Ajker Patrika

ফরিদপুরে ভুল চিকিৎসায় সংকটাপন্ন গৃহবধূর জীবন, সিভিল সার্জনকে তদন্তের নির্দেশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
শিখা রায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ ইউনিটে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিখা রায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ ইউনিটে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় শিখা রায় (৩৫) নামে এক গৃহবধূর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে বলে আদালতে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বামী। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্তের জন্য জেলা সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন ফরিদপুরের এক নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ এলাহি।

আজ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন অভিযোগকারীর আইনজীবী অনিমেষ রায়। গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূর স্বামী মধুখালী উপজেলার মেগচামী গ্রামের প্রশান্ত কুমার রায় (৪৫)। বর্তমানে শিখা রায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ ইউনিটে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ৩ আগস্ট বিকেলে শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে যমুনা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করা হয়।

আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে মধুখালী উপজেলার গ্রাম্য চিকিৎসক অশোক মণ্ডল (৩৫) এবং ওই বেসরকারি হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ মোট তিনজনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে প্রশান্ত রায় উল্লেখ করেন, তাঁর স্ত্রী শিখা রায় বুকে ও পেটে ব্যথা অনুভব করলে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক অশোক মণ্ডলকে দেখানো হয়। অশোক মণ্ডল জানান শিখার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে, অস্ত্রোপচার করতে হবে। ২ আগস্ট অশোক মণ্ডল যমুনা হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং ৩ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টায় শিখার অপারেশন হয়। ৬ আগস্ট ওই ক্লিনিক ছাড়পত্র দিলে শিখাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। পরে ১০ আগস্ট শিখার পেটে তীব্র ব্যথা হলে তিনি অশোক মণ্ডলকে ফোন করেন। অশোক মণ্ডল ফোন না ধরায় শিখাকে ওই ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ক্লিনিক শিখাকে ভর্তি করতে অস্বীকার করলে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানিয়েছেন শিখার অস্ত্রোপচার সঠিক হয়নি এবং এখন তিনি হাসপাতালের সিসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অনৈতিকভাবে টাকা আদায়ের আশায় রোগীর মৃত্যু হতে পারে জেনেও ভুল চিকিৎসা প্রদান করেন। যার কারণে তাঁর স্ত্রী এখন মৃত্যুপথযাত্রী।

অভিযোগকারীর আইনজীবী অনিমেষ রায় বলেন, এক নম্বর আমলি আদালতের দায়িত্ব পালনকারী জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ এলাহি শিখার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়াবলি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফরিদপুরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৩ অক্টোবর।

অভিযোগের বিষয়ে গ্রাম্য চিকিৎসক অশোক মণ্ডল দাবি করে বলেন, শিখার পিত্তথলির অস্ত্রোপচারে কোনো সমস্যা হয়নি। পাথর বের করা হয়েছে। তবে অস্ত্রোপচারের পর বাড়িতে এসে সঠিকভাবে ওষুধ না খাওয়ায় ‘ইনফেকশন’ হয়ে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশনার বিষয়ে সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান জানান, এ-সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশনা তিনি হাতে পাননি। আদালতের নির্দেশনা পেলে আদালতের চাহিদা অনুযায়ী তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত