Ajker Patrika

স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে রাস্তা চায় শিক্ষার্থীরা 

দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ১৪: ০৮
স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে রাস্তা চায় শিক্ষার্থীরা 

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের বল্লভদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্বে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান রানিমুহুরী-বড়িইয়াকুড়ি সড়কের পাশে একটি জরাজীর্ণ ভবনে চলত।

পরে ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ার ছয় বছর পর ২০১৭ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচির (পিইডিপি-৩) আওতায় এই বিদ্যালয়ের জন্য পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। তবে বিলের মাঝখানে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মিত হওয়ায় বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে নেই কোনো সড়ক। নিচু জমি ও পুকুরের পাড় ডিঙিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথ দিয়ে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। প্রায় ছয় বছর ধরে চলছে এই ভোগান্তি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির চারদিকে নিচু ফসলি জমি থাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এতে বন্ধ থাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে নেই বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। আবার জনশূন্য হওয়ায় স্কুলে প্রায় সময় হয় চুরি। কিছুদিন আগেও বিশুদ্ধ পানির সাবমারসিবল পাম্প ও পাইপসহ স্কুলের মূল্যবান আসবাবপত্র চুরি হয়ে গেছে।
 
এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষে বিদ্যুৎ না থাকায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে তারা। বিদ্যুতের সংযোগের জন্য বৈদ্যুতিক খুঁটির ব্যবস্থা করা হলেও জমির মালিকদের বাধার কারণে সংযোগ দিতে পারছে না বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া প্রচণ্ড দাবদাহে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পোহাচ্ছে দুর্ভোগ। এতে করে অনেক শিক্ষার্থীর স্কুলে আসাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তার জানায়, জমিতে কোমরপানি হলে স্কুলে তেমন কেউ যায় না। কিছু শিক্ষার্থী মাথায় বই তুলে স্কুলে গেলেও মেয়ে শিক্ষার্থীরা যেতে চায় না। তখন স্যারেরা বাধ্য হয়ে স্কুল বন্ধ করে দেন। এ ছাড়া গরমে আমাদের লেখাপড়া করতে কষ্ট হয়। আমরা বিদ্যালয়ে আসার জন্য একটি রাস্তা চাই।’ 

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ছালমা আক্তার বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা রাস্তা ও বিদ্যুৎ। বিলের মাঝেখানে স্কুল হওয়ায় বর্ষাকালে ভিজে স্কুলে আসতে হয়। স্কুলে প্রায় পাঁচজন শিক্ষক ও ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। রাস্তা ও বিদ্যুতের সংযোগ পেলে স্কুলটি অনেক ভালো করবে।’ 

উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফজিয়া খানম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক লিখিতভাবে আমাদের অবহিত করেছেন। সড়ক ও বিদ্যুতের বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা পরিচালনা কমিটি অনেকবার স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করেছে, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। উপজেলার গত মাসিক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। 

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, ‘এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত বলতে হবে। যদি সড়ক ও বিদ্যুতের সংযোগ না থাকে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর জানান, গত পাঁচ বছরেও রাস্তা ও বিদ্যুতের সংযোগ না পাওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অচিরেই স্কুলটি পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা ও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত