Ajker Patrika

হাছান মাহমুদ, জাবেদ, নওফেলসহ চট্টগ্রামে ১৬টি আসনে বিজয়ী হলেন যাঁরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০২: ১৯
হাছান মাহমুদ, জাবেদ, নওফেলসহ চট্টগ্রামে ১৬টি আসনে বিজয়ী হলেন যাঁরা

চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনে বেসরকারিভাবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এবং একটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিতেছেন।

বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মাহবুব উর রহমান রুহেল ৮৯ হাজার ৬৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৬৩৯ ভোট।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে নৌকার প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি ১ লাখ ৬৮৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ৩৬ হাজার ৫৬৬ ভোট পেয়ে হেরেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব।

চট্টগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা ৫৪ হাজার ৭৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ২৮ হাজার ৭০ ভোট।

চট্টগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের এস এম আল মামুন ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. দিদারুল কবির পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৮০ ভোট।

চট্টগ্রাম-৫ আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী ৫০ হাজার ৯৭৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী পেয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫১ ভোট।

চট্টগ্রাম-৬ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ ভোট।

চট্টগ্রাম-৭ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ড. হাছান মাহমুদ ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ ইকবাল হাছান মোমবাতি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০১ ভোট।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ ছালাম ৭৮ হাজার ২৬৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরী পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ ভোট। 
 
চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের সানজীদ রশীদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৯৮২ ভোট।

চট্টগ্রাম-১০ আসনে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু ৫৯ হাজার ২৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী ও সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলম ৩৯ হাজার ৫৩৫ ভোট পেয়েছেন। 

চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের এম আবদুল লতিফ ৫১ হাজার ৪৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৫২৫ ভোট।

চট্টগ্রাম-১২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ১ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৩৫ হাজার ২৪০ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ আবুল হোসেন মোমবাতি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫ হাজার ১৪১ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের নজরুল ইসলাম ৭১ হাজার ১২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরী পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৮৮৪ ভোট। 

চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী পেয়েছেন ৩৯ হাজার ১৫২ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৬ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান ৫৭ হাজার ৪৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ কবির লিটন পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট।

রিটার্নিং কর্মকর্তা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান রাতে সর্বশেষ বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টেকনাফে অপহরণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও মানব পাচার: র‍্যাবের অভিযানে নারী উদ্ধার, আটক ৩

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
আটক করা তিন আসামি। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা তিন আসামি। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের পর দলবদ্ধ ধর্ষণ ও মানব পাচারের শিকার এক নারীকে কক্সবাজার শহর থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব-১৫। এই ঘটনায় জড়িত চক্রের তিন সদস্যকে টেকনাফ থেকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন রেজাউল করিম (২৮), এবাদুল হক (২৯) ও আব্দুল গফুর (৩৬)।

র‍্যাব-১৫-এর সহকারী পরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ ম ফারুক মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ভুক্তভোগী নারী তাঁর প্রেমিক ইয়াছিন আরাফাতের বিয়ের প্রলোভনে পড়ে গত ২৯ অক্টোবর রাতে বাড়ি থেকে বের হন। পথে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের শিলবুনিয়া পাড়া জামে মসজিদের সামনে পৌঁছালে একদল অপহরণকারী টমটম থামিয়ে চালক ও যাত্রীকে মারধর করে এবং নারীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।

অপহরণের পর তাঁকে প্রথমে টেকনাফ পৌরসভার কুলাল পাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। পরে ৩০ অক্টোবর রাতে সেখানে তাঁকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। পরদিন অপহরণকারীরা ভুক্তভোগী নারীকে টমটমচালক আব্দুল গফুরের কাছে বিক্রি করে দেয়। গফুর ওই নারীকে সাবরাং আদর্শ গ্রামে নিজের বাড়িতে আটকে রাখে এবং ১ নভেম্বর রাতে হ্নীলা জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৬-এর ব্লক ডি/১-এর রোহিঙ্গা শবে কদরের কাছে পুনরায় বিক্রি করে দেয়।

এদিকে ভুক্তভোগীর পরিবার ৩০ অক্টোবর টেকনাফ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে এবং র‍্যাবের সহায়তা চায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর রাতে র‍্যাব-১৫-এর একটি দল কক্সবাজারের কলাতলী ডলফিন মোড়ে অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে। তবে রোহিঙ্গা শবে কদর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও ভুক্তভোগী নারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব ৩ নভেম্বর রাতে টেকনাফ পৌরসভার ঈদগাও মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিরা হলেন রেজাউল করিম, এবাদুল হক ও আব্দুল গফুর।

র‍্যাব জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর: ৭ বছরেও জোড়া লাগেনি সেতু

বিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ
সাত বছরেও জোড়া লাগেনি তাহিরপুরের শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর দুই পাড়। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা
সাত বছরেও জোড়া লাগেনি তাহিরপুরের শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর দুই পাড়। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাদুকাটা নদীর ওপর আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতু নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় তমা কনস্ট্রাকশনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা মাস ছয়েকের মধ্যে সেতু দুটির কাজ শেষ করবে।

এমন অবস্থায় বহুল কাঙ্ক্ষিত সেতু দুটির কাজ কবে শেষ হবে এবং চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে উপজেলার বাসিন্দারা।

জানা গেছে, কৃষি, মৎস্য, পর্যটন ও খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর। এ ছাড়া উপজেলাটির ডাম্পেরবাজার এলাকার তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এসব কারণে জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে।

সুনামগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। জেলার দীর্ঘতম ৭৫০ মিটারের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৮ টাকা। এর মধ্যে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

একই মাসে পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৫০ মিটার সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৯ টাকা। সেতু দুটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ৩০ মাস। সেই হিসাবে ২০২১ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না করেই ৩৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯৯ টাকা তুলে নিয়েছে তমা কনস্ট্রাকশন। মৈত্রী সেতুর ৭৮ ভাগ কাজের বিপরীতে বিল তুলে নিয়েছে ৭০ ভাগ। ডাম্পেরবাজার সেতুর ৮৫ ভাগ কাজে বিল দেওয়া হয়েছে ৮০ ভাগ।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মৈত্রী সেতুটি মাঝখানের অংশের কাজ শেষ হয়নি। এ ছাড়া ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর সংযোগ সড়কের কাজও বন্ধ রয়েছে। সেখানে চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বজলুল আমিনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, মূল সেতুর কাজ হলেও সংযোগ না হওয়ায় সেতুটি কাজে আসছে না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকা মেঘালয় খাসিয়া পাহাড়ের নিকটবর্তী টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি), শিমুলবাগান, বড়গোপ টিলা, বারেকটিলা, লাকমাছড়া, সীমান্ত হাট, জাদুকাটা, অদ্বৈত জন্মধাম, শাহ আরেফিন (রহ.) মাজারকেন্দ্রিক পর্যটন, কৃষিপণ্য বিপণন এবং বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁও—তিন শুল্ক স্টেশনের যাতায়াত সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর সীমান্ত

এলাকা হয়ে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।

তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিয়া মো. নাছির মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ডাম্পেরবাজার সেতুর সামান্য কাজ বাকি আছে। মৈত্রী সেতুর কাজ আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে শেষ করা হবে। বিগত বন্যায় মৈত্রী সেতুর একাধিক পিলার ভেঙে অনেক নির্মাণসামগ্রী তলিয়ে গেছে। আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমরা কাজ দ্রুত করার চেষ্টা করছি।’

এলজিইডির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৈত্রী সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় সম্প্রতি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ডাম্পেরবাজার সেতুর কাজও শেষ হচ্ছে না। এ জন্য আমরা অসমাপ্ত কাজের প্রাক্কলন তৈরি করে প্রকল্প অফিসে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক প্রাক্কলনটি ফেরত পাঠিয়েছেন। ফের তা সংশোধন করে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী: টার্মিনাল নেই, নাকাল মানুষ

  • ৫৩ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি।
  • যেখানে-সেখানে যাত্রী ও মালপত্র ওঠানো-নামানোয় বাড়ছে যানজট।
  • গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
বাস টার্মিনাল না থাকায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের উর্বশী সিনেমা হলের সামনে সড়কে যাত্রী ওঠানো-নামানোয় যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাস টার্মিনাল না থাকায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের উর্বশী সিনেমা হলের সামনে সড়কে যাত্রী ওঠানো-নামানোয় যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রতিদিনই শহরের রাস্তায় লেগে আছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে।

জানা গেছে, দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল উপজেলা ফুলবাড়ী। জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী হয়ে ঢাকাগামী আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলবাড়ী উপজেলা শহর দিয়ে গেছে।

উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। তবে ফুলবাড়ী হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও আজও উপজেলার পৌর শহরে নির্মাণ হয়নি কোনো বাস টার্মিনাল। ফলে শহরের যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং মালবাহী ট্রাকগুলো থেকে পণ্য আনলোড করা হয় সড়কের ওপরই। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় সড়ক পারাপারে পথচারীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ফুলবাড়ী নিমতলা মোড় ও নৈশকোচ কাউন্টারের সামনে এবং বটতলি মোড়ে সড়কের ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায় পৌর শহর দিয়ে যাওয়া দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলবাড়ী শহরের অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।

ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৩ জন। আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘যানজটের কারণে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের যেখানে-সেখানে সড়কের ওপর গাড়ি থামায়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। কষ্টটা আমাদেরই পোহাতে হয়। একটা টার্মিনাল হলে এই ভোগান্তি অনেকটা কমে যেত।’

শিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় পৌর শহরের ঢাকা মোড় (শাপলা চত্বর) থেকে উর্বশী সিনেমা হল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো জায়গা সংকটে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। ওইসব কাউন্টারে বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। ফলে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এর ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী স্টান্ড শাখার সভাপতি মহসীন আলী সরকার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব এক একর জায়গা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকার কারণে আমাদের পক্ষে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওই জায়গায় সরকার যদি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়, তবে যানজটসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও শহরের যত্রতত্র দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু জটিলতা আছে অনেক। কারণ, দূরপাল্লার কোচগুলোর দাঁড়ানোর কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তারা পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় যেতে চায় এবং কাউন্টার করে দিতে বলে। কিন্তু কাউন্টার করা ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, যদি কখনো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এটা করা সম্ভব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

একই আসনে মুখোমুখি বিএনপি ও জামায়াত দুই ভাই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আজিজুর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক
আজিজুর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।

তাঁরা জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁদের বাবার নাম মনছুর আহমেদ। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।

গত সোমবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানের নাম রয়েছে। এদিকে কয়েক মাস আগে জামায়াত থেকে ওই আসনে তাঁর ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও দুজনই জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি তাঁদের। এদিকে বিষয়টি এখন ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত