Ajker Patrika

মিতু হত্যা মামলার আসামি ভোলা ভারতে পালানোর সময় গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ১২
মিতু হত্যা মামলার আসামি ভোলা ভারতে পালানোর সময় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাকে (৪১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা বেনাপোল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দিনের আদালতে আসামি ভোলার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

ভোলা বাকলিয়া থানাধীন রাজাখালী এলাকায় মৃত সিরাজুল হকের ছেলে।

২০১৬ সালে ৫ জুন ভোরে নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু।  এ মামলায় কদিন আগে ভোলার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।

ভোলার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে অন্য কোনো মন্তব্য এখনই করতে রাজি হননি মামলাটির তদারকি সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

আদালতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছেন, মহানগর হাকিম শফিউদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় আসামি ভোলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলার চার সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জামিনের মেয়াদ শেষে আসামিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আসামি ভোলা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এ সময় আদালত মামলার মূল নথি তলব করে পরবর্তী ধার্য তারিখে শুনানির জন্য রেখে দেন। পরে আদালত আসামি ভোলার অনুপস্থিতিতে তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। 

জানা যায়, ২০১৬ সালে ২৮ জুন  মিতু খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় চট্টগ্রাম তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশে অতিরিক্ত উপকমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসা বাবুল আক্তারের ‘সোর্স হিসেবে পরিচিত এহতেশামুল হক ভোলা। সে সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় পয়েন্ট ৩২ বোরের পিস্তলটি। যা  মিতু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিল পুলিশ। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পাশাপাশি ভোলার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও একটি মামলা করা হয়েছিল। এরপর প্রায় সাড়ে তিন বছর কারাভোগের পর ২০১৯ সালে ডিসেম্বরে জামিনে মুক্তি পান ভোলা। 

পরে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আবেদনে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার তিন পলাতক আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এ তিন আসামি হলেন- কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা ও খাইরুল ইসলাম কালু।

২০১৬ সালের ৫জুন মিতু খুনের ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় নিহতের স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।  তবে শুরু থেকেই নিহত মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ দাবি করে আসছেন নিজের জামাই বাবুল আক্তার এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পরকীয়ার জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন। ২০২০ সালে জানুয়ারিতে মিতু হত্যা মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে আসে।২০২১ সালে ১১ মে মঙ্গলবার মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরদিন ১২ মে বাবুলের বাদী হয়ে দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে বলা হয়- বাবুল নিজেই তাঁর স্ত্রী হত্যায় জড়িত। এদিন বাবুলসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে নতুন মামলার আবেদন করা হয়। একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় নিজের জামাতাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে রয়েছে বাবুল আক্তার। পিবিআই তদন্তে দাবি করেছে, বাবুল আক্তারের নির্দেশে তার সোর্স মুসার পরিকল্পনায় মিতু খুনের ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

বিতর্কিত মন্তব্যে পাকিস্তানে জনপ্রিয় আলেম ইঞ্জিনিয়ার আলি মির্জা গ্রেপ্তার

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

সরকারের কমিটি পছন্দ হয়নি, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ‎প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত