃশ্য দেখতে পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিজিবি, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও র্যাবের অভিযানেও সাগর উপকূলে প্রায় প্রতিদিনই মাদকের বড় বড় চালান ধরা পড়ছে। একই পথে রাখাইনে পাচারের সময় খাদ্যপণ্য, নির্মাণসামগ্রী, ওষুধ ও জ্বালানি জব্দ করা হচ্ছে।
আটক ব্যক্তিদের দুই-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা নাগরিক।
সর্বশেষ টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের স্লুইসগেট এলাকায় র্যাব ও বিজিবি যৌথ অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে। আটক ব্যক্তি মিয়ানমারের মংডু শহরের খারাংখালী এলাকার মো. ওমর সিদ্দিক (২৮)।
এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর টেকনাফের কায়ুকখালী ফিশারিঘাট এলাকায় একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করেছে বিজিবি। এ সময় টেকনাফের জাদিমুরা ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের এ-ব্লকের বাসিন্দা মো. আনাছ (৪০) ও টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. সাদেক (১৯) আটক হন। একই দিনে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ৪০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ মিয়ানমারের রাখাইনের বুথিডং এলাকার বাসিন্দা মো. ছলিমকে (৩০) আটক করে বিজিবি।
এদিকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বলছে, পাচারকারী চক্র বাংলাদেশি খাদ্যপণ্যের বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বড়িসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নিয়ে আসছে। ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাখাইনে পাচারের সময় কোস্ট গার্ড টেকনাফের সেন্ট মার্টিন ও ছেঁড়া দ্বীপসংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্যসহ ১০ জন পাচারকারীকে আটক করেছে। মাছ ধরার এই ট্রলারে করে পাচারকারী দল ১০ হাজার কেজি ডাল, ২ হাজার ৫০০ কেজি রসুন, ১ হাজার কেজি টেস্টিং সল্ট, ২ হাজার ৫০০ কেজি পেঁয়াজ, ১ লাখ ৫০ হাজার পিস মশার কয়েল, ১০ হাজার পিস রয়েল টাইগার এনার্জি ড্রিংকস পাচার করছিল।
এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোস্ট গার্ড বিপুল খাদ্যপণ্যভর্তি একটি মাছ ধরার ট্রলার আটক করে। এফবি আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি-১ নামে এই ট্রলার থেকে ১৫ হাজার কেজি আলু, ৭৫০ কেজি রসুন, ২ হাজার ৫০০ কেজি ময়দা, ২ হাজার ৫০০ কেজি মসুর ডাল, ১৪ হাজার ৪০০ পিস কোমল পানীয় (টাইগার-স্পিড), ৬০০টি গ্যাস লাইটার, ৮০০ পিস শেভিং ব্লেড, ৩টি মোবাইল ফোন, ১টি বাইনোকুলার, ১টি কম্পাস ও ৪০০ ফুট কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। আটক করা হয় পাচারকারী দলের ১১ সদস্যকে।
কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, পাচারকারী চক্র বাংলাদেশি খাদ্যপণ্যের বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বড়িসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নিয়ে আসছে। কোস্ট গার্ড চোরাচালান প্রতিরোধে অভিযানের পাশাপাশি নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও রামু এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অভিযান চালিয়ে বিজিবি প্রায় ২ কোটি ৩৪ হাজার ইয়াবা বড়ি, ১৪০ কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ২৬ কেজি হেরোইন, প্রায় সাড়ে ৪ কেজি কোকেন, ৪ কেজি আফিমসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক জব্দ করেছে। এসব মাদকের আনুমানিক মূল্য ১ হাজার ৩২২ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি।
এরপর গত ১৫ জুলাই থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরও অন্তত ৩২ লাখ ইয়াবা বড়ি জব্দ করেছে বিজিবি। এ ছাড়া কোস্ট গার্ড, র্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।
সম্প্রতি সড়ক, রেল ও বিমানবন্দরে তল্লাশি ও নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় সাগর উপকূল মাদক পাচারে নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে।
বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, নাফ নদী ও সাগর উপকূলীয় মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা এলাকা দিয়ে মাদক চোরাচালানের রুট তৈরি হয়েছে। এসব রুটে মাছ ধরার ট্রলারে করে ৮০ শতাংশ মাদক পাচার হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে আসা এসব মাদকদ্রব্য শুধু বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করছে তা নয়, বরং অন্যান্য দেশেও পাচার হচ্ছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন শাহীন বলেন, মাদক ও খাদ্যপণ্য চোরাচালানের ২১-২২ পয়েন্ট রয়েছে। এসব পয়েন্টে প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোরাকারবারিদের শনাক্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মাদক পাচারে জড়িত বাহকদের ধরার পাশাপাশি হোতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কক্সবাজার জেলা কারাগারে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্দী কয়েদি ছিল ২ হাজার ৬৪৪ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ১৪৮ জন মাদক মামলার আসামি বলে জানান জেলার মোহাম্মদ আবু মুছা। তিনি জানান, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৫৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিক।
গত ১৪ জুলাই কক্সবাজার বিয়াম আঞ্চলিক কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসিকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের একটি মাদকবিরোধী টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।
মাদকবিরোধী টাস্কফোর্সের সদস্যসচিব ও কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সৌমেন মণ্ডল বলেন, টাস্কফোর্স গঠনের পর মাদক উদ্ধার ও প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ দৃশ্যমান। সড়কপথে তল্লাশি ও নজরদারি বেড়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে মাদক চিহ্নিত করতে স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে।
দেশে মাদক আসা রোধ করতে স্থলপথে নজরদারি কড়াকড়ি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে স্থলসীমান্ত দিয়ে খুব বেশি সুবিধা করতে না পারায় সাগরপথেই মাদকের চালান আনছে চোরাকারবারিরা। সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মনে করছে, দেশে এখন মিয়ানমার থেকে যে মাদক আসছে, তার ৮০ শতাংশ সাগরপথে আনা হচ্ছে।
টানা ১০ মাস সংঘাতের পর জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তও তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন পুরো রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জান্তা ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সঙ্গে তাদের লড়াই চলছে। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও রাখাইনে মাদক উৎপাদন বন্ধ হয়নি। উপরন্তু জল ও স্থলপথে সীমান্ত পেরিয়ে সেখান থেকে ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) বিভিন্ন ধরনের মাদক বাংলাদেশে ঢুকছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্তসংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি অস্ত্র ও রসদ জোগাতে মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে তারা বাহক হিসেবে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে। সম্প্রতি স্থলপথে মাদক পাচার রোধে তল্লাশি ও নজরদারি বাড়ায় পাচারকারীরা সাগরপথ ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ ছাড়াও দেশটি থেকে সাগরপথে বিভিন্ন দেশে মাদক পাচার হচ্ছে।
বিজিবি বলছে, মাছ ধরার নৌযানে করে দেশের সাগর উপকূল হয়ে ৮০ শতাংশ মাদক ঢুকছে। বিজিবি আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে নাফ নদী ও সাগরে চলাচল করা বাংলাদেশি অসংখ্য নৌযানের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যাতায়াতের দৃশ্য দেখতে পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিজিবি, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও র্যাবের অভিযানেও সাগর উপকূলে প্রায় প্রতিদিনই মাদকের বড় বড় চালান ধরা পড়ছে। একই পথে রাখাইনে পাচারের সময় খাদ্যপণ্য, নির্মাণসামগ্রী, ওষুধ ও জ্বালানি জব্দ করা হচ্ছে।
আটক ব্যক্তিদের দুই-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা নাগরিক।
সর্বশেষ টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের স্লুইসগেট এলাকায় র্যাব ও বিজিবি যৌথ অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে। আটক ব্যক্তি মিয়ানমারের মংডু শহরের খারাংখালী এলাকার মো. ওমর সিদ্দিক (২৮)।
এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর টেকনাফের কায়ুকখালী ফিশারিঘাট এলাকায় একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করেছে বিজিবি। এ সময় টেকনাফের জাদিমুরা ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের এ-ব্লকের বাসিন্দা মো. আনাছ (৪০) ও টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. সাদেক (১৯) আটক হন। একই দিনে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ৪০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ মিয়ানমারের রাখাইনের বুথিডং এলাকার বাসিন্দা মো. ছলিমকে (৩০) আটক করে বিজিবি।
এদিকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বলছে, পাচারকারী চক্র বাংলাদেশি খাদ্যপণ্যের বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বড়িসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নিয়ে আসছে। ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাখাইনে পাচারের সময় কোস্ট গার্ড টেকনাফের সেন্ট মার্টিন ও ছেঁড়া দ্বীপসংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্যসহ ১০ জন পাচারকারীকে আটক করেছে। মাছ ধরার এই ট্রলারে করে পাচারকারী দল ১০ হাজার কেজি ডাল, ২ হাজার ৫০০ কেজি রসুন, ১ হাজার কেজি টেস্টিং সল্ট, ২ হাজার ৫০০ কেজি পেঁয়াজ, ১ লাখ ৫০ হাজার পিস মশার কয়েল, ১০ হাজার পিস রয়েল টাইগার এনার্জি ড্রিংকস পাচার করছিল।
এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোস্ট গার্ড বিপুল খাদ্যপণ্যভর্তি একটি মাছ ধরার ট্রলার আটক করে। এফবি আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি-১ নামে এই ট্রলার থেকে ১৫ হাজার কেজি আলু, ৭৫০ কেজি রসুন, ২ হাজার ৫০০ কেজি ময়দা, ২ হাজার ৫০০ কেজি মসুর ডাল, ১৪ হাজার ৪০০ পিস কোমল পানীয় (টাইগার-স্পিড), ৬০০টি গ্যাস লাইটার, ৮০০ পিস শেভিং ব্লেড, ৩টি মোবাইল ফোন, ১টি বাইনোকুলার, ১টি কম্পাস ও ৪০০ ফুট কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। আটক করা হয় পাচারকারী দলের ১১ সদস্যকে।
কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, পাচারকারী চক্র বাংলাদেশি খাদ্যপণ্যের বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বড়িসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নিয়ে আসছে। কোস্ট গার্ড চোরাচালান প্রতিরোধে অভিযানের পাশাপাশি নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও রামু এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অভিযান চালিয়ে বিজিবি প্রায় ২ কোটি ৩৪ হাজার ইয়াবা বড়ি, ১৪০ কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ২৬ কেজি হেরোইন, প্রায় সাড়ে ৪ কেজি কোকেন, ৪ কেজি আফিমসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক জব্দ করেছে। এসব মাদকের আনুমানিক মূল্য ১ হাজার ৩২২ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে বিজিবি।
এরপর গত ১৫ জুলাই থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরও অন্তত ৩২ লাখ ইয়াবা বড়ি জব্দ করেছে বিজিবি। এ ছাড়া কোস্ট গার্ড, র্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।
সম্প্রতি সড়ক, রেল ও বিমানবন্দরে তল্লাশি ও নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় সাগর উপকূল মাদক পাচারে নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে।
বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, নাফ নদী ও সাগর উপকূলীয় মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা এলাকা দিয়ে মাদক চোরাচালানের রুট তৈরি হয়েছে। এসব রুটে মাছ ধরার ট্রলারে করে ৮০ শতাংশ মাদক পাচার হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে আসা এসব মাদকদ্রব্য শুধু বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করছে তা নয়, বরং অন্যান্য দেশেও পাচার হচ্ছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন শাহীন বলেন, মাদক ও খাদ্যপণ্য চোরাচালানের ২১-২২ পয়েন্ট রয়েছে। এসব পয়েন্টে প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোরাকারবারিদের শনাক্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মাদক পাচারে জড়িত বাহকদের ধরার পাশাপাশি হোতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কক্সবাজার জেলা কারাগারে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্দী কয়েদি ছিল ২ হাজার ৬৪৪ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ১৪৮ জন মাদক মামলার আসামি বলে জানান জেলার মোহাম্মদ আবু মুছা। তিনি জানান, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৫৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিক।
গত ১৪ জুলাই কক্সবাজার বিয়াম আঞ্চলিক কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসিকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের একটি মাদকবিরোধী টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।
মাদকবিরোধী টাস্কফোর্সের সদস্যসচিব ও কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সৌমেন মণ্ডল বলেন, টাস্কফোর্স গঠনের পর মাদক উদ্ধার ও প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ দৃশ্যমান। সড়কপথে তল্লাশি ও নজরদারি বেড়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে মাদক চিহ্নিত করতে স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল সোমবার প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে কেন্দ্রীয় সংসদে দুজন সহসভাপতি (ভিপি), একজন সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থীসহ বাদ পড়েছেন ১৯ প্রার্থী। অন্যদিকে হল সংসদ নির্বাচনে কোনো
১ ঘণ্টা আগেবেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে পশ্চিমাঞ্চলের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী বেশ কিছু পরিবহনশ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। ফলে রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বেশির ভাগ পরিবহনের দূরপাল্লার বাস চলছে না।
১ ঘণ্টা আগেদিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার পর নৌকা ভিড়ছে চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাকড়শনে। এটি শামুকের আড়ত। সকাল থেকে এখানে শুরু হয় জমজমাট ক্রয়-বিক্রয়।
১ ঘণ্টা আগেকুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের যুগীরাহাট গ্রামের গ্রাহক শাহ আলম। প্রতি মাসে তাঁর বিদ্যুৎ বিল আসত ৬ শ থেকে ৮ শ টাকা। গত আগস্ট মাসে তাঁর ডিজিটাল মিটার পরিবর্তন করে প্রি-পেইড বসানো হয়েছে। এরপর চলতি মাসে পুরোনো বিল হিসাবে তাঁর বিল এসেছে ৯২ হাজার টাকা।
২ ঘণ্টা আগে